বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২০
করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী সংখ্যা এবং মৃতের সংখ্যার দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। গত ৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাস সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ৯২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং আক্রান্তের সংখ্যা দেড় কোটি অতিক্রম করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এবং সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এর পক্ষ থেকে আমেরিকানদের প্রতি বার বার আহবান জানানো হচ্ছে যে তারা যাতে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো এড়িয়ে চলেন এবং করোনা ভাইরাস সংকমণের আশ্কংা থেকে রক্ষা পেতে যেসব সতর্কতামূলক পন্থার কথা বলা হচ্ছে তা মেনে চলেন। ক্যালিফোর্নিয়া সবচেয়ে জনবহুল সিটি লস এঞ্জেলেস সহ বিভিন্ন সিটিতে নতুন করে লোকজনের উপর বাড়িতে অবস্থানের বিধান কার্যকর করা হয়েছে ভাইরাসের দ্বিতীয় পর্যায়ের বিস্তৃতি মোকাবিলা করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে।
সিএনএন প্রধান মেডিক্যোল করেসপণ্ডেন্ট সঞ্জয় গুপ্তের মতে করোনা ভাইরাসের বিস্তৃতির কারণে সবকিছু যে বন্ধ করে দিতে হবে তা নয়, কারণ প্রধানত পাঁচটি স্থান থেকে করোনা ভাইরাস বিস্তৃতি লাভ করে, সেই স্থাগুলো এড়িয়ে চলাই করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হার নিচু রাখার প্রধান উপায় হতে পারে। গত ৩ ডিসেম্বর সিএনএন এর নিউ ডে’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, পাঁচটি প্রাথমিক স্থান থেকে ৮০ শতাংশ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঘটছে আমাদের সমাজে। তিনি বলেন, আমরা যদি সেই পাঁচটি স্থান এড়িয়ে চলতে পারি তাহলে আমাদের কারো জন্য দিনভর বাড়িতে কাটানোর প্রয়োজন নেই, আমরা ওই স্থানগুলো বর্জন করে অন্যত্র সময় কাটাতে পারি। সকলে যদি মাস্ক ব্যবহার করেন তাহলে তারা দিব্যি নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে যেতে পারেন। সম্পূর্ণ লকডাইনের আদৌ প্রয়োজন নেই। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করেছে যে, শুধু মাস্ক সংক্রমণ থেকে বাঁচার গ্যারান্টি নয়, মাস্ক পরিধানের পাশাপাশি নির্দেশিত অন্যান্য সতর্ক মেনে চলাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সিএনএন এর রিপোর্টে যে পাঁচটি স্থান এড়িয়ে চলার কথা বলা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে; রেস্টুরেন্ট, বার, কফিশপ, হোটেল ও প্রার্থনার স্থান। তাপমাত্রা কমতে শুরু করায় যুক্তরাষ্ট্রের অনেক এলাকায় রেস্টুরেন্টে খেতে অভ্যস্তরা এখন রেস্টুরেন্টের ভেতর খাওয়াদাওয়া করছেন, যা ইতোমধ্যে ঝুঁিকর যে মাত্রা বিদ্যমান তার চেয়েও পরিস্থিতিকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে। গত ১১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত সিডিসির এক সমীক্ষায় দেখা যায় যে, রেষ্টুরেন্টে ভোজনকারী বয়স্ক লোকদের মধ্যে কোভিড ১৯ পজিটিভ হার অন্যান্যের চেয়ে দ্বিগুণ। অতএব রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়ার প্রবণতা পরিহার করা উত্তম। বারগুলোতে যদি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পানবিলাসীরা পান করেন তাহলে ঝুঁকি কম। কিন্তু তা কি আদৌ সম্ভব? প্রশ্ন তুলেছেন হেলথলাইনের ডারল্যান্ড ফিশ। তিনি বলেন, ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রেখে কারো পক্ষে কিভাবে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব? মুখে মাস্ক পরে কি করে পান করা সম্ভব? বিশেষ করে সেখানে যদি বাদ্যযন্ত্র বা সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়, তাহলে সকলে উচ্ছাসের সাথে সাড়া দেবে এবং এর ফলে ইতোমধ্যে সংক্রমিত ব্যক্তির মুখ থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। কফিশপেও একই ঘটনা ঘটতে পারে। বেশিক্ষণ ধরে কফিশপে অবস্থান করলে ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কাও বেশি থাকে। সিডিসি কফিশপে নিয়মিত গমণকারী ব্যক্তিদের ৮.৫ শতাংশ। হোটেলে কোভিড ১৯ বিস্তারের আশঙ্কাও একইভাবে অধিক। সিডিসি হোটেলগুলোকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করে মহামারীর এই সময়ে ভ্রমণ সীমিত রাখার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছে। প্রার্থনার স্থান এবং মিলনায়তন, যেখানে লোকজনের ভিড় বেশি এবং নিয়মিত সমাবেশ ঘটে, সেইসব স্থান ভাইরাস ছড়ানোর আদর্শ স্থান। অতএব এসব স্থান এড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
Posted ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh