| বৃহস্পতিবার, ০৭ মার্চ ২০২৪
বাংলাদেশ রিপোর্ট: গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার বাদ মাগরিব জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে দেশী সিনিয়র সেন্টারে ফুসফুসের ক্যান্সার সম্পর্কে এক সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার এবং নর্থওয়েল হেলথ ক্যান্সার সেন্টারের উদ্যোগে আয়োজিত এই সেমিনারে বক্তব্য রাখেন নর্থওয়েল হেলথ ক্যান্সার ইন্সটিটিউটের মেডিকেল ডাইরেক্টর ও ফরেস্ট হিলস হসপিটালের হেমাটোলজি এন্ড অনকোলজি বিভাগের প্রধান ডা. অভিষেক সোয়াইকা। তিনি তার বক্তব্যে কি কি কারণে ফুসফুসে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে এবং এই আশঙ্কা কীভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব এবং ফুসফুসে ক্যান্সার সংক্রমণ ঘটছে কিনা তা জানার জন্য প্রয়োজনীয় স্ক্রিনিং এর গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং পাওয়ার পয়েন্টে তা প্রদর্শন করেন। এছাড়া তিনি উপস্থিত প্রবীণ ব্যক্তিদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
ডা: অভিষেক সোয়াইকা বলেন, ফুসফুসের ক্যান্সার হঠাৎ করেই হয় না। তা ধীরে ধীরে দীর্ঘদিনে ফুসফুসে বাসা বাঁধে। ফুসফুসের ক্যান্সার সংক্রমিত হয়েছে কিনা তা জানার জন্য নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ে কোনো বিকল্প নেই। তিনি আরো বলেন প্রধানত ফুসফুসের দুই ধরনের ক্যান্সার হয়। একটিকে বলা হয় নন-স্মল সেল লাং ক্যান্সার, অফরটির নাম হচ্ছে স্মল সেল লাং ক্যান্সার। নারী ও পুরুষরা যত ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন তার চেয়ে সবচেয়ে কমন হচ্ছে ফুসফুসের ক্যান্সার। যুক্তরাষ্ট্রে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা সর্বাধিক। তিনি আরো বলেন, সাধারণত বয়স্কদেরকেই ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। তবে যেকোনো বয়সের মানুষেরই ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। ডা. অভিষেক বলেন, ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্তদের দশ জনের মধ্যে ৮ জনই হয় ধুমপান করেন বা অতীতে ধুমপান করেছেন। কিন্তু যারা কখনও ধুমপান করেননি তারাও ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন।
তিনি বলেন, সকলের জন্য ফুসফুসের ক্যান্সারের অস্তিত্ব আছে কিনা তা জানার জন্য স্ক্রিনিং করা জরুরী। কারণ প্রাথমিক অবস্থায় শণাক্ত হলে এ ধরনের ক্যান্সারের চিকিৎসা করা সহজ। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি তাদের গাইডলাইনে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার স্ক্রিনিংয়ের তালিকায় ব্রেস্ট, কোলন, প্রোস্টেটের পাশাপাশি ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য স্ক্রিনিং এর আবশ্যকতা যুক্ত করেছে। যাদের ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার উচ্চতর ঝুঁকি রয়েছে তারা ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে জানতে পারেন যে তারা স্ক্রিনিং করবেন কিন। এছাড়া তাদের স্বাস্থ্যের সার্বিক অবস্থা, স্ক্রিনিংয়ের উদ্দেশ্য, কিভাবে স্ক্রিনিং করা হয়, করলে কি লাভ, এবং স্ক্রিনিং করায় কোনো সম্ভাব্য ঝুঁকি আছে কিনা তাও পরামর্শ করতে পারেন ডাক্তারের সাথে। তিনি ফুসফুসের ক্যান্সারের স্ক্রিনিংয়ে হেলথ ইন্স্যুরেন্স কভার করে কিনা, সে প্রসঙ্গেও বলেন। এছাড়া তিনি বলেন, ধুমপান ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রধান কারণ হলেও একমাত্র কারণ নয়। তিনি যারা প্রতিদিন ২০টি করে সিগারেট ২০ বছর ধরে খান, যারা প্রতিদিন ১০টি করে সিগারেট ৪০ বছর ধরে খান, আর যারা প্রতিদিন দুই প্যাকেট বা ৪০টি করে সিগারেট ১০ বছর ধরে খান তাদের ক্যান্সারের ঝুঁকির ওপর বিস্তারিতভাবে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, যারা ধুমপান করেন না, কিন্তু ধুমপায়ীদের পাশে থাকার কারণ তামাকের ধোঁয়া গ্রহণ করেন তারাও ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। ক্যান্সারমুক্ত থাকার জন্য তিনি পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের পরামর্শ দেন। নর্থওয়েল হেলথ ক্যান্সার ইন্সটিটিউটের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট হোর্হে আই ক্রুজ এবং গভর্নমেন্ট এন্ড কমিউনিটি রিলেশনস অফিসার স্ট্যান্সি নাজিও ডা. অভিষেককে সহযোগিতা করেন।
সেমিনারে জেএমসির বোর্ড অফ ট্রাস্টির চেয়ারম্যান ডা. নাজমুল আলম ও জেএমসির সেক্রেটারি আফতাব মান্নান এ ধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রবীণদের জন্য সচেতনতামূলক সেমিনারে নর্থওয়েল হেলথ ক্যান্সার ইন্সটিটিউটের অংশগ্রহণ জন্য ইন্সটিটিউট ও ডা. অভিষেককে ধন্যবাদ জানান। সেমিনার সম্পূর্ণভাবে সমন্বয় ও পরিচালনা করেন জেএমসির জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার। ফুসফুসের ক্যান্সার বিষয়ে ও স্ক্রিনিং সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যের জন্য আগ্রহীরা যোগাযোগ করতে পারেন: 9225, Queens Blvd, Suite 501, Rego Park, NY 11374 এ।
Posted ১১:৪৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৭ মার্চ ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh