| বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১
যুক্তরাষ্ট্রে গতবছর ফেব্রুয়ারী মাস থেকে শুরু হয়েছে করোনা ভাইরাসজনিত মহামারীর তাণ্ডব। ইতোমধ্যে ৪ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি লোক এই ভাইরাস সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। আশংকা ব্যক্ত করা হয়েছে আরো এক লাখ লোক মারা যেতে পারে। সবচেয়ে বেশী মানুষ আক্রান্ত এবং মৃত্যুবরণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অর্থ-বিত্ত, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও আধুনিক চিকিৎসা সেবার সূতিকাগার বলে খ্যাত এদেশটি এখনও পাড় করছে অস্থির সময়। বেকার হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ আমেরিকান। দিশেহারার মত দিন কাটাচ্ছিলেন তারা। এ অবস্থায় সাবেক প্রশাসন মাথাপিছু ১,২০০ ডলার করে স্টিমুলাস এবং ১৩ সপ্তাহ ধরে ৬০০ ডলার করে সহায়তা কর। পরবর্তীতে গত আগষ্ট মাসে সপ্তাহে ৩০০ ডলার করে ছয় সপ্তাহ ফেডারেল সহায়তা প্রদান করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৬০০ ডলার হারে স্টিমুলাস এবং সপ্তাহে ৩০০ ডলার হারে ১১ সপ্তাহের জন্য ফেডারেল সহায়তা প্রদান শুরু হয়, যা এখনো অব্যাহত আছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন স্টিমুলাসে পরিমাণ বৃদ্ধি করে মাথাপিছু ২,০০০ ডলার হারে দেয়ার প্রস্তাব করেন, যা ইতোমধ্যে কংগ্রেসে পাস হয়েছে। এর মধ্যে আগে দেয়া ৬০০ ডলারও অন্তর্ভূক্ত। অর্থ্যাৎ ভুক্তভোগীদের কাছে শিগগিরই অবশিষ্ট ১,৪০০ ডলার প্রেরণ শুরু হবে।
ব্যক্তিগত পর্যায়ে স্টিমুলাস দেয়ার ব্যবস্থা করা ছাড়াও করেনায় ক্ষতিগ্রস্থ অন্যান্য ক্ষেত্রকে সহায়তার জন্য যে রিলিফ প্যাকেজ পাস করা হয়েছে তার মোট পরিমাণ ১.৯ ট্রিলিয়ন ডলার। বর্তমান ফেডারেল সহায়তার মেয়াদ আগামী ১৪ মার্চ শেষ হবে। কিন্তু যেহেতু এখনো করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ হয়নি, যারা কাজ হারিয়েছে তারা সকলে কাজে ফিরে যেতে পারেননি বা খন্ডকালীন কাজ করছেন, অতএব সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থার আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় বাইডেন প্রশাসন বর্তমান সহায়তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পরবর্তী স্টিমুলাস প্যাকেজ পাস করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে হাউজ ডেমোক্রেটরা চাইল্ড ট্যাক্স ক্রেডিটে পরিমাণ ছয় বছর থেকে ১৭ বছর বয়সের শিশুদের জন্য বার্ষিক ৩,৬০০ ডলার এবং ছয় বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের জন্য নির্ধারণ, আনএমপ্লয়মেন্ট বেনিফিট ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর বর্ধিত করার প্রস্তাব সম্বলিত একটি বিল উত্থাপন করেছে। বেকারত্ব এখনো চরম অবস্থায় রয়েছে এবং অর্থনীতিবিদরা এটিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবছর সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ বেকার হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। গত সপ্তাহে নতুন করে ৮ লাখ ৪৭ হাজার আমেরিকান বেকার ভাতা বা আনএমপ্লয়মেন্ট বেনিফিটের জন্য আবেদন করেছেন।
গত জানুয়ারী মাস পর্যন্ত এক কোটি ৮০ লাখ আমেরিকান কোন না কোন ধরনের বেকার ভাতা গ্রহণ করেছেন। যাদের আয় করোনার কারণে কমে গেছে, তাদের কাছে সহায়তা পৌঁছানো অব্যাহত রাখার পক্ষে মত প্রকাশ করছেন অর্থনীতিবিদরা। কারণ মানুষকে ক্রয়ের সাধ্যে মধ্যে রাখতে না পারলে তা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে ধস নামানোর কারণ সৃষ্টি করবে। যারা আয়কর রিটার্ন জমা দেন ও জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখেন এ ধরনের ৯০ শতাংশই মানুষই ফেডারেল আর্থিক সহায়তা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত। সংকটকালে যাদের আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন তারা আর্থিক সহায়তা পেলে টিকে থাকবেন এবং অর্থনীতিতে যেভাবে অবদান রেখে আসছিলেন সেভাবে ভবিষ্যতেও অবদান রাখতে পারবেন। তবে এটা নিশ্চিত করতে হবে, ফেডারেল সহায়তা যেন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন-এমন লোকেরাই পায়।
Posted ৮:৪৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh