বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১
করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তার সত্বেও নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলগুলো খোলা থাকবে বলে ঘোষণা করেছেন সিটির বিদায়ী মেয়র বিল ডি ব্লাজিও। গত মঙ্গলবার বিল ব্লাজিও, নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নর ক্যাথি হকুল এবং নবনির্বাচিত মেয়র এরিক অ্যাডামসের এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে ব্লাজিও এ ঘোষণা দেন। নতুন মেয়র দায়িত্ব গ্রহণ করবেন ১ জানুয়ারি এবং স্কুল খুলবে আগামী ৩ জানুয়ারি।
ব্লাজিও করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন মোকাবেলার প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ৩ জানুয়ারি থেকে “স্টে সেফ এন্ড স্টে ওপেন” বা নিরাপদে থাকুন এবং খোলা রাখুন” নীতি অনুসরণের কথা বলেছেন। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী সিটির স্কুলগুলোর কোনো ক্লাসে যদি কোনো শিক্ষার্থীর ভাইরাস সংক্রমণ সনাক্ত হয় সেক্ষেত্রে পুরো ক্লাসের জন্য কোয়ারেন্টাইন কার্যকর না করে ক্লাসের সকল শিক্ষার্থীর ভাইরাস টেস্ট করার পর যাদের টেস্ট ফলাফল নেগেটিভ আসবে তাদের ক্লাসে রেখে স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে। এরিক অ্যাডামস সিটির উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেছেন, আপনাদের সন্তানরা স্কুৈ নিরাপদ, স্কুলে উপস্থিতি সংখ্যা তারই প্রমাণ দেয়।
উল্লেখ্য গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে সিটির স্কুলগুলো বন্ধ রয়েছে। ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট যে গতিতে নিউইয়র্ক সিটিসহ সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়েছে তাতে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। সিটির বেশ কিছু স্কুলে শিক্ষক, ছাত্র ও স্টাফদের ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার খবরে এ উদ্বেগ আরও বৃদ্ধি পায় এবং সঙ্গত কারণেই তারা ধারণা করছিলেন যে স্কুলে তাদের সন্তানদের উপস্থিতি বন্ধ রেখে আগের মতই অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা হবে।
কিন্তু সিটি কর্তৃপক্ষ তা না করে স্কুল খোলা রেখে ভাইরাস টেস্টের উপর অধিক জোর দিচ্ছে যে যারা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে সনাক্ত হবে তাদের স্কুলে উপস্থিত না থাকার বিষয়টি তারা নিশ্চিত করবে, যাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে ভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে। যেসব শিক্ষার্থীর স্কুলে প্রথম টেস্টে পজেটিভ সনাক্ত হবে তাদের তাকে তার পুরো ক্লাসের শিক্ষার্থীদেরসহ বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হবে। পরদিন ওই ক্লাসের শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে টেস্ট করানোর ব্যবস্থা করা হবে এবং নেগেটিভ ফলাফল আসলে পরদিনই তারা স্কুলে ফিরে আসতে পারবে।
কিন্তু যে শিক্ষার্থীর টেস্ট ফলাফল পজেটিভ ছিল তাকে সাত দিনের মধ্যে দ্বিতীয় টেস্টে ফলাফল নেগেটিভ হলে সে স্কুলে ফিরতে পারবে। প্রতি সপ্তাহে স্কুলের মাত্র ১০ শতাংশ শিক্ষার্থীর টেস্ট সম্পন্ন করানোর ব্যবস্থা করায় বিল ব্লাজিও সমালোচিত হয়েছেন। এখন থেকে সপ্তাহে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থীর ভাইরাস টেস্ট করানোর ব্যবস্থা করা হবে। স্টেট গভর্নর ক্যাথি হকুল সোমবার বলেছেন যে নিউইয়র্ক সিটির স্কুল শিক্ষার্থীদের ভাইরাস টেস্ট করানোর সুবিধার্থে তিনি দুই মিলিয়ন ‘র্যাপিড অ্যাট হোম টেস্ট’ পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।
কিন্তু এ ব্যবস্থার ফলে স্কুলে নতুন সেমিস্টার বিঘ্নিত হবে না কেউ এমন ধারণা পোষণ করছেন না। কারণ ওমিক্রন ছড়ানোর কারণে ইতোমধ্যে সিটির বেশ কিছু স্কুলে শিক্ষক ও স্টাফ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ভাইরাস সংক্রমণের কারণে ইতোমধ্যে সিটির প্রায় ১,৬০০ পাবলিক স্কুলের মধ্যে ১৭টি স্কুলে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে সংক্রমণ বর্তমান মাত্রার চেয়ে আরও বেড়ে গেলে সিটি সকল স্কুল বন্ধ ঘোষণা করার কথা চিন্তা করবে এমন আভাস দিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।
ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট যেহেতু অতিমাত্রায় সংক্রামক, সেজন্য সিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে সেব শিক্ষার্থী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন নিয়েছে এবং যারা ভ্যাকসিন নেয়নি তাাদের সকলের ক্ষেত্রে টেস্ট করানো বাধ্যতামূলক করা হবে। যেসব অভিভাবক তাদের সন্তানদের টেস্ট করানো নিয়ে আপত্তি তুলবেন সিটির কর্মকর্তারা পরিকল্পনা করেছেন সেইসব অবিভাবককে টেস্ট করানোর ব্যাপারে সম্মতি দানে উৎসাহিত করতে।
Posted ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh