বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২২
নিউইয়র্ক সিটিসহ পুরো নিউইয়র্ক স্টেটে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হার বৃদ্ধির পাশাপাশি হাসপাতলে ভর্তি করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও লক্ষ্যণীয় হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্টেট গভর্নর ক্যাথি হকুল গত মঙ্গলবার বলেছেন যে স্টেটজুড়ে সংক্রমণ ও হাসপাতালে ভর্তি বৃদ্ধির সঙ্গে মৃত্যু হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, গত বছরের মার্চ মাসের পর প্রথমবারের মতো করোনা সংক্রমণে গত রোববার নিউইয়র্কে একদিনে মৃত্যু ঘটেছে ১০৩ জনের। আমরা খুব ভালো অবস্থায় নেই। আমরা সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারণা করেছিলাম, বিশেষ করে ক্রিসমাস ও নববর্ষের ছুটিকালীন পারিবারিক সমাবেশে লোকজনের সমাবেশের কারণে এ আশংকা অমূলক ছিল না। তিনি সকলকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে বলেছেন যে ভাইরাসের বিস্তারের আশংকা এখনো হ্রাস পায়নি। তিনি সাধারণভাবে কোভিড টেস্টের ব্যাপক সুবিধা সৃষ্টির পাশাপাশি বিশেষ করে স্কুলগুলোতে গৃহীত টেস্টিং এর কথা উল্লেখ করে অভিভাবকদের আশ্বস্ত করেন যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ওমিক্রন ও ডেল্টা ভেরিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারে নিউইয়র্ক সিটিতে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। একমাস আগে সিটিতে ওমিক্রন প্রথম সনাক্ত হয় এবং তখন থেকে দৈনিক সর্বনিম্ন ২,৫০০ ওমিক্রন সংক্রমণের ঘটনা সনাক্ত হয়েছে, যা নববর্ষের প্রাক্কালে দৈনিক প্রায় ৫০ হাজারে উন্নীত হয়। কিন্তু গত দশ দিনে হাসপাতালে ভর্তি করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। ক্রিসমাসের আগে ও নববর্ষের প্রাক্কালে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা এর আগে ছিল ৬০ শতাংশ। গত রোববার নিউইয়র্ক সিটির হাসপাতালে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত ৪,৫০০ এর বেশী রোগী ভর্তি হয়েছে, যার মধ্যে ৫০০ জনকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। নিউইয়র্ক স্টেটে প্রায় ৯,০০০ রোগী গত রোববার হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং সেদিন মৃত্যু ঘটেছে ১০৩ জন রোগীর।
সিটির হাসপাতালগুলোর ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখনো গত বছরের শীত মওসুমের চেয়ে অনেক কম। গত বছর এ সময়ে ভ্যাকসিন আসেনি এবং তখন প্রায় ৭৫০ জন রোগী আনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ছিল। গত বছরের তুলনায় এখনো হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা অনেক কম। ২০২০ সালের বসন্তকালে নিউই্য়র্ক সিটিতে করোনা যখন মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং প্রতিদিন মৃত্যুহার আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছিল তখন সবচেয়ে খারাপ দিনে সর্বোচ্চ ১২,০০০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি ছিল এবং তাদের মধ্যে ৩,০০০ ছিল ইনটেনটিভ কেয়ারে। স্টেটের কোভিড বিষয়ক তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী বর্তমানে যারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে তাদের মধ্যে ভ্যাকসিন না নেয়া মানুষের সংখ্যাই অধিক। গত ২০ ডিসেম্বর সমাপ্ত এক সপ্তাহে নিউইয়র্ক স্টেটে কোভিড সংক্রমিত রোগীর মধ্যে ভ্যাকসিন না নেয়া রোগীর হার ছিল প্রতি এক লাখে ৩০ জন এবং পূর্ণ ভ্যাকসিন নেয়া রোগী ছিল প্রতি এক লাখে মাত্র ২ জন। তবে গভর্নর ক্যাথি হকুল বলেছেন যে, কিছু কিছু হাসপাতালের নির্বাহীরা তাকে জানিয়েছে যে তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া কোভিড রোগীদের ২০ থেকে ৫০ শতাংশ গুরুতর কোভিড লক্ষণ নিয়ে ভর্তি হয়নি, বরং দুর্ঘটনা বা অন্য রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে হাসপাতালগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তারা যাতে মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি ২০২২) থেকে কোভিড ১৯ এর লক্ষণ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের সংখ্যা পৃথকভাবে সংরক্ষণ করেন। এর ফলে ভাইরাস বিস্তার প্রতিরোধে নতুন মাত্রা যোগ করা যেতে পারে।
Posted ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh