বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০
বিদ্যমান অর্থনৈতিক ঘাটতির মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে সংকট এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, ফেডারেল সরকার যদি আর্থিক অনুদান প্রদান না করে তাহলে নিউইয়র্ক সিটি প্রশাসনের পক্ষে আগামী মাস (অক্টোবর) থেকে পরিবহন, শিক্ষা ও জরুরী বিভাগের প্রায় প্রায় ২২ হাজার কর্মীকে চাকুরিচ্যূত করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। অন্যান্য বিভাগেও কর্মী ছাঁটাই করা হতে পারে বলে আভাস দেয়া হয়েছে। যে কোন সময় তারা ছাঁটাই সংক্রান্ত আগাম নোটিশ পেতে পারেন। ইতোমধ্যে সিটির বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ৮ বিলিয়ন ডলার দাঁড়িয়েছে।
করোনা ভাইরাসের বিস্তারের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ সিটি নিউইয়র্ক। শুধু করোনাজনিত মৃত্যুহার বা আক্রান্তের সংখ্যাধিক্যের কারণে নয়, আর্থিক বিপর্যয়ের কারণে ক্ষয়ক্ষতি সকল স্তরের নগরবাসীর উপর গুরুতর চাপ সৃষ্টি করেছে। হোটেল, রেষ্টুরেন্ট, পর্যটন ও পরিবহন খাতের মতো অসংখ্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বা সীমিত থাকায় নগরীর বেসরকারি খাতের লক্ষ লক্ষ কর্মী বেকার হয়ে পড়েছে। সিটির প্রায় আড়াই লক্ষ ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এক তৃতীয়াংশই বন্ধ হয়ে গেছে বা বন্ধ হওয়ার আশংকা সৃষ্টি হয়েছে। নন-প্রফিট সংস্থা পার্টনারশিপ ফর নিউইয়র্ক সিটি’র মতে অর্থনীতির এমন কোন খাত নেই যাকে এই বিপর্যয় স্পর্শ করেনি। মেট্টোপলিটান ট্রান্সপোর্টেশন অথরিটির (এমটিএ) অবস্থা এতো শোচনীয় হয়ে পড়েছে যে নগদ ১২ বিলিয়ন ডলার না পেলে প্রতিষ্ঠানটি মুখ থুবড়ে পড়বে। ইতোমধ্যে তারা ৪০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যাতে বিদ্যমান ঘাটতি থেকে প্রতিষ্ঠানকে ধসের হাত থেকে আপাত রক্ষা করে বাস ও সাবওয়ের চলাচলের ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধি করতে না পারলেও বর্তমান অবস্থায় রাখা সম্ভব হয় এবং যাত্রীদেরকে অধিক সময় বাস বা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা না করতে হয়।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে স্বাভাবিকভাবেই গত মাসগুলোতে সিটির রাজস্ব আদায় হ্রাস পেয়েছে। কংগ্রেসম্যানরা বিপুল বাজেট ঘাটতির সম্মুখীণ নগরীগুলোকে ফেডারেল সহায়তা প্রয়োজনের উপর চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছেন, কিন্তু ফেডারেল সহায়তা লাভের আশু কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। এমটিএ’র চেয়ারম্যান প্যাট্রিক ফয়ে ওয়াশিংটন থেকে আর্থিক সহায়তা লাভের সম্ভাবনা সম্পর্কে বলেছেন, “গত জুলাই মাসে আমি কমবেশি আশা করেছি যে হয়তো সহায়তা পাওয়া যাবে। কিন্তু আমার এই সতর্ক ধারণাও ভুল ছিল। ফেডারেল সরকার এ নিয়ে কোন চিন্তাই করছে না।” করোনাজনিত কারণে গত আগষ্ট মাসে সিটিতে বেকারত্বের হার চিল ২০ শতাংশ। শাটডাউনের ফলে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মালিকরা তাদের কর্মীদের গণহারে ছুটি দিয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর খোলার পর সেসব কর্মীকে আর ডাকা হয়নি। ব্যবসা বন্ধ থাকায় সিটির কর রাজস্ব হৃাস পেয়েছে ৭.১ বিলিয়ন ডলার। রিয়েল এস্টেটে বিক্রয় কমেছে ৩২ শতাংশ, যেগুলোর অধিকাংশই বাণিজ্যিক ভবন। কর আদায় হ্রাস পাওয়ায় মেয়র বিল ডি ব্লাজিও গত জুন মাসে গৃহীত অর্থবছরের বাজেট থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার কর্তন করেছেন। কারণ বিভিন্ন খাত থেকে বরাদ্দ হ্রাস করা হবে।
ব্লাজিওর মুখপাত্র বিল নেইডহার্ডট বলেছে সংকট কাটিয়ে উঠার জন্য অ্যালবেনিতে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা চলছে। সিটির কর্মীদের ব্যাপক বেকারত্ব দেশের সর্ববৃৎ নগরীসহ সারাদেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তির উপর প্রচণ্ড আঘাত হেনেছে। আমরা তা কাটিয়ে উঠতে সকল প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সিটি মেয়র নগরীর পরিচালন ব্যয় নির্বাহের জন্য ষ্টেট সরকারের কাছে দরখাস্ত করেছেন।” মেয়রের মতে ব্যাপক কর্মীছাঁটাই এড়ানোর এটাই সংক্ষিপ্ত পথ।
Posted ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh