নিউইয়র্ক : | বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন দেশের মানুষের আশা আকাঙ্খার প্রতীক। তিনি দিকহারা জাতিকে পথ নির্দেশনা দিয়েছিলেন। দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে সাথে নিয়ে দেশ গড়ার কাজে উৎসর্গ করেছিলেন নিজেকে। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার মনের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন শহীদ জিয়া। তাকে হেয় করা মানে দেশের মানুষকে অবজ্ঞা, অপমান করার শামিল।
গত ১২ সেপ্টেম্বর শনিবার রাতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপি শাখা আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় যোগ গিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপি শাখার সফল আহবায়ক হাফিজ খান সোহায়েলের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব এজেএম হোসেনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জাস্ট নিউজ সম্পাদক ও জাতিসংঘ সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী এবং কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে রাজনীতির দুটি ধারা আজ অত্যন্ত পরিস্কার। একটি হচ্ছে শহীদ জিয়া সূচিত গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, প্রগতি ও উন্নয়ন রাজনীতির ধারা। আর অপরটি বাকশালের মাধ্যমে একদলীয় শাসন প্রবর্তন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া, দুর্নীতি আর লুটপাটের রাজনীতির ধারা। আওয়ামী লীগের সীমাহিন ব্যর্থতা, অক্ষমতা, অযোগ্যতা ও দুর্নীতিপরায়ণতার কারণেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতির সৃষ্টি। এই রাজনীতিকেই মানুষ বেছে নিয়ে আজো লালন করছে এবং যতদিন বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ টিকে থাকবে ততদিন এ রাজনীতি জাগরুক থাকবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সেলিমা রহমান বলেন, শহীদ জিয়াই বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকলকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছেন।তার প্রবর্তিত বহুদলীয় গণতন্ত্রের সুযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ পুর্নগঠিত হয়ে আজ দেশ শাসন করছে। অথচ তারাই এখন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বিষদগার করছে।
তিনি বলেন, শহীদ জিয়ার রাজনীতির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বেগম খালেদা জিয়া দেশকে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন।সেই পথকে রুদ্ধ করে একনায়কতান্ত্রকি শাসন চালু করেছে শেখ হাসিনা।
এডভোকেট রহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এক কালজয়ী রাজনীতির স্রষ্টা। আর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি তার অনবদ্য সৃষ্টি। তিনি যেমন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির প্রতিষ্ঠা করে আমাদের জাতিসত্তার পরিচয় নিশ্চিত করেছিলেন তেমনি বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে পরিচিত করেছিলেন একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে।
শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, জনতার সংগ্রাম আর ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রই বিজয় লাভ করে। স্বৈরতন্ত্র ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়।আমরা শহীদ জিয়া গর্বিত রাজনীতির উত্তরাধিকার। আমাদের নেতাই মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। সে পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বিজয় নিশ্চিত হবে।
বিশ্বের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, গার্ডিয়ান, সানডে টাইমসকে উদৃত করে সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। এটি শুধু বাংলাদেশ নয় পুরো বিশ্বজুড়ে প্রতিষ্ঠিত সত্য। পক্ষান্তরে শেখ মুজিবুর রহমানের দ্বারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে কর্তৃত্ববাদী শাসন চালু ও মানুষের অধিকার হরণের খবর সেময়ের আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের পাতাজুড়ে বিস্তৃত।
তিনি বলেন, পত্রিকাগুলো শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রাম থেকে নেতা হওয়া, পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন ও অধিকার হরণের তীর্যক সমালোচনা করেছে। অপর দিকে শহীদ জিয়াকে চিত্রিত করেছে সৈনিক থেকে মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেবার নেতা এবং গণতন্ত্র ও উন্নয়নের মহানায়ক হিসেবে।
কেন্দ্রীয় সহ-আন্তজাতিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন বলেন, শহীদ জিয়ার হাতে গড়া বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল দেশের সবচাইতে বড় রাজনৈতিক শক্তি। জুলুম-অত্যাচারের মাধ্যমে ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাকে প্রলম্বিত করলেও রাজনীতির ময়দানে তারা নিশ্চিহ্ন।সাংগঠনিকভাবে বিএনপি আগের চেয়েও অনেক শক্তিশালী বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন গ্রেটার ওয়াশিংটন বিএনপির সাবেক সভাপতি শরাফত হোসেন বাবু, ওয়াশিংটন বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা জাহির খান, ক্যালিফোর্নিয়া বিএনপির সভাপতি বদরুল আলম চৌধুরী শিপলু, জর্জিয়া স্টেটের সভাপতি নাহিদুল খান সাহেল, মিশিগান বিএনপির সভাপতি দেওয়ান আকমল চৌধুরী, শিকাগো বিএনপি সভাপতি শাহ মোজাম্মেল নান্টু, ফ্লােরিডা বিএনপি সভাপতি ইমরানুল হক চাকলাদার, ম্যারিল্যান্ড বিএনপি আহবায়ক শহীদ খান চৌধুরী, প্যানসিলভিনিয়া বিএনপি সভাপতি শাহ ফরিদ প্রমুখ। এছাড়াও ওয়াশিংটন ডিসি বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সভায় বক্তব্য রাখেন।
Posted ৭:৩১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh