বাংলাদেশ ডেস্ক : | বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট ২০২০
নিউইয়র্ক নগরীতে গোলাগুলির ঘটনা বেড়েই চলছে। নগরীতে বন্দুক সহিংসতা চরমে পৌঁছেছে। ১৪ আগস্ট মধ্যরাত থেকে ১৭ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত নগরীতে ৩৯টি পৃথক ঘটনায় ৫১ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৬ আগস্ট রাতে এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘নিউইয়র্কের মেয়র পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হলে, আমরা তা করব।’ গুলিবিদ্ধ ৫১ জনের মধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এঁদের মধ্যে একজন হলেন কারেকশন অফিসার জন জেফ জুনিয়র (২৮)। ১৫ আগস্ট ভোরে জেফ জুনিয়র গুলিবিদ্ধ হলে তাঁকে জ্যামাইকা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। গত মার্চে করোনা মহামারি শুরু হলে নিউইয়র্ক লকডাউনে চলে যায়। লাখো মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। করোনা মহামারিতে নিউইয়র্কেই সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
গত ২৫ মে মেনিয়াপোলিসে পুলিশের নির্যাতনে জর্জ ফ্লয়েড হত্যার পর আমেরিকাজুড়ে নাগরিক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এ আন্দোলনে পুলিশের সহিংসতা ও বর্ণবৈষম্য অবসানের দাবি ওঠে। এ সময় নিউইয়র্কে ব্যাপক লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয় বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। নাগরিক আন্দোলন এখনো চলছে। সপ্তাহান্তে অনেক সময়ই এসব বিক্ষোভ সমাবেশ সহিংস হয়ে ওঠে। এ সপ্তাহান্তেও ব্রুকলিনে মিছিল থেকে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। নাগরিক আন্দোলনের নেতারা এসব লুটপাটকারীকে কোনো প্রশ্রয় না দেওয়ার কথাই বলছেন। চলমান নাগরিক আন্দোলনে নিউইয়র্কে বিক্ষোভকারীরা এখনো তাঁদের দাবি নিয়ে রাজপথে আছেন। ছবিটি ম্যানহাটন থেকে তোলা। ছবি: হৃদয় অনির্বাণ খন্দকারনিউইয়র্কে পুলিশ সংস্কার আইন দ্রুত পাস করা হয়েছে। পুলিশের তহবিলে কর্তন করা হয়েছে। এনওয়াইপিডি সদস্যদের ওভারটাইম কমিয়ে আনা হয়েছে। নগরীর ব্যাপক লোকজন এখনো কর্মহীন। ধাপে ধাপে নিউইয়র্ক খুলে দেওয়া হলেও অর্থনৈতিক চাঞ্চল্য ফিরে আসেনি। ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে না। এর মধ্যে গ্রীষ্মের উন্মাদনায় লোকজন বেরিয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই এখানে-ওখানে জমজমাট পার্টি হচ্ছে। এসব পার্টিতে সামান্য ঘটনা নিয়ে মারামারি হচ্ছে। এমনকি গোলাগুলির ঘটনাও প্রতিদিন ঘটছে।
করোনার মহামারির সময় বেশ কিছু অপরাধীকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। নগরীর আদালতগুলো এখনো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে পারেনি। এসব নানা কারণে নিরাপদ নগরী নিউইয়র্ককে এখন আর কেউ নিরাপদ মনে করছেন না। সন্ধ্যা হলেই লোকজন গোলাগুলির শব্দ শুনছে। পথচারীরা হামলার শিকার হচ্ছে। অনেকেই কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থেকেও ছুটে আসা গুলিতে আহত হচ্ছে বা মারা যাচ্ছে।
নিউইয়র্ক নগরীর এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থতার জন্য নগরীর মেয়র বিল ডি ব্লাজিওকে দায়ী করা হচ্ছে। ডেমোক্র্যাট মেয়রের সঙ্গে এমনিতেই রাজ্য গভর্নরের সম্পর্ক ভালো নয়। নগরীর পুলিশ বিভাগের মধ্যেও চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন আসছে নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি তাদের সমর্থনের কথা জানিয়েছে। কোনো নগরী বা রাজ্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিত সামাল দিতে না পারলে ফেডারেল সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেনা পাঠিয়ে এমন হস্তক্ষেপ করতে পারেন। এমন পরিস্থিতিকে রাজ্য বা নগর সরকারের চরম ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হয়ে থাকে।
Posted ৭:০৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh