৪,৬০০ মাইল দূরে যে যুদ্ধ চলছে, তার ঢেউ লেগেছে নিউইয়র্ক সিটির রাশিয়ান রেস্টুরেন্টগুলোতে। নিউইয়র্ক টাইমসের গতকাল বুধবারের এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে সুগন্ধিযুক্ত ভদকা, ক্যাভিয়ার ও লাল ঝাড়বাতির জন্য খ্যাত মিডলটাউন ম্যানহাটানের একটি রাশিয়ান পিয়ানো বার ‘রাশিয়ান সামোভার’ এর ম্যানেজার ভøাদা ফন শাটস বলেছেন যে রাতের বেলায় বহু লোক এসে তাদের দরজায় লাথি মারছে, যে অভিজ্ঞতা তারা আগে কখনও অর্জন করেনি। কিছু সংখ্যক রুশ রেস্টুরেন্টে ইতোমধ্যে হামলা ও ভাংচুর করার ঘটনাও ঘটেছে। অনেক রুশ রেস্টুরেন্ট, যাদের ৬০ শতাংশের বেশি রিজার্ভেশনের মাধ্যমে গ্রাহক আসেন, সেই রেস্টুরেন্টগুলো রিজার্ভেশন বাতিল করায় ব্যস্ত, যাতে গ্রাহকদের কোনো বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে না হয়।

সিটির রাশিয়ান স্টেুরেন্টগুলোর মালিকদের অনেকে প্রকাশ্যে যুদ্ধের বিরুদ্ধে, অনেকে ইউক্রেন থেকে আগত অভিবাসী, তারা রেস্টুরেন্ট ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। কারণ এ ব্যবসায় সবকিছু প্রকাশ্য, গ্রাহক আসবেন, রেস্টুরেন্টের সেবককরা তাদেরকে অর্ডার অনুযায়ী খাবার ও পানীয় পরিবেশন করবেন। শিল্পী ও বাদ্যকররা থাকেন বিনোদন দিতে।

অনলাইনে কম্পিউটার স্ক্রীন সামনে রেখে করার মত ব্যবসা নয়। অতএব ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া এবং এ যুদ্ধের পরিণতিতে ইউক্রেনে ধ্বংসলীলা এবং রাশিয়ার ক্রমবর্ধমানভাবে একঘরে হয়ে পড়ার প্রভাব কমবেশি বিদেশের মাটিতেও যে রুশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর পড়বে তা স্বাভাবিক। ভ্লাদা ফন শাটস বলেছেন, ‘আমরা মানুষের ঘৃণা মোকাবেলা করছি। মানুষ বুঝতে পারে না যে পুতিনের সঙ্গে আমাদের কিছু করণীয় নেই।” ভ্লাদা ফন শাটস একজন রাশিয়ান, এবং তার স্বামী ইউক্রেনীয়। তারা ও তাদের তিন সন্তান রুশ ও ইউক্রেনীয় উভয় জাতীয়তার পরিচয় দেয়। রেস্টুরেন্টটির অধিকাংশ কর্মী ইউকেনীয় বংশোদ্ভুত। দুই বছর করোনা মহামারীর কারণে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় যেভাবে ধস নেমেছিল তা কাটিয়ে ওঠার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার পর রেস্টুরেন্ট মালিকরা যখন পুরোদমে কাজ শুরু করতে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই পুতিন কর্তৃক ইউক্রেনের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়ার ফলে নিউইয়র্ক সিটির রাশিয়ান রেস্টুটেগুলো বেকায়দায় পড়েছে।