বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

একজন মেজর সিনহা ও দুইশত চারজন মানুষ

ডা. ওয়াজেদ খান   |   বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট ২০২০

একজন মেজর সিনহা ও দুইশত চারজন মানুষ

টেকনাফ পুলিশের হাতে দুই বছরে নিহত হয়েছে ২০৪ জন মানুষ। এ তালিকার শেষ সংযোজন মেজর সিনহা। এখন তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে সর্বশেষ এ হত্যাকান্ডের। দেশে আইনের শাসন ও সামাজিক ন্যায় বিচারের কার্যকারিতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন আছে। আইনের শাসনের অভাব থাকলে স্বভাবতঃই আইন হারায় তার নিজস্ব গতি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অনেকে জড়িয়ে পড়ে বেআইনি কর্মকান্ডে। আইন তুলে নেয় নিজ হাতে। ধারণ করে দানবীর রূপ।

সমাজের নিকৃষ্টতম অপরাধীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট ফুটে উঠে তাদের মাঝে। দেশে তারা কায়েম করে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ড ঘটিয়ে মিথ্যে গল্প ফাঁদে। মেতে উঠে উল্লাস আনন্দে। ফলে সাধারণ মানুষ হয় নিপীড়িত লাঞ্ছিত। বঞ্চিত হয় প্রাপ্য নাগরিক অধিকার থেকে। আবার ক্ষমতাসীন বা প্রেসার গ্রুপের চাপে আইনের গতি পাল্টে যায় কখনো কখনো।
অপরদিকে সামাজিক ন্যায় বিচারের অভাবে দেশের সাধারণ মানুুষ শিকার হয় খুন-ধর্ষণ, গুম-অপহরণের। থানা-পুলিশ ও আদালত মামলা নেয় না। উল্টো মামলার জালে জড়িয়ে দিয়ে কারাগারে পাঠায় তাদেরকে। সন্ত্রাসী, মাদক-ব্যবসায়ী ও মানবপাচারকারীর মিথ্যে অভিযোগে ক্রস ফায়ারে দেয় নিরীহ মানুষকে। এদের মাঝে অপরাধীও থাকে মাঝে মধ্যে। তবে এসব হত্যাকান্ডের কোন তদন্ত বা বিচার কোন কিছুই হয় না। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সিদ্ধান্তই এখানে চূড়ান্ত। আবার এক্ষেত্রেও দেখা যায় ব্যতিক্রম। বিচার বর্হিভূত হত্যার শিকার ব্যক্তির পক্ষে যদি প্রভাবশালী মহল দাঁড়িয়ে যায়। তখন নড়েচড়ে বসে সরকারের শীর্ষ মহল। তাদের মাঝে দেখা দেয় অস্থিরতা। আইন আদালতের কাটা ঘুরে যায় উল্টোদিকে। আসামীরা তখন ধরা দেয় নিজ থেকেই। রাতের আধারে খুলে যায় আদালতের খাস কামরা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধানরা ছুটে যান ঘটনাস্থলে। মেজর সিনহা হত্যাকান্ডের ঘটনায় আইন ও বিচার বিভাগের ব্যতিক্রমী এসব এ্যাকশন দৃষ্টি কেড়েছে মানুষের। সৃষ্টি করেছে নতুন ইতিহাস।


সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত একজন মেজর। কক্সবাজারের টেকনাফ পুলিশ তাকে হত্যা করেছে নৃশংসভাবে। ৩১ জুলাই ঈদের পূর্ব রাতে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়েছে তার বুক। টেকনাফের ওসি প্রদীপ দাসের নির্দেশেই সে রাতে খুন হন মেজর সিনহা। টেকনাফ-কক্সবাজারের মধ্যকার মেরিন ড্রাইভটা নাকি এখন মৃত্যু উপত্যকা। প্রদীপ দাস টেকনাফ থানার দায়িত্ব পান ২২ মাস আগে। এ সময়ে টেকনাফে ১৪৪টি ক্রসফায়ারের ঘটনায় নিহত হয়েছে ২০৪ জন। মাদক নির্মূলের অসিলায় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় এসব হত্যাকান্ড ঘটান তিনি। টেকনাফে এমন কোন অপরাধ নেই যা তার দ্বারা সংঘটিত হয়নি। মানুষের বাড়ি-গাড়ি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে গায়েবী হামলা ও অগ্নি সংযোগের প্রকাশ্য ঘোষণা দেন প্রদীপ দাস। বিতর্কিত এই ওসি অপরাধ কর্মকান্ডের জন্য বার কয়েক বরখাস্ত হন অতীতে। তারপরও তিনি ছিলেন বহাল তবিয়তে। শুধু তাই নয় ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে তিনি গ্রহণ করেন সর্বোচ্চ পুলিশ পদক ‘বিপিএম’। কিভাবে একজন সার্টিফাইড খুনী ও দুর্নীতিবাজ জাতীয় পুরস্কার পান? কারা তার জন্য সুপারিশ করেছে এবং তার খুটির জোরই বা কোথায়? এসব জানার অধিকার আছে দেশবাসীর। মেজর সিনহাকে নির্মমভাবে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি পুলিশ। সিনহা ও তার সহযাত্রীদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা ঠুকে দিয়েছে মাদক ও পুলিশের প্রতি অস্ত্র তাক করার। এমনকি সিনহার সহযোগী শিক্ষার্থীদের এ মামলায় জেলে পাঠিয়েছে পুলিশ। আর তাদের মুক্তির জন্য আন্দোলন করছে সহপাঠীরা।

পুলিশ কেন মেজর সিনহার বুকে গুলি চালাল? এটা কি নিছক ক্রসফায়ার? নাকি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড? সেখানে তো কোন ধরণের বাক বিতন্ডা বা যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি হয়নি। মেজর সিনহাতো মাস ধরেই কক্সবাজার চষে বেড়িয়েছেন। গুলি চালানোর আগে তিনি নিজের পরিচয়ও দিয়েছেন পুলিশকে। কিন্তু ঘাতকরা কোন কিছুই কানে তুলেনি। মেজর সিনহার মতো একজন চৌকষ সেনা অফিসার যিনি এসএসএফএ ছিলেন। কেনই বা এত অল্প বয়সে স্বেচ্ছা অবসরে গিয়েছেন। এ প্রশ্ন হয়তো অজানাই থেকে যাবে।


সিনহা হত্যাকান্ডের পর তদন্ত কমিটি গঠন ছাড়া সরকার তেমন কোন গুরুত্ব দেয়নি প্রথমটায়। কিন্তু সব দৃশ্যপট পাল্টে যায় সেনা গোয়েন্দা সংস্থার একটি রিপোর্ট চাউর হয়ে যাওয়ায়। বর্তমানে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাগণ ক্ষোভ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান সিনহা হত্যাকান্ডের। প্রধানমন্ত্রী ফোন করেন সিনহার মাকে। আশ্বাস দেন বিচারের। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনী প্রধানকে ঘটনাস্থলে পাঠান প্রধানমন্ত্রী। নজিরবিহীন যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে দ্ইু বাহিনীর সুসম্পর্কের কথা জানান দেন তারা। সিনহার বোন মামলা দায়ের করেন স্থানীয় আদালতে। আসামীরা সুর সুর করে এসে হাজির হন আদালতে। তিন খুনী এখন র‌্যাবের হাওলায় রিমান্ডে আছে। এ সবকিছু ঘটে যায় ম্যাজিকের মতো। এতোদিন ২০৪ জন মানুষকে বন্দুক যুদ্ধের নামে নির্বিচারে হত্যা করেছে টেকনাফ পুলিশ। এসব নিয়ে তখন টু শব্দটি করেনি কেউ। দাঁড়ায়নি কেউ তাদের পরিবারের পাশে। হত্যাকান্ডের একটি ঘটনারও বিচারতো দূরের কথা কোন তদন্ত পর্যন্ত হয়নি। যেন সাধারণ মানুষকে হত্যা করা জায়েজ। মাদক নির্মূলের নামে ক্রসফায়ারে যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে তাদের সিংহভাগই দরিদ্র অসহায় শ্রেণীর। আসল মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে আঁতাত করে নাকি কন্ট্রাক্ট কিলিংয়ের শিকারে পরিণত করা হয়েছে তাদেরকে। অথচ একজন অবসর প্রাপ্ত মেজরকে হত্যা করায় ফুঁসে উঠেছে সেনাবাহিনী। দৌড়ঝাপ শুরু হয়েছে সরকারের উচ্চ মহলে। আইজিপি সেনাবাহিনীকে আশ্বস্ত করেছেন এমন ঘটনা আর একটিও ঘটবে না। কিন্তু এই গ্যারান্টি কি শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর সদস্যদের জন্য? না দেশের সব নাগরিকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে তা স্পষ্ট করেননি পুলিশ প্রধান।

মেজর সিনহা হত্যাকান্ডে প্রতিটি বিবেকবান মানুষ মর্মাহত। হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে তাদের। সিনহা খুনের বিচারিক কাজ শুরু হয়েছে। এটি একটি ভালো আলামত। মানুষ এ হত্যাকান্ডের দ্রুত বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রত্যাশী। পাশাপাশি টেকনাফের ২০৪ জনসহ সারাদেশে যারা বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ডের শিকার তাদের সবার ঘটনার তদন্ত ও বিচার করতে হবে। মেজর সিনহা ও খুনের শিকার ২০৪ জন সাধারণ মানুষ সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। আইনের চোখে তাদের অধিকার সমান ও অভিন্ন। দেশের সংবিধানে মেজর মাইনর বলে কোন নাগরিকত বৈষম্য নেই। ‘আইনের চোখে সকল নাগরিক সমান এবং প্রত্যেকে আইনের সমান সুযোগ পাবেন।’ দেশের সংবিধানের ২৭ নম্বর অনুচ্ছেদে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে-‘জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতা থেকে কোন ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা যাবে না।।” অপরদিকে সংবিধানের ৩৫(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ফৌজদারী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে দ্রুত ও প্রকাশ্য বিচার লাভের অধিকারী হবেন। তাই যদি হয় তাহলে একই যাত্রায় কেন ভিন্ন ফল হবে। আর ক্রসফায়ারে দেশের নাগরিক হত্যাকারীদের রাষ্ট্র কিভাবে পুরস্কৃত করে? আইনী দর্শণ বলে ‘দশজন অপরাধী ছাড়া পাক তাতে কোন আপত্তি নেই। কিন্তু একজন নিরপরাধ ব্যক্তি যেন শাস্তি না পায়।’ একজন মানুষ অপর একজন মানুষের জীবন সংহার করার কোন অধিকার সংরক্ষণ করে না। আইন আদালত কোনভাবেই পারে না নাগরিক বৈষম্য উসকে দিতে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিলো বৈষম্য কেন্দ্রিক। পাকিস্তানের জনসংখ্যার ৫৬শতাংশ ছিলো পূর্বাংশে। আর ৪৪ শতাংশ ছিলো পশ্চিমাংশে। কিন্তু শাসক ছিলো পশ্চিম পাকিস্তানীরা। এই বৈষম্যের কারণেই দানা বেঁধে উঠে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। স্বাধীন বাংলাদেশে আজও বিদ্যমান সামাজিক ও রাজনৈতিক বৈষম্য। ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে অসাম্যের বিস্তার। যে কারণে টেকনাফের ২০৪ জন মানুষের জীবন রাষ্ট্রের কাছে মূল্যহীন। অথচ কথা ছিলো রাষ্ট্র তার প্রতিটি নাগরিককে দিবে সুরক্ষা। নিশ্চিত করবে তাদের জান-মালের নিরাপত্তা। রাষ্ট্র অনেকটা ডিমের খোসার মতো। খোসা যেমন ঘিরে রাখে তার সারবস্তু ‘কুসুম’কে। যার মধ্যে থেকে নিরাপদ অভ্যুদয় ঘটে জীবনের। কুসুম ছাড়া ডিমের খোসা যেমন মূল্যহীন, নাগরিক ছাড়া রাষ্ট্রের অস্তিত্বও তদ্রুপ। রাষ্ট্র জনগণের সেবকমাত্র। প্রদীপ দাসদের মতো দানব তৈরি রাষ্ট্রের কাজ নয়।


সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা রাজ্যে পুলিশের হাতে নিহত হন কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড। ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় পাঁচ বছর জেল খাটেন ফ্লয়েড। পুলিশ তাকে মামুলি একটি ঘটনায় গ্রেফতার করার চেষ্টাকালে মারা যান ফ্লয়েড। এঘটনায় বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠে গোটা যুক্তরাষ্ট্র। দাবি উঠে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবাদ ও পুলিশী আচরণবিধি পরিবর্তনের। এ আন্দোলনে শামিল হন সাদা, কালো, বাদামী নির্বিশেষে সব রংয়ের মানুষ। জর্জ ফ্লয়েডকে কৃষ্ণাঙ্গ নয়, চিহ্নিত করা হয় একজন মানুষ হিসেবে। চাপা পড়ে যায় তার অতীত অপরাধ কর্ম। স্লোগান উঠে ‘ব্ল্যাক লাইভস’ ম্যাটার। শ্বেতাঙ্গ সংখ্যা গরিষ্ঠ আমেরিকার বহুজাতিক সমাজ সংস্কৃতিতে একজন কৃষ্ণাঙ্গ হত্যাকান্ডের ঘটনা বদলে দিয়েছে দেশের আইন। বাংলাদেশে বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ড প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে এখন। হত্যাকারীদের অবাধ দায়মুক্তি দিচ্ছে রাষ্ট্র। যা অসাংবিধানিক, অমানবিক ও সভ্য সমাজের সাথে সাযোজ্যহীন। কেউ অপরাধ করলে দেশের প্রচলিত আইনে তার বিচার হবে। অন্য কোন পন্থায় নয়। ঠান্ডা মাথায় মানুষ হত্যার এ সংস্কৃিত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে রাষ্ট্রকে। মেজর সিনহা হত্যাকান্ড একটি স্পর্শকাতর ইস্যু। এ হত্যাকান্ডে প্রশাসন বিব্রত। রাষ্ট্র বিচারকের পাল্লায় তুলে দিয়েছে ২০৪ জন মানুষ ও একজন মেজরকে। কার জীবনের মূল্য বেশি? একজন মেজর না ২০৪ মানুষের। মেজরকে মানুষ থেকে পৃথক করার সুযোগ নেই। সবাইকে মানুষ হিসেবে মাপতে হবে এক পাল্লায়। প্রতিটি হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার শেষে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে রাষ্ট্রীয় ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার দায়ভার নিতে হবে রাষ্ট্রকেই। গণতন্ত্রের প্রসঙ্গ নাই বা টানলাম।

advertisement

Posted ৭:২০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট ২০২০

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.