বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২
করোনা মহামারী চলাকালে মিনেসোটায় শিশুদের খাদ্য সহায়তার নামে প্রতারণামূলকভাবে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় ৪৮ ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করেছে যুক্তরাষ্টের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট। অভিযুক্তরা প্রতারণা করে ২৪০ মিলিয়ন ডলার আত্মসাত করেছে বলে জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। ‘ফেডারেল অ্যান্টি হাঙ্গার প্রোগ্রাম’ থেকে শিশুদের খাদ্য সরবরাহের জন্য বহু মিলিয়ন ডলার ছাড় করিয়ে নিলেও তারা কখনও মিনেসোটার কোনো স্থানে শিশুদের জন্য খাদ্য যোগান দিয়েছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তারা যেসব সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করে বা যেসব সংস্থার মাধ্যমে শিশুদের খাদ্য সরবরাহ করার নামে অর্থ গ্রহণ করেছে, সেসব সংস্থার কোনো অস্তিত্ব নেই বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট গত মঙ্গলবার এ তথ্য প্রকাশ করেছে। মিনেসোটার স্টেট প্রসিকিউটররা বলেছেন, করোনা ভাইরাস মহামারী সংশ্লিষ্ট ত্রাণ কর্মসূচির অধীনে বিতরণ করা অর্থ আত্মসাতের এটাই সবচেয়ে বড় ঘটনা, যেক্ষেত্রে ৪৮ জন আত্মসাতকারীকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তারা বলেন, সব অভিযুক্ত ১২৫ মিলিয়ন বেলার খাবার দেওয়ার দাবী করেছেন, তাদের মধ্যে একজন সরকারকে বলেছেন যে তিনি দোতলার একটি অ্যাপার্টমেন্টে দৈনিক ৫,০০০ শিশুকে খাবার দিয়েছেন, যা অবাস্তব এবং কল্পনাকেও হার মানায়। মামলায় জড়িত অন্য অভিযুক্তরা তারা কী অপকর্ম করছেন তা আড়াল করা কম চেষ্টা করেছেন। ষরংঃড়ভৎধহফড়সহধসবং.পড়স নামে একটি ওয়েবসাইট ব্যবহার করে শিশুদের ভূঁয়া নামের তালিকা দিয়ে তারা ফেডারেল সরকারকে বলেছেন যে তালিকাভূক্ত শিশুদের তারা অন্ন সংস্থান করছেন। কোনো কোনো প্রতারক ভিন্ন উপায় অবলম্বন করে রাষ্ট্রের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। কারও তালিকার কোনো শিশুর অস্তিত্ব ছিল না। তথ্য-প্রমাণ যাচাই না করে অর্থ বিতরণের ফলে এ ধরনের বড় আর্থিক অনিমম ঘটেছে বলে তারা দাবী করেন।
চলতি বছরের মার্চ মাসে নিউইয়র্ক টাইমস এ ধরনের প্রতারণার উল্লেখ করে এক রিপোর্টে বলেছিল যে প্রতারকরা এখনও প্রতি সপ্তাহে বহু মিলিয়ন ডলার তুলে নিচ্ছে, কারণ করোনাকালীন খাদ্য সহায়তা কর্মসূচিতে সরকারের নজরদারি এত শিথিল ছিল যে প্রতারকদের অর্থ আত্মসাত কোনো সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে ধরা পড়েনি এবং অর্থ আত্মসাতে এক প্রতারক আরেক প্রতারককে সাহায্য করেছে, এমন ঘটনাও অনেক।
যেসব খাদ্য সরবরাহ কেন্দের নামে প্রতারণামূলকভাবে অর্থ গ্রহণ করা হচ্ছে সেগুলোর মাধ্যমে প্রতারণা বন্ধ করার মিনেসোটা স্টেট সরকার নন-প্রফিট গ্রুপ ‘ফিডিং আওয়ার ফিউচার’ এর প্রতিষ্ঠাতা অ্যাইমি বককে দায়িত্ব দিয়েছিল প্রতারকদের শণাক্ত করে স্টেট সরকারকে সহযোগিতা করতে। কিন্তু মিসেস বক উল্টোটাই করেন। যখন মহামারী ত্রাণের অর্থ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অর্থের বন্যা বইয়ে দিচ্ছিল, তিনি তার অবস্থানকে ব্যবহার করে ভূঁয়া কাগজপত্র জমা দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে, এমন প্রায় ২০০ ভূঁয়া খাদ্য সরবরাহ প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে নিজেই আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করতে শুরু করেন। মিনেসোটার ডেমোক্রেট গভর্নর টিম ওয়ালজের সরকার যখন মিসেস বকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠায় তখন মিসেস বক সরকারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে স্টেটের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করেন যে তিনি যাদের সঙ্গে কাজ করছেন তাদের অধিকাংশ পূর্ব আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ বলে কর্মকর্তারা তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ করছেন। ফলে তার প্রতিষ্ঠান ‘ফিডিং আওয়ার ফিউচার’ এর ছত্রছায়ায় অর্থ আত্মসাতকারীরা আরও দাপটের সঙ্গে তাদের প্রতারণা চালিয়ে যায়। এফবিআই এর স্পেশাল এজেন্ট মাইকেল পল এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, অভিযুক্তরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আহার যোগানোর কাজে আগ্রহী ছিল না, বরং তারা তাদের নিজস্ব মাত্রাতিরিক্ত লোভের পরিতৃপ্তি সাধনে ব্যস্ত ছিল।
প্রাথমিকভাবে ৪৭ জন প্রতারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার অপর একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, যিনি সেদিনই ওয়ান ওয়ে টিকেটে ইথিওপিয়া চলে যান।
Posted ৩:১৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh