বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
জ্যামাইকার সাগর, ঘরোয়া, ঢাকা সুইটস, স্টার কাবাব ও তাজমহলে চলছে প্রস্তুতি

রেস্টুরেন্টের ইনডোর ডাইনিং খুলছে ৩০ সেপ্টেম্বর

বাংলাদেশ রিপোর্ট :   |   বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

রেস্টুরেন্টের ইনডোর ডাইনিং খুলছে ৩০ সেপ্টেম্বর

নিউইয়র্ক সিটির রেস্টুরেন্টগুলো ৩০ সেপ্টেম্বর পুনরায় চালু করছে ইনডোর ডাইনিং সার্ভিস। মহামারি করোনার কারণে মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে বন্ধ হয়ে যায় ইনডোর সার্ভিস। পরে প্রথমে টেক আউট ও পরে আউটডোর সার্ভিস সীমিত আকারে শুরু হয়। এদিকে আর্থিক মন্দার কারণে ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে সিটির অনেক রেস্টুরেন্ট। ২৬ সহস্রাধিক রেস্টুরেন্টের নগরী নিউইয়র্কে লাখো কর্মী চাকুরি হারিয়েছেন। ইনডোর ডাইনিং সার্ভিস ৩০ সেপ্টেম্বর চালু হলেও রেস্টুরেন্টগুলো শুধুমাত্র ধারণ ক্ষমতার ২৫ শতাংশ গ্রাহককে এককালীন সেবা দিতে পারবে। মেনে চলতে হবে সামাজিক দূরত্বসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি।

সাগর রেস্টুরেন্ট।

বিশেষ করে ফিলট্রেশন ও কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের ব্যাপার সিটি কর্তৃপক্ষ ৩০ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়ার পূর্বেই করছে পর্যবেক্ষণ। এসব বিধিমালা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই নিয়োগ করেছে অতিরিক্ত ৪০০ ইন্সপেক্টর । সিটির আরোপিত স্বাস্থ্যবিধি ঠিকমতো প্রয়োগ হলে আগামী ১নভেম্বর নাগাদ রেস্টুরেন্টগুলো ইনডোর ডাইনিং সার্ভিস উন্নীত করা হবে ৫০% গ্রাহকে। এর আগে রেস্টুরেন্ট মালিকদের উপর্যুপরি চাপের মুখে গভর্নর এন্ড্রু ক্যুমো গত ৯ সেপ্টেম্বর ইনডোর সার্ভিস চালুর ঘোষণা দেন। ঘোষণায় বলা হয়, রেষ্টুরেন্টে গ্রাহকদের প্রবেশে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ রয়েছে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে তা প্রত্যাহার করা হবে। মহামারি থেকে মুক্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাভাবিক অবস্থায় প্রত্যাবর্তনে আরেক দফা পদক্ষেপ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। ২৫ শতাংশ গ্রাহককে রেষ্টুরেন্টের ভেতরে বসে খাওয়া-দাওয়ার অনুমতিকে করোনাভাইরাস থেকে নিউইয়র্ক সিটির মুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।


ঢাকা রেস্টুরেন্ট এন্ড সুইটস।

এ সিদ্ধান্ত পর্যটনের এই নগরীতে পর্যটকদের এবং নাগরিক সাধারণকে সবুজ সংকেত দিচ্ছে, এই শহর করোনামুক্ত হয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থার দিকে ফিরে যাচ্ছে। তবে খরিদ্দারদের জন্য খুলে দেওয়া হলেও অনেক রেষ্টুরেন্টতাদের দুরাবস্থা থেকে সহজে মুক্ত হতে পারবে বলে মনে হয় না। করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক সংকট, অন্যদের সঙ্গে মেলামেশায় অনেক আমেরিকানের অনীহা এবং বিশেষ করে আসন্ন শীত মওসুমে রেষ্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে আবহাওয়াগত সীমাবদ্ধতা অনেকের জন্যই ব্যবসা পরিচালনার প্রতিকূল হয়ে দাঁড়াবে।

ঘরোয়া রেস্টুরেন্ট।

রেষ্টুরেন্টের ভেতরে খাওয়া-দাওয়ার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে একটি পরিকল্পনা গভর্নর কুমো এবং মেয়র ব্লাজিও তখনকার পরিস্থিতি বিবেচনায় বাতিল করে দিয়েছিলেন। তখন পর্যন্ত নিউইয়র্ক স্টেটে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছিল। কিন্তু এখন এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সংক্রমণের হার এক শতাংশেরও নিচে নেমে এসেছে। এ পরিস্থিতিতে গভর্নর অন্য আরও কিছু পদক্ষেপের মতো রেস্টুরেন্ট ব্যবসার হতাশা ও লোকসান দূর করার জন্য এগুলোকে খরিদ্দারদের জন্য খুলে দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গভর্নরের এই পরিকল্পনা অনুযায়ী রেষ্টুরেন্টের ভেতরে টেবিলগুলো সরিয়ে শুধু ২৫ শতাংশ টেবিল রাখা যাবে। গত জুন থেকে রেষ্টুরেন্টগুলোকে যে বাইরের সেবার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, শীতে সে সার্ভিস অব্যাহত রাখা যাবে না। এ শিল্পকে রক্ষার স্বার্থে ভেতরের সেবা প্রয়োজনীয়তার বিষয় পরিকল্পনায় উল্লেখ করা হয়েছে। রেষ্টুরেন্ট খুলে দেওয়ার পর করোনা সংক্রমণের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা হয়েছে। সিটির স্কুলগুলো যখন আবার শুরু হচ্ছে তার পরপরই রেষ্টুরেন্টগুলো খোলা হচ্ছে। অঙ্গরাজ্যের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিটির বাইরে যেসব স্থানে রেষ্টুরেন্ট ও বার চালু হয়েছে সেসব স্থান থেকে ১০ শতাংশ সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। তারা বলেছেন, রেষ্টুরেন্ট কেবলমাত্র একজন মালিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই নয়, একটি রেষ্টুরন্টে রেস্তোরাঁ মানে তার রান্নাঘর এবং অন্যান্য সেবার কর্মচারীদের কর্মক্ষেত্র। রেষ্টুরেন্টাগুলো রোগ সংক্রমণের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ স্থান। রেষ্টুরেন্ট খুলে না দিলে তারা বড় ধরনের আর্থিক লোকসানের মুখে পড়বে।


তাজমহল রেস্টুরেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস মহামারিতে রেষ্টুরেন্টে বসে খাওয়া নিষিদ্ধের পর প্রায় অচল হয়ে পড়ে রেষ্টুরেন্ট ব্যবসা। গত ৭ মাস ধরে চলছে এ অবস্থা। ফলে দেশটির ৬ লাখ ৬০ হাজার ৭৫৫টি রেষ্টুরেন্টের ১ কোটি ৫০ লাখ ১ হাজার কর্মচারী বেকার হয়ে পড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৬ লাখ ৬০ হাজার ৭৫৫টি রেষ্টুরেন্ট রয়েছে। নিউইয়র্কের রেষ্টুরেন্ট মালিকরা তাদের ব্যবসার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে ক্ষতির কথা উল্লেখ করে সম্প্রতি গভর্নর ও মেয়রের বিরুদ্ধে ২ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণের মামলা করেছেন। মামলায় বলা হয়, এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সিটির ১৫ হাজার রেস্তোরাঁ মালিকের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুন্ন করা হয়েছে।

স্টার কাবাব।

জ্যামাইকার সাগর, ঘরোয়া, ঢাকা সুইটস, স্টার কাবাব ও তাজমহলে চলছে প্রস্তুতি


নিউইয়র্ক সিটির রেস্টুরেন্ট সমূহ ২৫ শতাংশ ইনডোর সার্ভিস শুরু করছে ৩০ সেপ্টেম্বর। গত ৯ সেপ্টেম্বর গভর্নর এন্ড্রু ক্যুমোর এমন ঘোষণায় রেস্টুরেন্ট মালিকদের মাঝে ঘটেছে প্রাণের সঞ্চার। আশাবাদী হচ্ছেন তারা। মহামারীর ভয়াল থাবার কারণে সৃষ্ট আর্থিক মন্দা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চান রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা। রেস্টুরেন্টের শহর নিউইয়র্কের অন্যতম অংশীদার বাংলাদেশী আমেরিকান রেস্টুরেন্টগুলো। কোভিড-১৯ এর কারণে বাংলাদেশী মালিকানাধীন রেস্টুরেন্টগুলো যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় তেমনি চাকুরি হারান এসব রেস্টুরেন্টে কর্মরত অনেক বাংলাদেশী। করোনাকালীন রেস্টুরেন্টের ভাড়া গুনতেই বিপাকে পড়েছেন অনেক রেস্টুরেন্ট মালিক। করোনার প্রাদুর্ভাব কমার সাথে সাথে সিটির নির্দেশনা অনুযায়ী স্বল্প পরিসরে তারা চালু করেন গ্রাহক সেবা। এপর্যায়ে ইনডোর ডাইনিং সার্ভিস না থাকায় ব্যবসায় তেমন জমেনি। তবে সীমিত আকারে হলেও এখন ইনডোর সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্তে আশাবাদী হয়ে উঠছেন রেস্টুরেন্ট মালিকরা। নূতন স্বাভাবিকতার জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। করোনা পরবর্তী সময়ে প্রায় সবগুলো রেস্টুরেন্টের অঙ্গ সজ্জায় আনা হয়েছে পরিবর্তন। খাবার সামগ্রীতে দেখা যাবে অনেক নূতনত্ব। বাংলাদেশী অধ্যুষিত জ্যামাইকা, জ্যাকসন হাইটস, এস্টোরিয়া, ওজোন পার্ক, ব্রুকলীন ও ব্রঙ্কসের বাংলাদেশী মালিকানাধীন রেস্টুরেন্টগুলোতে নূতন করে চলছে অঙ্গসজ্জা। শোভা পাচ্ছে নূতন নূতন সাইন। জ্যামাইকা হিলসাইড এভিন্যু ঘুরে বাংলাদেশী রেস্টুরেন্টগুলোতে দেখা গেছে এমন দৃশ্য।

সাগর রেস্টুরেন্টে অন্যান্য খাবার আইটেমের সাথে নূতন করে সাজানো হয়েছে মিস্টির পশরা। বসানো হয়েছে নূতন শোকেস। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য গ্রহণ করা হয়েছে সবধরণের প্রস্তুতি। এ প্রসঙ্গে সাগর চাইনিজ ও রেস্টুরেন্টের প্রধান নির্বাহী সামিউর রহমান বলেন, ইনডোর ডাইনিং সার্ভিস পুনরায় খুলে দেয়া একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষের। অন্যান্য কম্যুনিটির মানুষ আউটডোর সার্ভিসে অভ্যস্থ। কিন্তু বাংলাদেশী কম্যুনিটির মানুষ রেস্টুরেন্টের ভেতরে বসে খেতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। তিনি বলেন, সাগর রেস্টুরেন্ট এবং সাগর চাইনিজের সব ক’টি শাখাতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইনডোর সার্ভিস শুরু করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

জ্যামাইকা হিলসাইড ও ব্রুকলীন চার্চ ম্যাকডোনাল্ড ঘরোয়া রেস্টুরেন্টের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল কুদ্দুস, নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নর ও সিটি মেয়রের সময়োচিত সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, নূতন নিয়মে ধারণ ক্ষমতা ২৫শতাংশ হলেও এটা রেস্টুরেন্ট মালিক এবং গ্রাহক সবার জন্যই ইতিবাচক। সিটির নির্ধারিত স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী সবধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। যারা এতোদিন ঘরে আবদ্ধ থেকে হাঁপিয়ে উঠেছিলেন তারা এখন পরিবার নিয়ে নিরিবিলি পরিবেশে ঘরোয়ার খাবারের স্বাদ নিতে পারবেন। আর যারা অনুষ্ঠানাধির জন্য ক্যাটারিং সার্ভিস নিতে আগ্রহী তাদেরকেও যোগাযোগ করার আহ্বান জানান আব্দুল কুদ্দুস।

হিল সাইড এভিন্যুর অন্যতম ঢাকা রেস্টুরেন্ট কাবাব হাউজ। ইনডোর ডাইনিং সার্ভিসের জন্য রেস্টুরেন্টটি সম্পূর্ন প্রস্তুত বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাইয়িদ এম রহমান লাবু।

ঢাকা রেস্টুরেন্ট সিটির ম্যারিয়ট, শেরাটন, হিলটন রামাদা সহ বিভিন্ন তারকা হোটেলে ক্যাটারিং করে থাকে। করোনা পরবর্তী সময় ঢাকা রেস্টুরেন্টের ইনডোর ডাইনিং সার্ভিসে বাংলাদেশ ভোজন রসিকদের আমন্ত্রণ জানান সাইয়িদ রহমান লাবু।
জ্যামাইকার স্টার কাবাব রেস্টুরেন্ট অতি সম্প্রতি যাত্রা শুরু করেছে নূতন ব্যবস্থাপনায়। পরিবর্তন আনা হয়েছে বাবুর্চি, খাবার ও রেস্টুরেন্টের অঙ্গ সজ্জায়। ইনডোর ডাইনিং সার্ভিসের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী জামান চৌধুরী।

জ্যামাইকা সাটফিনের তাজমহল রেস্টুরেন্টে ই¦নডোর ডাইনিং সার্ভিস চালু করতে চলছে প্রস্তুতি। গ্রাহক সেবার মান বৃদ্ধি এবং খাবার আইটেমে নূতনত্ব আনা হবে বলেও জানান রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ। সামাজিক দূরত্ব সহ সবধরণের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানানো হয় আমাদের প্রতিনিধিকে। নিউইয়র্ক সিটির অন্যান্য এলাকার বাংলাদেশী রেস্টুরেন্টগুলোও একই ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে নূতন স্বাভাবিকতায় ফেরার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে।

advertisement

Posted ২:৫৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.