বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে খোলা চিঠি

মোহাম্মদ আজাদ :   |   বৃহস্পতিবার, ২৭ মে ২০২১

প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে খোলা চিঠি

মিষ্টার প্রেসিডেন্ট, করোনাকালীন এই মহাসংকটে আপনার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। আপনি একজন আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ। যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দেয়ার কোনো ধরনের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার কমতি আপনার নেই। আপনার মত এত বেশি অভিজ্ঞতা নিয়ে অতীতে কেউ যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পারেনি। আপনি দীর্ঘ ৩৬ বছর সিনেটে ছিলেন। এর মধ্যে ২০ বছর সিনেট ফরেন রিলেশনস কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর আপনি বলেছিলেন, “আমি তো রাজনীতিকে বেছে নিয়েছি জনসেবা করতে। এখানে মুনাফা অর্জন করা যায় না। মুনাফা অর্জন করতে হলে ব্যবসায়ী হতে হবে। আমি ব্যবসায়ী নই। জনসেবাই আমার উদ্দেশ্য।”

গত নির্বাচনে আপনি রেকর্ড সংখ্যক ইলেকটোরাল ভোট পাননি, একথা সত্য। কিন্তু রেকর্ড সংখ্যক পপুলার ভোট পেয়েছেন।


২০২০ সালের নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চরম নোংরামির আশ্রয় নিয়েছিলেন। তিনি গনরায় মেনে নিতে চাননি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আইন ও সংবিধানের কাছে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পরাস্ত হয়েছেন এবং তিনি নিক্ষিপ্ত হয়েছেন ইতিহাসের আস্তাকুড়ে। শুধু কি তাই! গাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সর্বত্র ছড়িয়ে গেছেন বর্ণবাদ, ঘৃণা ও ধর্মীয় বিদ্বেষ। তিনি ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকাকে করে গেছেন ডিভাইডেড স্টেটস অপ আমেরিকায়। আমরা জানি, বর্ণবাদের জন্য কোনো ভ্যাকসিন তৈরি হয়নি। কিন্তু এর জন্য আইন করা আছে। সেই আইনের যথাযথ প্রয়োগ হচ্ছে না। মাত্র ছয় মাস আগে নিউইয়র্কের লাগর্ডিয়া এয়ারপোর্ট থেকে ডেল্টা এয়ারলাইনসের এক পাইলট একজন মুসলিম যাত্রীকে বিমান থেকে নামিয়ে দিয়েছেন। সেই যাত্রীর অপরাধ ছিল তিনি মুসলিম। ডেল্টা এয়ারলাইনসের পাইলট বর্ণবাদী আচরণ করা সত্বেও তার বিরুদ্ধে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বা তাকে শাস্তি দেয়া হয়নি। একবিংশ শতাব্দীতে এ ধরনের বর্ণবাদী আচরণ মেনে নেয়া যায় কি? বর্ণবাদ দমন করার জন্য নতুন করে কোনো আইন প্রণয়ন করতে হবে না। বর্ণবাদের মত ঘৃণ্য আচরণের জন্য প্রচলিত আইনই যথেষ্ট। আমরা সেই আইনের যথখাযথ প্রয়োগ চাই।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হ্রাসে আপনার গৃহীত প্রতিটি পদক্ষেপ প্রশংসার দাবী রাখে। ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিবসে আপনার জনপ্রিয়তা ছিল ৬৩ শতাংশ, যা অতীতের যেকোনো প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি। আপনার জব অ্যাপ্যুভাল এখন ৮০’র দশকের জনপ্রিয় পরলোকগত প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের সমান। আপনার শুরুটা চমৎকার। কিন্তু আপনাকে সামনে যেতে হবে। দুর্গম পথে অনেক দূর পাড়ি দিতে হবে। আপনার পথ চলা কুসুমাস্তীর্ণ হবে না। পদে পদে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। কোন্ ধরনের ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে তার মাশুল আপনাকে দিতে হবে।


মিষ্টার প্রেসিডেন্ট, ফিলিস্তি সম্পর্কে কিছু কথা আপনা না জানালেই নয়। সত্য তো চিরকালই সত্য। যদি প্রশ্ন করা হয় যে ১৯৪৮ সালের ১৪ মে তারিখের আগে বিশ্বের মানচিত্রে ‘ইসরাইল’ নামে দেশটির অস্তিত্ব ছিল কি? ১৯৪৮ সালের ১৪ মে তারিখে ফিলিস্তিনিদের নিজ বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ করে ‘ইসরাইল’ নামে ইহুদি রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, যখন হোয়াইট হাউজে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন ডেমোক্রেট দলীয় পরলোকগত প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান। প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যান ইসরাইল নামক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার প্রথম দিনেই ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, যেটি ছিল চরম গর্হিত এক অন্যায়। এর পরের ইতিহাস সকলের জানা। সেখানে শুধুই রক্ত ঝরছে। বিশ্ব জনমতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুসালেমে স্থানান্তর করায় বৈধতা দিয়েছেন। সমগ্র বিশ্ব ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে হতবাক হয়েছে।

আপনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর আপনার নিয়োগকৃত সেক্রেটারি অফ ষ্টেট এন্টোনি ব্লিনকেন জেররুসালেমই হবে ইসরাইলের রাজধানী। আমরা এন্টোনি ব্লিনকেনের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করছি। কট্টর ইহুদিবাদী ইসরাইল প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সপ্তাহ আগে আবার নতুন করে গাজায় গণহত্যা শুরু করেছিল। আপনি তখন বলেছিলেন, “ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।” আপনার এই বক্তব্য ফিলিস্তিন-ইসরাইলের মধ্যেকার চলমান সংঘাতের কোনো সমাধান বয়ে আনবে না। আপনার বক্তব্য জ্বলন্ত উনুনে পেট্টোল ঢালার শামিল। পরক্ষণে আপনি উভয় পক্ষকে যুদ্ধবিরতির জন্য আহবান জানিয়েছেন একাধিকবার। ইসরাইলি গোলা বর্ষণে সেখানে ২১৮ জন নিহত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সেখানে এখন যুদ্ধ বিরতি চলছে। কিন্তু এটি স্থায়ী কোনো সমাধান নয়। আমরা ফিলিস্তিন-ইসরাইল সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই। সপ্তাহ আগে ইসরাইল গাজায় যে গণহত্যা শুরু করেছিল সেখানে নারী ও শিশুসহ মোট ২১৮ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ভাইরাল হওয়া ছোট্ট অবুঝ একটি শিশুর রক্তাক্ত অবয়ব কি আপনার চোখে পড়েছিল? যথেষ্ট হয়েছে, আর নয়, একথা বলার সময় কি এখনো আসেনি? একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রকেই ফিলিস্তিন-ইসরাইল সমস্যার সমাধানে সঠিক ভূমিকা রাখতে পারে। একটি মুক্ত স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আপনাদের স্বীকৃতি দিতে হবে। চাপ প্রয়োগ করে ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে এবং এজন্য যুক্তরাষ্ট্রকে সর্বাগ্রে এগিয়ে আসতে হবে। আপনারা যদি তা করতে ব্যর্থ হন, যদি এজন্য কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করেন, তাহলে ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করবে না। পরলোকগত প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান ১৯৪৮ সালের ১৪ মে তারিখে ইসরাইলকে প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিলেণ। তিনি ছিলেন একজন ডেমোক্রেট। আপনিও একজন ডেমোক্রেট। এখন আপনি যদি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়ে যেতে পারেন তাহলে আপনি ইতিহাস সৃষ্টি করবেন। শুধু ইতিহাস সৃষ্টি করাই নয় মিষ্টার প্রেসিডেন্ট, আমি আপনাকে শতভাগ নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে আপনি যদি ফিলিস্তিন-ইসরাইল সমস্যার স্থায়ী সমাধান করে দিতে পারেন তাহলে যে বছর তা করবেন সেই বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার আপনারই হবে। আপনাকে কাজ শুরু করতে হবে ঠিক এখন থেকেই।


মিষ্টার প্রেসিডেন্ট, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী মুসলিমদের কিছু কথা আপনাকে না বললেই নয়। যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের অস্তিত্ব ছিল ত্রয়োদশ শতাব্দী থেকে। উইকিপিডিয়া থেকে এ তথ্য জানা যায়। এরপর ১৩১২ সাল থেকে এদেশে মুসলমানরা বসবাস শুরু করে। ১৫৩০ সাল থেকে ১৮৬৫ সাল পর্যন্ত ক্রীতদাস হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের আনা হয়। ইউসুফ বিন আলী, বাম্পেট মুহাম্মদ, বেঞ্জামিন ইসমাইল Ñ এরা ছিলেন জেনারেল জর্জ ওয়াশিংটনের সহযোদ্ধা। জর্জ ওয়াশিংটনের অধীনে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণের ঘটনা তো ইতিহাস হয়ে আছে।ক্রীতদাস হিসেবে নিয়ে আসা মুসলমানরা তখন লুকিয়ে লুকিয়ে তাদের ধর্ম পালন করে। অনেক ক্রীতদাসের খ্রিস্টান প্রভুরা ক্রীতদানদের বাধ্য করে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করতে।

১৮১২ সালের যুদ্ধে বিলানি মুহাম্মদের নেতৃত্বে ৮০ জন মুসলিম সৈন্য জর্জিয়ার ‘সাপেলো’ আইল্যান্ডকে বৃটিশ আগ্রাসন থেকে মুক্ত করেছিলেন। ২৯১ জন, মতান্তরে আরো বেশি সংখ্যক মুসলিম সৈন্য ক্যাপ্টেন মুসা ওসমানের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধ দমনে যে ভূমিকা পালন করেছিলেন সেটিও ইতিহাসে রয়েছে, (সূত্র: উইকিপিডিয়া)। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে গৃহযুদ্ধে সর্বশেষ আফগান ও ইরাকি যুদ্ধে মুসলিম সৈনিকদের ভূমিকাকে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। সংখ্যায় কম হলেও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানরা দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় জনগোষ্ঠী। কিন্তু মুসলমানরা এদেশে পদে পদে বর্ণ বৈষম্যের শিকার। ২০২০ সালে আপনার নির্বাচনী প্রচারাভিযানে আপনি নবী মুহাম্মদ সা: এর একটি হাদিস বা বাণী দিয়ে আপনার নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরু করেছিলেন- যা ছিল, “তোমরা যদি কোনো অন্যায় দেখো তাহলে সেটি প্রতিহত করো। প্রতিহত করতে না পারলে প্রতিবাদ করো, যদিও সেটিও না পারো তাহলে সেই অন্যায়কে ঘৃণা করো।” আসলে নবী মুহাম্মদ সা: হচ্ছেন সমগ্র মানবতার নবী। মহান আল্লাহতা”য়ালঅ পবিত্র কোরআনে বলেছেন, “ওয়ামা আরসালননাকা ইলা রাহমাতা-লিল আ’লামিন।” (আমি তো আপনাকে বিশ্ব মানবতার জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি, (আল-কোরআন: ২১:১০)। মিশিগানে মুসলিম ভোট ছাড়া কোনো প্রার্থী জয়ী হতে পারেন না। নির্বাচনে মুসলমানদের ভোট আপনার পক্ষে পড়েছে। নিউইয়র্কে প্রায় অর্ধ মিলিয়ন মুসলিম ভোট রয়েছে এবং এই ভোটগুলো যদি আপনার বিপক্ষে পড়তো তাহলে নিউইয়র্কের মত ডেমোক্রেট ঘাঁটিতেও আপনার পরাজয় ঘটতো। কিন্তু নির্বাচনের পর আপনি মুসলমানদের যথাযথ মূল্যায়ন করেননি। আপপনার প্রশাসনে ছোটখাট কিছু পদে মুসলমানদের যে চাকুরি দিয়েছেন তা যথেষ্ট নয। একজন আমেরিকান মুসলিমকে আপনার কেবিনেটে স্থান দেয়া উচিত ছিল। ভবিষ্যতে যদি আপনার কেবিনেটে কোনো পদ শূন্য হয় তাহলে সেই শূন্য পদে একজন মুসলমানকে নিয়োগ দেয়ার দাবী জানাচ্ছি।

মিষ্টার প্রেসিডেন্ট, ফিলিস্তিনে যেভাবে মুসলমানদের উপর গণহত্যা চালানো হচ্ছে, ঠিক একইভাবে গণহত্যা চালানো হচ্ছে ভারতে মুসলমানদের উপর। ভারত একটি হিন্দু মৌলবাদী রাষ্ট্র। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে মুসলমানরা ভারতে বলির পাঠা হয়ে আছে। ভারতের বর্তমান হিন্দু মৌলবাদী প্রধানমন্ত্রী ২০০২ সালে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ২০০২ সালে গুজরাটে সুপরিকল্পিতভাবে প্রায় ৩,০০০ মুসলিমকে হত্যা করা হয়। কোনো কোনো ঘটনায় অনেক মুসলমানকে এক স্থানে জড়ো করে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। যাদেরকে হত্যা করা হয়েছিল তাদের মধ্যে ছিল সদ্যপ্রসূত নিস্পাপ শিশু, মহিলাসহ নিরীহ আবালবৃদ্ধবনিতা। নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোষ্ট, ইউএসএ টুডেসহ যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদপত্রগুলোতে সেই ভয়াবহ নরহত্যার একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। হিটলারি কায়দায় সংঘটিত সেই গণহত্যার কোনো বিচার হয়নি। নামেমাত্র তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্টে গণহত্যার জন্য গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী, ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দায়ী করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র তখন মোদিতে কালো তালিকাভূক্ত করে যুক্তরাষ্ট্রে তার ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু ভারতের জনগণ নরেন্দ্র মোদিকে তাদের প্রধানমন্ত্রী হিসবে নির্বাচিত করার পর যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক নিয়ম ও শিষ্টাচার অনুযায়ী মোদির উপর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে।

মোদির এর পরের ইতিহাস আরো নগ্ন। দ্বিতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদি ও তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধিয়ে পুনরায় মুসলমানদের উপর গণহত্যা শুরু করে ২০২০ সালের প্রথম দিকে। এ দাঙ্গার সময় ভারতের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নিরব দর্শকের ভূমিকা পাণ করেই শুধু শান্ত থাকেনি, পুলিশের একটি শ্রেণী উগ্র হিন্দু মৌলবাদীদের সঙ্গে মিলিত হয়ে মসজিদ ও মুসলমানদের বাড়িঘর ধ্বংস ও অগ্নিসংযোগ করতে সহায়তা করে। এসব ঘটনার খবর ওয়াশিংটন পোষ্টে প্রকাশিত হয়েছিল।

১৯৯২ সালে বিজেপি মুসলমানদের ৪০০ বছরের পুরনো বাবরী মসজিদ ভেঙে ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছিল, এটিকে মিথ্যা বলে দাবী করে। গত সপ্তাহে অর্থ্যাৎ গত ১৮ মে ভারতের উত্তর প্রদেশে মসজিদ গরীব নওয়াজ আল-মারুফ নামে শত বর্ষ প্রাচীন এক মসজিদকে বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। স্থানীয় এক শিখ ম্যাজিষ্ট্রেটকে ঘটনা সম্পর্কে আল-জাজিরা থেকে প্রশ্ন করা হলে উক্ত ম্যাজিষ্ট্রেট বলেন, আমার জানামতে সেখানে কোনো মসজিদ ছিল না, শুধু একটি ভাস্কর্য ছিল। এভাবে ভারতে মুসলমানদের উপর হিন্দু সাম্প্রদায়িকতাবাদীরা অত্যাচার নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফিরিস্তি এই খোলা চিঠিতে নয়, একাধিক গ্রন্থ রচনা করলেও শেষ হবে না। গত ৭০ বছর ধরে ভারত কাশ্মীরে যেভাবে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে তার খন্ডচিত্র যদি আপনি নিজ চোখে দেখেন তাহলে আপনার চোখে পানি আসবে। সেখ্যানে ভারতয় সৈন্যরা স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষন করছে, ভাই-বাবা-মায়ের সামনে যুবতী মেয়েদের ধর্ষন ও যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে। এসব দখলদার সৈন্যদের দ্বারা কাশ্মীরে গুম ও খুন অতি সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। আপনি ২০২০ সালে আপনার নির্বাচনী প্রচারাভিযানে কাশ্মীরিদের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার কথা বলেছিলেন। আমরা এখন আপনার কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি ভারতে উপর কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগের।

পরিশেষে আপনার রোগমুক্ত দীর্ঘায়ু কামনা করি।

advertisement

Posted ২:০২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৭ মে ২০২১

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.