বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
যুক্তরাষ্ট্রে থেকে টাকা প্রেরণে সহায়ক অ্যাপ ‘এসইসিআই’ অথবা ‘সোনালী মোবাইল অ্যাপ’ কর্মসূচি চালু করেছে সোনালী ব্যাংক। এ উপলক্ষে ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জ্যামাইকায় খলিল বিরিয়ানি হাউজের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে কথা বলেন সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের সাথে টাকার মানের যে অস্থিরতা চলছিল, অনেকে ধারণা করেছিলেন যে, অচিরেই হয়তো প্রতি ডলারের বিপরীতে ২০০ টাকা পর্যন্ত উঠে যাবে। কিন্তু আমরা তেমনটি ঘটতে দেইনি।
সুচিন্তিত পদক্ষেপ গ্রহণের কারণে অস্থিরতা দমিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছি। আফজাল করিম উল্লেখ করেন, বাফেদা ও এবিবি যৌথভাবে বসে ডলারের সাথে টাকার মূল্যমাণ নির্দ্ধারণ করেই তা অবহিত করেছি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। তারাই সেটি পর্যালোচনার পর একটি নির্দেশনা জারি করেছেন এবং সেই অস্থিরতার অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে।
এরপরেও কোন কোন ব্যাংক বা রেমিটেন্স হাউজ যদি সেই রেটের বেশি দিয়ে থাকে তাহলে তাদেরকে জবাবদিহিতা করতে হয়। তবে যেহেতু আমরা কোন জরিমানা/শাস্তি প্রদানের ক্ষমতাসম্পন্ন কর্তৃপক্ষ নই, সেজন্যে সরাসরি কিছু করা যাচ্ছে না। আমরা শুধু বাংলাদেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করে আসছি। এরফলে ১২২ টাকা থেকে ১১৬ টাকায় কমে এসেছে ডলারের বিপরীতে টাকার মান।
ঘরে অথবা গাড়িতে কিংবা কর্মস্থলে বসে বাংলাদেশে নিজ একাউন্ট অথবা স্বজনকে বিনা ফিতে মুহূর্তের মধ্যে টাকা প্রেরণে সহায়ক অ্যাপ ‘এসইসিআই’ অথবা ‘সোনালী মোবাইল অ্যাপ’ কর্মসূচি। আফজাল করিম আরো বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে আমদানি নির্ভর। প্রতি বছর ৫৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ। তবে এরমধ্যে ৬০% এর সমপরিমাণের কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। অর্থাৎ নেট রফতানি দাঁড়ায় ২২ বিলিয়ন ডলারের মত।
সে ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের ক্ষেত্রে রেমিটেন্সের ভূমিকা অপরিসীম। এসব কারণে, রফতানি ও রেমিটেন্স প্রবাহ বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে অদম্য গতিতে ধাবিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
সোনালী মোবাইল অ্যাপে টাকা পাঠালে তা হান্ড্রেড পার্সেন্ট লিগ্যাল চ্যানেলে সম্ভব হচ্ছে এবং বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়নে আপনিও একজন গর্বিত অংশিদারে পরিণত হতে পারছেন বলে উল্লেখ করেন আফজাল করিম। তিনি বলেন, ক্রেডিট কার্ড অথবা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করতে হচ্ছে এই অ্যাপে টাকা পাঠাতে। এই অ্যাপ মোবাইল অথবা কম্প্যুটারে ডাউনলোড করতে সোনালী এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তারা সহায়তা দিয়ে থাকেন। নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, মিশিগান, ফ্লোরিডাসহ ৬টি স্টেট থেকে এই অ্যাপের সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, সোনালী এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে রেমিটেন্সে বাংলাদেশ সরকারের দেয়া আড়াই পার্সেন্ট প্রণোদনার অতিরিক্ত হিসেবে আরো সাড়ে ৩ পার্সেন্ট দিচ্ছে সোনালী ব্যাংক। তবুও নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য রেমিটেন্স হাউজে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমাণের সমপর্যায়ে উপনীত হতে না পারায় গত কয়েক মাস থেকেই সোনালী এক্সচেঞ্জ নাজুক অবস্থায় নিপতিত হয়েছে বলে অনেকে উল্লেখ করেন। ঐসব সংস্থাগুলোও লিগ্যাল চ্যানেলেই রেমিটেন্স করছে। তাদেরকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কী বাংলাদেশ ব্যাংক তথা সরকারের নেই-এমন প্রশ্নও করা হয় সমাবেশ থেকে।
সোনালী ব্যাংকের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ‘সোনালী এক্সচেঞ্জ’র সিইও দেবেশ্রী মিত্রের সভাপতিত্বে এবং সংস্থাটির কর্পোরেট ম্যানেজার শাহাদৎ হোসেনের সঞ্চালনায় নিউইয়র্কস্থ কন্সাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদাও এ সময় বক্তব্য রাখেন। নাজমুল হুদা বলেন, এনআইডি কার্ড যাতে প্রবাসীরা করতে পারেন সে ধরনের একটি উদ্যোগ সক্রিয় রয়েছে। শীঘ্রই নিউইয়র্ক কন্স্যুলেট থেকে যাতে এনআইডি ইস্যু করা যায়, সে চেষ্টায় রয়েছি।
এ সময় কন্সাল জেনারেল আরো জানালেন যে, কন্স্যুলেট অফিস আরো বৃহৎ পরিসরে স্থানান্তরিত হচ্ছে। ফলে সেবা গ্রহিতাদের অনেক সমস্যাও কমে যাবে বলে আশা করছি। নতুন স্থানের পাশেই সোনালী এক্সচেঞ্জের কর্পোরেট অফিসও চালু হবে। কন্স্যুলার সার্ভিস নিতে আসা প্রবাসীরা রেমিটেন্সের সুবিধাও নিতে পারবেন সেখান থেকে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালে চালুর পর থেকেই ম্যানহাটানে সোনালী এক্সচেঞ্জের কর্পোরেট অফিস রয়েছে। সেটি চলে আসছে কুইন্সে এস্টোরিয়ায়। অর্থ সাশ্রয়ের জন্যে এ পদক্ষেপের বিকল্প ছিল না বলে জানান কর্মকর্তারা। কারণ, এখন রেমিটেন্সে কোন ফি নিচ্ছে না সোনালী এক্সচেঞ্জ। অর্থাৎ আয় বলতে কিছুই নেই। সোনালী ব্যাংকের ভর্তুকিতে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রবাসীদের জন্যে বাংলাদেশে সোনালী ব্যাংকের আরো কিছু বিশেষ সুবিধার আলোকে বক্তব্য দেন ওয়েজআর্নার কর্পোরেট শাখার ডিজিএম মো. জহুরুল ইসলাম।
Posted ১২:৪৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh