| মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই ২০২০
প্রথম উপন্যাস ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ লিখেই খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছিলেন আবু ইসহাক। বলা হয়, বাংলা ভাষার একটি সার্থক উপন্যাস ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’। বিদেশি বেশ কয়েকটি ভাষায় এই উপন্যাস অনুবাদ হয়েছে। চলচ্চিত্রে রূপায়িত করেছিলেন মশিউদ্দিন শাকের ও শেখ নিয়ামত আলী। চলচ্চিত্রটি ছয়টি আন্তর্জাতিক পুরস্কারে সম্মানিত। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে ৯টি বিভিন্ন বিভাগে।
অত্যন্ত প্রচারবিমুখ সরল জীবনযাপন করতেন আবু ইসহাক। কাজ করতেন পুলিশ বিভাগে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একজন ছিলেন। লিখতেন কম, লেখা নিয়ে ভাবতেন বেশি। পড়তেন বেশি। দীর্ঘ লেখক জীবনে তাঁর লেখার পরিমাণ খুবই কম। কিন্তু যা-ই লিখেছেন তার প্রতিটিই অত্যন্ত স্মরণীয় রচনা। গল্প লিখেছেন বেশ কিছু। হারেম ও মহাপতঙ্গ নামে দুুটি গল্পগ্রন্থ আছে। মহাপতঙ্গ ও জোঁক অতিস্মরণীয় গল্প। এই দুটি গল্পই পাঠ্য বইয়ের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। কিশোরদের জন্য একটি ডিটেক্টিভ উপন্যাস লিখেছিলেন। সেই উপন্যাসের নাম ‘জাল’। তাঁর অগ্রন্থিত গল্পগুলো নিয়েও একটি সংকলন বেরিয়েছে। বাংলা একাডেমির অভিধান রচনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। খুলনার খালিশপুরে তাঁর বাড়িটির নাম ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’।
আবু ইসহাকের দ্বিতীয় উপন্যাসের নাম ‘পদ্মার পলিদ্বীপ’। দীর্ঘ ২৫ বছর সময় নিয়েছিলেন এই উপন্যাস লিখতে। শুরু করেছিলেন ১৯৬০ সালে, শেষ হয় ১৯৮৫ সালের ডিসেম্বর মাসে। ১৯৭৪ সালের মে মাস থেকে বাংলা একাডেমির সাহিত্য সাময়িকী ‘উত্তরাধিকার’-এ ধারাবাহিকভাবে উপন্যাসটি ছাপা হচ্ছিল। তখন উত্তরাধিকার সম্পাদনা করতেন কবি রফিক আজাদ। প্রথমে আবু ইসহাক এই উপন্যাসের নাম দিয়েছিলেন ‘মুখর মাটি’। এই নামে ১৬টি অধ্যায় ছাপা হয়েছিল উত্তরাধিকারে। পরে নাম বদলে রাখলেন ‘পদ্মার পলিদ্বীপ’। ১৯৮৬ সালের এপ্রিল মাসে বই হয়ে বেরোল ‘পদ্মার পলিদ্বীপ’। প্রকাশক চিত্তরঞ্জন সাহার ‘মুক্তধারা’। প্রচ্ছদ আঁকলেন শিল্পী হাশেম খান। ৩৪৩ পৃষ্ঠার বইটির দাম ৮০ টাকা।
তখন ‘লেখক কাগজ’ নামে অপেক্ষাকৃত কম দামের একটি কাগজ পাওয়া যেত। সেই কাগজেও একটি সংস্করণ হলো। সেই সংস্করণের দাম ৬০ টাকা। দীর্ঘদিন খেটে, অত্যন্ত যত্নে এবং মায়ায় আবু ইসহাক তাঁর এই দ্বিতীয় উপন্যাস রচনা করেছিলেন। নিবিড়ভাবে দেখেছিলেন পদ্মা চরের খেটে খাওয়া, সমস্যা জর্জরিত ও সংগ্রামী মানুষের জীবন। সেই জীবন নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন উপন্যাসে। কারো কারো মতে, ‘পদ্মার পলিদ্বীপ’ ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’র চেয়েও মহৎ উপন্যাস।
Posted ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh