বাংলাদেশ রিপোর্ট | বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
বই হাতে অতিথি, লেখক ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
বাংলাদেশ রিপোর্ট: চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনমনে নতুন বাংলাদেশ গড়ার একটি স্বপ্ন ও সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। মৌলিক রাজনৈতিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন কিংবা সরকার পরিবর্তন হলে বাংলাদেশ পুনরায় ফিরে যাবে গণঅভ্যুত্থান পুর্ববর্তী অবস্থায়। ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে হাজারো মানুষের আত্মত্যাগ। অধরাই থেকে যাবে গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদাপূর্ণ বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন। রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তনই ছিলো চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মূল আকাংখা। বার বার সরকার পরিবর্তন হলেও চুয়ান্ন বছরে বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিকতা পায়নি গণতন্ত্র। বাংলাদেশ পরিণত হয়নি একটি আদর্শ কল্যাণ রাষ্ট্রে। বক্তারা বলেন, ডা. ওয়াজেদের গ্রন্থটি ইতিহাসের দলিল হিসেবে পাঠকদের প্রেরণা যোগাবে। নিউইয়র্কের বিশিষ্টজন এমন গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন ডাঃ ওয়াজেদ খান’র বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে।
সাপ্তাহিক বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক ডাঃ ওয়াজেদ খান’র লেখা ‘বাংলাদেশের স্বপ্ন ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান’ বইটির প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয় নিউইয়র্ক সিটির আগ্রা প্যালেস পার্টি হলে। গত ৬ জুলাই দুপুরে অনুষ্ঠিত ব্যতিক্রমধর্মী ও বর্ণাঢ্য এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন কমিউনিটির বিভিন্ন শ্রেনী পেশার প্রবাসী বাংলাদেশীগণ। প্রকাশনা উৎসবে নির্ধারিত আলোচক ছাড়াও বইটির বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করেন কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহ এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মূল আকাংখা স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে ডাঃ ওয়াজেদ খানের বইটিতে। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান বইটি রচনার প্রেক্ষাপট ও মূল বিষয়বস্তু নিয়ে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয় অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তাগণ বলেন-নির্বাচন হলেই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় না। সমাধান হয় না সব সমস্যার। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও ২০২৪-এর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের চেতনা সমুন্নত রাখতে হলে রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রেই জরুরী মৌলিক সংস্কার। বর্তমানে ন্যূনতম সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে তা দেশ ও জাতির জন্য কোন কল্যাণ বয়ে আনবে না। বক্তাগণ বলেন, প্রচলিত পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচনের আগেই প্রয়োজন রাষ্ট্র সংস্কার। তা না হলে বাংলাদেশ পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে না। তারা বলেন, রাজনৈতিক সংকটের কারণে দেশে বৈষম্য, অনৈতিকতা, দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি বেড়েছে। এ সময়ের দাবী সংস্কারের মাধ্যেমে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। বক্তাগণ বলেন, ডা. ওয়াজেদ খান’র গ্রন্থটি ইতিহাসের দলিল হিসেবে পাঠকদের প্রেরণা যুগাবে ভবিষ্যতের বাংলাদেশে।
সাপ্তাহিক বাংলাদেশ-এর উপদেষ্টা সম্পাদক আনোয়ার হোসেইন মঞ্জুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন আবিদ রহমান। গ্রন্থটির উপর আলোচনায় অংশ নেন প্রবীণ সাংবাদিক মনজুর আহমদ, লেখক-সাংবাদিক হাসান ফেরদৌস, লেখক-কলামিস্ট মাহমুদ রেজা চৌধুরী ও লেখক-কবি কাজী জহিরুল ইসলাম।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে ফ্লোরিডা’র বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সাপ্তাহিক বাংলাদেশ-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট দিনাজ খান সহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি ও ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এম শাহীন, বাংলা পত্রিকার সম্পাদক, টাইম টেলিভিশনের সিইও আবু তাহের, বাংলাদেশ সোসাইটি’র সাবেক সভাপতি ডা. ওয়াদুদ ভূইয়া ও নার্গিস আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম, ড. শওকত আলী, সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম, এডভোকেট মজিবুর রহমান, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা এবিএম ওসমান গণি ও ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট সৈয়দ আল আমীন রাসেল, রেজাউল করিম চৌধুরী, বদরুজ্জামান পিকলু প্রমুখ। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন সাংবাদিক আদিত্য শাহীন।
উল্লেখ্য,চলতি বছরের একুশের বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে ‘বাংলাদেশের স্বপ্ন ও চব্বিশের গণ অভ্যুত্থান’ বইটি। বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ এ আহমদ পাবলিশিং হাউজ ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্টলে বিক্রি হয় বইটি। চ্যানেল-২৪ টিভি বইমেলা থেকে সরাসরি সম্প্রচার করে বইটির অনুষ্ঠান পর্ব। জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ২৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রকাশনা উৎসবে অংশ নেন দেশের খ্যাতিমান লেখক ও সাংবাদিকবৃন্দ। যা প্রচারিত ও প্রকাশিত হয় দেশের জাতীয় দৈনিক ও টিভি চ্যানেলগুলোতে।
সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সহ দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সমসাময়িক রাজনৈতিক ও বাংলাদেশের ঘটনা প্রবাহের প্রবন্ধ নিয়ে ডা. ওয়াজেদ এ খানের লেখা গ্রন্থ ‘বাংলাদেশের স্বপ্ন ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান’। ১৭৬ পৃষ্ঠার গ্রন্থটিতে ৩৩টি নিবন্ধ/প্রবন্ধ সংকলিত হয়েছে। গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে ঢাকার আহমদ পাবলিশিং হাউজ। গ্রন্থটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন ডা.ওয়াজেদ খানের একমাত্র পুত্র শিল্পী জিহান ওয়াজেদ। অনুষ্ঠানে বক্তাগণ বলেন, শুধুমাত্র একটি নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেই জাতির আকাঙ্খার পূরণ হবে না। একটি গণতান্ত্রিক এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই চব্বিশের জুলাই-আগস্টে গণ অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বক্তাগণ।
গ্রন্থটির উপর আলোচনাকালে সাংবাদিক মনজুর আহমদ বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বপ্ন ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান’-এর সকল নিবন্ধ/প্রবন্ধ পৃথক পৃথকভাবে আলোচনার দাবী রাখে। তার তার লেখায় দ্বিমত প্রকাশের অবকাশ থাকতেই পারে। আর কোন লেখা কবে প্রকাশিত হয়েছে তার তারিখ দেয়া থাকলে ভলো হতো। তিনি বলেন, লেখালেখি ছাড়া ভালো সাংবাদিক হওয়া যায় না। আমাদের সময় যে সাংবাদিকতা দেখেছি আজ সেই সাংবাদিকতা নেই।
হাসান ফেরদৌস বলেন, ডা. ওয়াজেদ খানের গ্রন্থটির কোন কোন প্রবন্ধে কারো কারো দ্বিমত থাকার পরও এটি চব্বিশ-এর জুলাই বিপ্লবের একটি দলিল। যা পাঠককে জুলাই বিপ্লবের ধারণা দেবে। তবে তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের ঘটনায় সেনাবাহিনীকে যেভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আমার দ্বি-মত রয়েছে।
মাহমুদ রেজা চৌধুরী বলেন, ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ, জীবন বাংলাদেশ আমার মরণ বাংলাদেশ’ এই গানই আমাদের শেষ ঠিকানা হওয়া উচিৎ। এই গানের চেতনাই ফুটে উঠেছে ডা. ওয়াজেদ খানের গ্রন্থে। তিনি বলেন, ঢাকার পিলখানায় বিডিআর হত্যার ঘটনার মতো একটি ঘটনাই একটি সরকার পতনের জন্য যথেষ্ট। তিনি বলেন, বিগত সরকারের এতো অন্যায়, অবিচার, অনিয়ম আমাদের সামনে রয়েছে যা দিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যেই তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার করা যেতে পারে।
অন্যতম আলোচক, বিশিষ্ট কবি কাজী জহিরুল ইসলাম বলেন, এই বইটি বাংলাদেশের ভবিষ্যত রাজনীতিতে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। কাজী জহিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সময়ে ডা. ওয়াজেদ খানের গ্রন্থটি একটি সফল গ্রন্থ। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর বাংলাদেশ কেমন হওয়া উচিত তাই তুলে ধরা হয়েছে গ্রন্থটিতে। তিনি বলেন, ডাঃ ওয়াজেদ খান নিজ রাজনৈতিক বৃত্তের বাইরে এসে নির্মোহভাবে বইটি লিখেছেন। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি ছড়া, কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ লেখায় সিদ্ধহস্ত বলে মন্তব্য করেন বাংলা ভাষার অন্যতম এই কবি। তিনি ডাঃ ওয়াজেদ খানের কয়েকটি ছড়ার অংশ বিশেষ আবৃত্তি করেন। তিনি গ্রন্থটির ইংরেজি প্রকাশনার অনুরোধ জানান।
মোঃ দিনাজ খান বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে দেশে ছিলাম। ৭দিন ঢাকার বনানীর বাসায় আটক ছিলাম। শুধু গুলির শব্দ শুনেছি। তিনি বলেন, আমি একটি রাজনৈতিক দল করলেও আমি মনে করি একাত্তুর আর চব্বিশের চেতনা ধরে রাখতে হলে দেশের সংবিধান পরিবর্তন দরকার, দেশের সর্বক্ষেত্রেই প্রয়োজন সংস্কার।
অনুষ্ঠানে দেওয়া শুভেচ্ছা বক্তব্যে ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এম শাহীন বলেন, আমাদের নোংরা রাজনীতির কারনেই দেশ-জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে রাজনীতি। যেকারণে ভালো মানুষ রাজনীতিতে আসছে না। ফলে পূরণ হচ্ছে না দেশ-জাতির প্রত্যাশা। দেশের অনিয়ম-অবিচার আর ক্ষোভের বহি:প্রকাশ চব্বিশের গণ অভ্যুত্থান। এজন্য দেশের নোংরা আর সুবিধাবাদী রাজনীতি-ই দায়ী। আমরা মুখে যে কথা বলে তা বাস্তবায়ন করিনা। ফলে দেশ-জাতি তার সুফল পায় না। তিনি বলেন, দেশকে ভালোবাসতে হলে আগে সুবিধাবাদীর রাজনীতি পরিহার করতে হবে। তিনি ডা. ওয়াজেদ খানের লেখার ভূয়সী প্রশংসা করেন। এম এম শাহীন প্রবাসীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, প্রবাসীরা একত্রিত হতে পারলেই সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।
টাইম টিভি ও বাংলা পত্রিকা সম্পাদক আবু তাহের বলেন, দেশের রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা নিজেদের স্বার্থে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরেই নানান সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন। দেশের কথা, দেশের জনগণের কথা ভাবেননি বলেই দেশে এতো দূর্নীতি, অরাজকতা, বৈষম্য। তিনি বলেন, দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ হয়েই দেশকে ভালোবাসা উচিৎ, রাজনীতিকদের রাজনীতি করা উচিত।
ডা. ওয়াদুদ ভূইয়া বলেন, ওয়াজেদ এ খান একজন ডাক্তার। কিন্তু তিনি ডাক্তারী পেশা ছেড়ে সাংবাদিকতায় এসেছেন, লেখালেখি করছেন। ডাক্তারগণ শুধু রোগীর সেবাই করেন না, লেখালেখি আর সাংবাদিকতার মাধ্যমে সমাজেরও সেবা করতে পারেন তার প্রমান ডা. ওয়াজেদ খান ও তার নতুন বই।
নার্গিস আহমেদ সুবিধাবাদী রাজনীতিক আর তো-কর্মীদের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, দেশের মতো এই প্রবাসেও আমরা সুবিধাবাদীদের দেখছি। তারা কখনোই দেশ-জাতির কল্যান চান না, চান দলকে ব্যবহার করে নিজেদের সুযোগ-সুবিধা আর বিত্তের পাহাড় গড়তে। এই মনমানসিকতার পরিবর্তন না হলে দেশের রাজনীতি ভালো হবে না, জাতির আশা-আকাঙ্খারও বাস্তবায়ন ঘটবে না।
ফখরুল আলম বলেন, আমরা যে পেশাতেই থাকি না কেন, মনের ভিতরে, হৃদয়ের মাঝে দেশপ্রেম না থাকলে কোন কিছুতেই আমরা সফল হতে পারবো না।
লেখক ডাঃ ওয়াজেদ খান বলেন, রাষ্ট্রীয় বৈষম্যহীনতা, গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায় বিচার ও মানবিক মর্যাদার দাবিতে একাত্তুরে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধেও কাংখিত ফল মেলেনি ৫৪ বছরের স্বাধীন বাংলাদেশে। যার ফলশ্রুতিতে ঘটে চব্বিশের রক্তাক্ত গণঅভুত্থান। নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাই গণঅভুত্থানের মূল স্বপ্ন। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন মৌলিক রাজনৈতিক সংস্কারের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিখাতে আমূল সংস্কার। শুধু নির্বাচন হলেই রাষ্ট্রে গণতন্ত্র আসে না। ডা. ওয়াজেদ এ খান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে যদি গণতন্ত্র না থাকে, নেতা নির্বাচনে কর্মীদের মনোভাবের বিকাশ না ঘটে তাহলে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হবে না। স্বাধীনতা পরবর্তী ১২টি সংসদ নির্বাচনে তা প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেন, চব্বিশের ৫ আগষ্ট সেনাবাহিনীর ভূমিকা ছিলো প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, তার বইয়ের মূল বক্তব্য রাজনৈতিক সংস্কারকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত।
সভাপতির বক্তব্যে আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি ডাঃ ওয়াজেদ খানের বইয়ের প্রকাশনা ও বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, চিকিৎসা পেশায় না থেকে লেখালেখিতে মনোনিবেশ করা একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা।
মধ্যাহ্ন ভোজের পাশাপাশি দেশের গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে প্রকাশনা উৎসবের সমাপ্তি ঘটে। এসময় সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রবাসের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী দম্পতি লিমন চৌধুরী ও ফারহানা তুলি।
অনুষ্ঠানে কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন-ফার্মাসিস্ট এম কবীর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম মঞ্জু, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম ও মেরী জোবায়দা, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট মনজুর আহমেদ চৌধুরী, সেবুল উদ্দিন, এনআরবি’র চেয়ারপার্সন শেকিল চৌধুরী, জেএমসি প্রেসিডেন্ট ডাঃ মোঃ মাহমুদুর রহমান, জেএমসি’র সেক্রেটারী আফতাব মান্নান, জেমএমসি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার এনামূল হক, ইঞ্জিনিয়ার জোহেব হাসান, ডা. সজল আশফাক, ডাঃ মুনিবুর রহমান খান, ডাঃ মাছুদ সিকদার, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, এমআর চৌধুরী, ডাঃ হাসান, ডাঃ শরীফ, সাংবাদিক শেখ সিরাজুল ইসলাম, মমতাজুল আহাদ সেলিম, শহীদুল ইসলাম, অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন, বাবুল হাওলাদার, সৈয়দ রাব্বী, জুলকার হায়দার, সাংবাদিক ওয়ালিউল আলম, শওকত ওসমান রচি, সৈয়দ ইলিয়াস খসরু, সানাউল হক, মাহাথির ফারুকী, রশিদ আহমদ, বেলাল আহমেদ, এসএম সোলায়মান, মোহাম্মদ আজাদ ও সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার মান্নান, ডাঃ আসফিয়া, ইঞ্জিনিয়ার এম বিল্লাহ, ছড়াকার শাহ আলম দুলাল, স্ট্যান্ডার্ড এক্সপ্রেসের সিইও এম মালেক, ডা: মাহবুবুর রহমান, ড. দীন আল রশীদ, মোহাম্মদ সাবুল উদ্দিন, বিশিষ্ট রাজনীতিক এএসএম রহমত উল্লাহ, বিশিষ্ট মর্টগেজ ব্যবসায়ী জান ফাহিম, এস্টোরিয়া ডিজিটাল ট্রাভেল-এর কর্ণধার নজরুল ইসলাম, বিসমিল্লাহ পোল্ট্রি ফার্ম-এর কর্ণধার এম এ সালাম, আব্দুস সবুর, ফরহাদ তালুকদার, আশেক খন্দকার শামীম, কবীর বোখারী, আব্দুল হাকিম, আব্দুল কাদের প্রমুখ।
ডাঃ ওয়াজেদ খান
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিয়ে সময়ের আলোচিত গ্রন্থ “বাংলাদেশের স্বপ্ন ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান’র লেখক ডাঃ ওয়াজেদ খান। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বাংলাদেশ পত্রিকাটি তিনি সম্পাদনা করছেন দু’যুগেরও অধিক সময় ধরে। ওয়াজেদ খান চিকিৎসা পেশা থেকে নিজের মেধা ও মননের বিস্তৃতি ঘটিয়েছেন লেখনি, পত্রিকা সম্পাদনা ও সাংবাদিকতার অঙ্গণে। নতুন পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন সাংবাদিকতাকে। সেসময় থেকেই লিখছেন দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক আজাদ, বাংলার বাণী, দৈনিক বাংলা সহ বিভিন্ন পত্রিকায়। মূলত: ছড়া, কবিতা ও ছোট গল্প ছিলো তার লেখনির প্রতিপাদ্য। ঢাকা কলেজ ও ময়মনসিংহ চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে বিভিন্ন সাহিত্য কর্ম ও বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেন তিনি। পরবর্তীতে প্রবন্ধ লেখা শুরু করেন বাংলাদেশের জাতীয় পত্রিকা দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক নয়াদিগন্ত, দৈনিক আমার দেশ, মানবজমিন, বাংলাদেশ প্রতিদিন, প্রথম আলো সহ অন্যান্য দৈনিকে। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষন ছাড়াও নানাবিধ প্রসঙ্গ স্থান পায় তার প্রবন্ধগুলোতে। এছাড়া সাপ্তাহিক বাংলাদেশ পত্রিকায় অসংখ্য প্রবন্ধ ও সম্পাদকীয় লিখেছেন ডাঃ ওয়াজেদ খান। ’বাংলাদেশের স্বপ্ন ও চব্বিশের গণ অভ্যুত্থান’ বইটির অধিকাংশ প্রবন্ধই সেখান থেকে সংকলিত। তিনি মনে করেন বাংলাদেশের চলমান সংকট শতভাগ রাজনৈতিক। তার এ বইটির মূল বিষয়বস্তু রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে। এ প্রসঙ্গ নিয়ে সম্প্রতি তিনি দেশের জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর টকশো’তে ব্যক্ত করেন।
ডাঃ ওয়াজেদ খানের জন্ম টাঙ্গাইল জিলার মির্জাপুরে। ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি চিকিৎসা সেবায় আইসিডিডিআরবি এবং বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন। লিবিয়ার বেনগাজীতে ১৯৮৬ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন চিকিৎসক হিসেবে। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পাবলিক হেলথে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি। পেশাগত জীবনে তিনি বিভিন্ন সময় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নেন। ১৯৯৪ সাল থেকে সপরিবারে বসবাস করছেন নিউইয়র্ক সিটিতে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক কন্যা ও পুত্র সন্তানের জনক।
Posted ১১:২৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh