নিউইয়র্ক : | শুক্রবার, ০৭ আগস্ট ২০২০
নিউইয়র্ক, কানেকটিকাট সহ পার্শ¦বর্তী রাজ্যগুলোতে গত ৪ আগষ্ট মঙ্গলবার প্রচন্ড ঝড় বয়ে যায়। মৌসুমী এ ঝড়ে নিউইয়র্কের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এতে নিহত হয়েছেন ৬জন। আহত হয়েছেন অনেকে। বিশেষ করে বিভিন্ন স্থানে গাছ এবং বাড়ি ভেঙ্গে পড়ার কারণে মৃত্যু ঘটেছে। ঝড়ের কারণে নিউইয়র্ক সিটি এবং এর আশেপাশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। বুধবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ২৫ লাখ মানুষ বিদ্যুতহীন অবস্থায় ছিলো। ঝড়ের তান্ডবে বিপুল সংখ্যক গাড়ি উপড়ে পড়া গাছের নীচে পড়ে যায়। ফলে অনেক রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল। রাস্তায় আটকে পড়ে মানুষ। এসময়ে নিউইয়র্ক সিটি জরুরী বিভাগে ৯১১এ ১১হাজার মানুষ ফোন করেন ফায়ার সার্ভিসের সাহায্যের জন্য।
ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি এতো ব্যাপক ছিলো যে, ২০১২ সালের হ্যারিকেন স্যান্ডির পর এতো বড় বিপর্যয় আর দেখা দেয়নি। রাস্তা এবং বাড়ির উপর ভেঙ্গে বা হেলে পড়া ১৬ হাজার গাছ সরানোর অনুরোধ সিটি অফিসে যায় বলে জানিয়েছে সিটির ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট কমিশনার। বিভিন্ন স্থানে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় বিদ্যুতের তার। আউটডোর সার্ভিসের জন্য তৈরি রেস্টুরেন্টসমূহের ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নর এন্ড্রু ক্যুমো এবং সিটি মেয়ার বিল ডি ব্লাসিও গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং টেলিফোন লাইনসমূহ দ্রুত কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। নিউজার্সি এবং কানেকটিকাটেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মৌসুমী এ ঝড়ে। তবে আশা করা যাচ্ছে বৃহস্পতিবারের মধ্যে সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে। নিউইয়র্ক সিটির ব্রায়ারউড এলাকায় গাড়ির প্যাসেঞ্জার সিটে বসা অবস্থায় এক মহিলা মারা যান। ব্রুকলিনে অপর একটি গাড়ির উপর গাছ ভেঙ্গে পড়লে ৪৯ বছর বয়সী একজন মহিলা গুরুতর আহত হন। ঝড়ের কারণে অনেক রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে ঝড়ে নর্থ ক্যারোলাইনাতে দুই জন, দেলাওয়ারে ও মেরিল্যান্ডে আরও তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য মাড়িয়ে শক্তি হারানোর পর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়া ইসাইয়াস পরে ক্রমেই দক্ষিণ-পশ্চিম কানাডার দিকে সরতে থাকে। ঝড়টির কারণে বুধবার ক্যুবেকের দক্ষিণাঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে কানাডার হারিকেন সেন্টার।
গত সপ্তাহে পুয়ের্তো রিকো, হাইতি ও ডমিনিকান রিপাবলিকে ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি নিয়ে ইসাইয়াস আছড়ে পড়ে অন্তত দুই জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। অসংখ্য গাছ উপড়ে ফেলার পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ ফসল ও বাড়িঘর ধ্বংস করেছিল, হয়েছিল বন্যা ও ভূমিধসের কারণ।
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ অতিক্রম করার পর শক্তি কমে এটি একটি ক্রান্তীয় ঝড়ে পরিণত হয়েছিল। পরে ফের শক্তি সঞ্চয় করে এক মাত্রার হারিকেনে পরিণত হয়ে এটি যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ও সাউথ ক্যারোলাইনার দিকে অগ্রসর হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে আছড়ে পড়ার পর ইসাইয়াস নর্থ ক্যারোলাইনা থেকে শুরু করে নিউ ইয়র্ক পর্যন্ত ৩৪ লাখেরও বেশি বাসিন্দাকে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে। ঝড়ের ফলে সৃষ্ট টর্নেডো অসংখ্য গাছ উপড়ে ফেলেছে, বাড়িঘরের ক্ষতি করেছে। অনেক এলাকায় দেখা দিয়েছে হঠাৎ বন্যা, অগ্নিকাণ্ড।
Posted ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৭ আগস্ট ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh