বাংলাদেশ অনলাইন : | বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে শেষ মুহূর্তে ট্রাম্পকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছেন কমলা হ্যারিস। গত মঙ্গলবার রয়টার্স-ইপসোস প্রকাশিত জরিপে দেখা গেছে, ৪৪ শতাংশ কমলা হ্যারিস এবং ৪৩ শতাংশ ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। বাকি ১৩ শতাংশ লিবার্টেরিয়ান পার্টি, গ্রিন পার্টিসহ অন্যদের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
গত ২১ থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ১৫০ জন ভোটারের ওপর এই জরিপ চালায় রয়টার্স-ইপসোস। এতে দেখা যায়, অর্থনীতি, বেকারত্ব ও কর্মসংস্থান ইস্যুতে ভোটারদের পছন্দ ট্রাম্প। অভিবাসন-সমস্যা মোকাবিলায়ও তার ওপর আস্থাশীল ভোটারদের একটি বড় অংশ। অন্যদিকে, চরমপন্থী রাজনীতির প্রসার রুখতে কমলার ওপর ভরসা রয়েছে ভোটারদের।
প্রায় সব কটি জরিপেই কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলেছে। যদিও এই ধরনের জরিপ কোনো ভবিষ্যদ্বাণী প্রদান করা বা কারও জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের সঠিক মাপকাঠি নয়। তারপরও এই মুহূর্তে বড় প্রশ্ন হিসেবে সামনে আসছে, এবার কি যুক্তরাষ্ট্র ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নারী প্রেসিডেন্ট পাবে? নাকি দ্বিতীয় মেয়াদে জয় পেয়ে ফের ক্ষমতায় বসবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প?
ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয় মার্কিন নির্বাচন। যেখানে প্রতিটি রাজ্যে তার জনসংখ্যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল কলেজের মধ্যে যে প্রার্থী ন্যূনতম ২৭০ টিতে জিতবেন তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। যুক্তরাষ্ট্রে ৫০টি রাজ্য রয়েছে। কিন্তু প্রায় সব সময় একই দলকে ভোট দেয় কিছু কিছু রাজ্যের ভোটাররা। আবার এমন কিছু রাজ্য আছে যেখানে দুই দলের প্রার্থীদেরই জয় পাওয়ার সুযোগ আছে। এগুলো এমন জায়গা যেখানে কেউ এগিয়ে থাকলে নির্বাচনে জয়ী হবে। পিছিয়ে পড়লে হেরে যাবে। এই রাজ্যগুলো সুইং স্টেট বা দোদুল্যমান রাজ্য হিসেবে পরিচিত।
দোদুল্যমান রাজ্যের পাশাপাশি গুরুত্ব পাচ্ছেন অভিবাসী ভোটাররা। বিবিসি জানিয়েছে, নিউ ইয়র্ক সিটির আপার ইস্ট সাইডের অভিজাত হোটেল ‘দ্য পিয়ের’-এ সম্প্রতি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শামিল হয়েছিলেন শত শত প্রভাবশালী ভারতীয়-আমেরিকান ব্যক্তিত্ব। দীপাবলির আবহে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের তালিকায় ছিলেন বলিউড অভিনেতা থেকে শুরু করে তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার সিইওরা।
চোখ ধাঁধানো পোশাক এবং ভারী গয়না পরে এই ককটেল পার্টিতে হাজির হয়ে একে অন্যের সঙ্গে গল্পে মশগুল হয়েছিলেন আমন্ত্রিতরা। তবে এই আয়োজন দিওয়ালি উদ্যাপনের জন্য হলেও যে আলোচনা এই অনুষ্ঠানকে মাত করে রেখেছিল, তা হলো ভারতীয়-আমেরিকান সম্প্রদায়ের সর্বশেষ রাজনৈতিক মাইলফলক। কারণ কমলা হ্যারিস দক্ষিণ এশীয় ঐতিহ্যের প্রথম ব্যক্তিত্ব যিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী। দলের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি অনুমোদন পেয়ে মনোনীত হয়েছেন তিনি। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে নিউ ইয়র্কের জাঁকজমকপূর্ণ পার্টির উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো।
‘অল দ্যাট গ্লিটার্স দিওয়ালি বল’ নামের এই অনুষ্ঠানে শামিল ছিলেন ‘ব্র্যাভো’র (যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক) রিয়্যালিটি শো ‘দ্য রিয়েল হাউসওয়াইভস অব নিউ ইয়র্ক সিটি’র প্রথম ভারতীয় ‘কাস্ট’ জেসেল টাঙ্ক। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘এইবারের বিষয়টা (প্রেসিডেন্ট নির্বাচন) একেবারে অনন্য। কারণ আমরা এমন একজনকে পেয়েছি যিনি আমদের মঙ্গল চান।’ তার ইঙ্গিত ছিল কমলা হ্যারিসের দিকে। একই সুর শোনা গেছে অলাভজনক সংস্থা ‘গার্লস হু কোড’-এর সিইও এবং ২০১০ সালে মার্কিন কংগ্রেসের প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী প্রার্থী রেশমা সৌজানির কণ্ঠেও। তাঁর ভাষায়, ‘আপনি যেটা চোখে দেখতে পাচ্ছেন না, সেটা হতে পারবেন না।’ তিনি মনে করেন কমলা হ্যারিসের মধ্যে বহু দক্ষিণ এশীয় নারীই নিজেদের প্রতিফলন দেখতে পান।
আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এই ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর চ্যালেঞ্জ হলো অভিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই উৎসাহকে সঞ্চারিত করা। এই ক্রমবর্ধমান অভিবাসী জনগোষ্ঠী ক্যালিফোর্নিয়া ও নিউইয়র্ক ছাড়িয়ে ইতিমধ্যে জর্জিয়া, মিশিগান ও পেনসিলভানিয়ার মতো দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে।
Posted ১১:০৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh