বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট ২০২০
সেপ্টেম্বরের প্রথমার্ধে পুনরায় খুলে দেওয়া হচ্ছে। নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুল সমূহ। মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে গত ১৫ মার্চ বন্ধ হয়ে যায় সিটির সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এপ্রিলে মহামারি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে মেয়র ব্লাজিও ঘোষণা দেন আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের সংক্রমন নিয়ন্ত্রণে চলে আসায় সেপ্টেম্বরের শুরুতে স্কুল চালুর পরিকল্পনা নিয়েছেন মেয়র। নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নও এন্ড্র ক্যুমো গত ৭ আগষ্ট নিউইয়র্কের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলার নির্দেশ দিয়েছেন। গভর্নর ও সিটি মেয়রের এ নির্দেশের পর স্কুল সমুহের প্রিন্সিপাল, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। করোনার সংক্রমন কমলেও যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় এ স্কুল ডিস্ট্রিক্ট পাঠদানের জন্য এখনও প্রস্তুত নয় বলে মন্তব্য করেছেন তারা। নিউইয়র্ক সিটিতে প্রি-কে থেকে দ্বাদশ গ্রেড পর্যন্ত শিক্ষাদানের জন্য রয়েছে ১ হাজার ৮০০ স্কুল। আর এসব স্কুলে পড়াশুনা করছে ১১ লাখ শিক্ষার্থী। বার্ষিক ২৫ বিলিয়ন ডলারের বাজেটের নিউইয়র্ক সিটি শিক্ষা বিভাগে শিক্ষক আছেন ৭৫ হাজার। বিশাল শিক্ষা বিভাগের কার্যক্রম চালু করতে আরো কিছুটা সময় প্রয়োজন বলে মনে করছেন শিক্ষকদের শক্তিশালী সংগঠন ও প্রিন্সিপালগণ।
স্কুল পুনরায় খুলে দেয়ার পূর্বে সর্বাগ্রে নিশ্চিত করতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। বিশেষ করে কøাশে সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক ব্যবহার করা সহ অন্যান্য পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার বিষয়। সেপ্টেম্বরে স্কুল খুললে তা কোনভাবেই আগের মতো সব শিক্ষার্থীকে একসাথে ক্লাশে পড়ানো হবে না। শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ৫দিনের মধ্যে সশরীরে কয়েকদিন ক্লাস করবে বাকী দিনগুলো ক্লাশ করতে হবে অনলাইনে। কোন পরিবার চাইলে তাদের সন্তানরা পুরো ৫দিনই অনলাইনে ক্লাশ করতে পারবে। তবে অধিকাংশ পরিবার চায় স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপত্তা বিধান সাপেক্ষে তাদের সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে। অনলাইন ক্লাশের জন্য স্বল্প আয়ের পরিবারের সন্তানদের মাঝে ৩ লাখ আইপ্যাড প্রদান করছে সিটি শিক্ষা বিভাগ। সিটি কর্তৃপক্ষ ২০২০-২০২১ সালের শিক্ষাবর্ষ ঠিক রাখতে জোড় প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা দেখা দিয়েছে ক্লাশ রুম নিয়ে। ক্লাশে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হলে প্রতিটি ডেস্ক এবং চেয়ার ৬ ফুট দূরে দূরে বসাতে হবে। ফলে ক্লাশে শিক্ষার্থীর ধারণ ক্ষমতা নেমে আসবে এক তৃতীয়াংশে। এছাড়া ক্লাশে শিক্ষকরা মাস্কের সাথে শীল্ড ব্যবহার করবেন কিনা প্রশ্ন উঠেছে এসব নিয়ে । প্রি-কে সহ নীচের ক্লাশের শিক্ষার্থীদের শৃংখলায় রাখা হবে কঠিন কাজ এ নিয়ে ভাবনা আছে শিক্ষকদের।
এছাড়া দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় স্কুল ভবনের সংস্কার কাজ অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়নি। একারণে ক্লাশের সীমিত জায়গা, ভাঙ্গা জানালা, অকেজো এয়ার কন্ডিশন মেরামত করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এসব কিছু ঠিক না করে স্কুল খুলে দিলে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষকগণ। এজন্য ইতোমধ্যেই তারা সিটি মেয়র বরাবর একটি আবেদন করেছে গত ১২ আগষ্ট। রাজনীতিক ও স্থানীয় সরকারের জন প্রতিনিধিগণ স্কুল খুলে দেয়ার বিষয়টি নিয়ে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখেই সামনের দিকে এগুচ্ছে সবাই ।
অভিভাবকরা সন্তানদেরকে স্কুলে পাঠাতে চান না বাসায় রেখে অনলাইনে ক্লাশে অংশ নেয়াতে চান এটা পরিবারের উপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এজন্য পূর্বাহ্নেই স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। এক্ষেত্রে অধিকাংশ অভিভাবক ঝুকছে অন লাইন শিক্ষার দিকে। হিসপ্যানিক পরিবারের বেশী পছন্দ অন লাইন ক্লাশে। নিউইয়র্ক সিটি শিক্ষা বিভাগে হিসপ্যানিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪১ শতাংশ। তন্মধ্যে ৩৭ শতাংশকে অনলাইন ক্লাশের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এশিয়ান শিক্ষার্থী ১৮ শতাংশ। এদের মোট শিক্ষাথীর ২৮ শতাংশ অন্তর্ভূক্ত হচ্ছে অন লাইনে ক্লাশে। কৃষ্ণাঙ্গ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২২ শতাংশ। এদের মধ্যে ২০ শতাংশ যাবে অনলাইন শিক্ষায়। সিটির স্কুলে ১৬ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ শিক্ষার্থীর মধ্যে মোট শিক্ষার্থীর ১২ শতাংশের পছন্দ অনলাইন।
Posted ৭:০৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh