ওয়াশিংটন ডিসি : | বৃহস্পতিবার, ০৯ মার্চ ২০২৩
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ পালিত হয়েছে। সকালে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের দূতাবাস প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দূতাবাসের দিনের কর্মসূচি শুরু হয়।
এ সময় মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা উপস্থিত ছিলেন। পরে রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্নারে অবস্থিত জাতির পিতার আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা জানান। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনান মিনিস্টার (পলিটিক্যাল-১) ও দূতালয়প্রধান দেওয়ান আলী আশরাফ এবং কাউন্সিলর (পলিটিক্যাল-৩) শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি। পরে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের ওপর একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শিত হয়।
দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় রাষ্ট্রদূত ইমরান বঙ্গবন্ধুর মহাকাব্যিক ভাষণের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি ৭ই মার্চকে বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু সেই গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ প্রদানের মাধ্যমে কার্যত স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ঐতিহাসিক এই ভাষণের গুরুত্ব অনুধাবন করে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (ইউনেস্কো) বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐতিহ্যের তালিকা ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল’ রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করেছে। রাষ্ট্রদূত ইমরান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার এবং নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার অনুরোধ জানান। বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত এবং দেশের অব্যাহত শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে এক বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শেষ হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ফার্স্ট সেক্রেটারি মো. আতাউর রহমান।
বাংলাদেশ কনস্যুলেট ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামসহ কনস্যুলেটের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৯৭১ ও ১৯৭৫ এর সকল শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। এরপর দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্যের উপর উন্মুক্ত আলোচনা করা হয়।
কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে ৭ই মার্চের ভাষণের উপর বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা করেন। তিনি দিবসটির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের উপর আলোচনা করতে গিয়ে ইউনেস্কো কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণকে বিশ্ব-ঐতিহ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন যে ৭ই মার্চের ভাষণ এখন শুধু বাংলাদেশেই নয় বিশ্ব সম্পদে পরিণত হয়েছে। তিনি বর্তমান বিশ্বপরিস্থিতিতে বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশিলতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শণের প্রাসঙ্গিকতা ও প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেন। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ সারাবিশ্বের মুক্তিকামী ও শান্তিকামী মানুষের অবিরাম অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি সকলকে নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর গৌরবময় জীবন ও কর্ম এবং বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরার আহ্বান জানান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের সকল শহিদ সদস্য, ১৯৭১ সালের সকল শহিদ ও জাতীয় চার নেতার আত্মার মাগফিরাত এবং দেশের অব্যাহত শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এই যুগান্তকারী ভাষণের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা সভা করে সোমবার, ৭ মার্চ ২০২২ তারিখে কনস্যুলেটে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ উদযাপন করেছে।
Posted ১:৩০ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৯ মার্চ ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh