শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫ | ১ ভাদ্র ১৪৩২

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

প্রবাসীদের ভোটাধিকার ও বাংলাদেশের প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব আইন

ডা. ওয়াজেদ খান :   |   বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫

প্রবাসীদের ভোটাধিকার ও বাংলাদেশের প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব আইন

প্রবাসী বাংলাদেশিদের দীর্ঘদিনের দাবি ভোটাধিকার ও জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ। জন্মগত এই নাগরিক অধিকার আদায়ে দেশ-বিদেশে এখনও আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন প্রবাসীরা। বিভিন্ন সময় সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানগণ প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রদানের বিষয়ে আশ্বাস দিলেও তা কার্যকর হয়নি। বাংলাদেশের বর্তমান প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব আইনে প্রবাস থেকে ভোটাধিকার প্রয়োগ কিংবা দেশের কোন পর্যায়ের নির্বাচনেই অংশগ্রহণের সুযোগ নেই প্রবাসীদের। চব্বিশের গণ অভ্যুত্থানের পর আরো তীব্রতর হয় প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবি। এর প্রেক্ষিতে গত বছর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দেন প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রদানের।নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংস্কার কমিশন এ ব্যাপারে প্রস্তাবনাও পেশ করেছে। কাজ করছে নির্বাচন কমিশনও। সর্বশেষ গত ৫ আগষ্ট, জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা পুনরায় আশ্বাস দিয়েছেন আগামী নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার। প্রবাসীদের ভোটাধিকার একটি জটিল প্রক্রিয়া। আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ১কোটি ৩৪ লাখ প্রবাসীকে ভোটাধিকার প্রদানের বিষয়টি সহজ হবে এমনটি ভাবার কোন কারণে নেই। অপরদিকে প্রবাসীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা প্রার্থী হওয়ার দাবি নিয়ে কোন আশ্বাস মেলেনি। সকল প্রবাসী ভোটাধিকার পেলেও যে সকল প্রবাসী অন্যদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন, তারা কোন পর্যায়ের নির্বাচনেই প্রার্থী হতে পারবেন না, বিদেশী নাগরিকত্ব বহাল রেখে।

প্রবাসীদের দ্বৈত-নাগরিকত্ব অধিকার

নাগরিক একটি আধুনিক রাষ্ট্রের অন্যতম অনুসঙ্গ। সাংবিধানিক বা আইনি মর্যাদায় যিনি অধিবাসী হিসেবেই স্বীকৃত। বাক, ব্যক্তি, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও ভোটাধিকারের মতো অনেক মৌলিক সুবিধা ভোগ করে থাকেন একজন নাগরিক। অপরদিকে রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকদেরও রয়েছে অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য। কোন ব্যক্তির যদি কোন রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব না থাকে তিনি বনে যান রাষ্ট্রহীন। আবার কাউকে বলা হয় বর্ডার ল্যান্ডার, যখন তিনি রাষ্ট্রের সীমানায় বসবাস করেন নাগরিকত্বের পরিচয় ছাড়া। নাগরিকত্ব নির্ধারনে প্রত্যেক রাষ্ট্রেরই রয়েছে নীতি, বিধান ও মানদন্ড। জন্মসূত্রে নাগরিক এমন পিতামাতার সন্তান সরাসরি সে দেশের নাগরিক বলে বিবেচিত হন। অন্যান্য প্রক্রিয়ায় নাগরিকত্ব লাভের জন্য প্রয়োজন শর্তযুক্ত আবেদনপত্র। বাংলাদেশের সংবিধানের ৬ ধারায় উল্লেখ রয়েছে নাগরিকত্বের বিধান। যা দেশের প্রচলিত নাগরিকত্ব আইন দ্বারা নির্ধারিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইন কার্যত পরিচালিত হয়ে আসছিলো পাকিস্তান আমলে গৃহীত ১৯৫১ সালের পুরনো আইন দ্বারা। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালে প্রণীত ‘টেম্পরারি সিটিজেনশিপ প্রভিশন্স অর্ডার’ কিছুটা সংশোধন করা হলেও পূর্ণাঙ্গ নাগরিকত্ব আইন প্রণীত হয়নি। নাগরিকত্ব প্রদান, বাতিল এবং দ্বৈত নাগরিকত্ব বিষয় সংবলিত বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন-২০১৬ প্রণীত হয়েছে প্রথমবারের মতো। প্রস্তাবিত নতুন এই আইনটি সে বছরের ১ ফেব্রুয়ারিতে মন্ত্রী সভায় অনুমোদনের পর ভোটিংয়ের জন্য পাঠানো হয় আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। যা এখনো আলোর মুখ দেখেনি।
জীবিকার প্রয়োজনে বিশ্বের ১৮০টিরও অধিক দেশে রয়েছে প্রায় দেড় কোটি বাংলাদেশির বসবাস। যারা বছরে দেশে পাঠিয়ে থাকেন প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার। প্রবাসীরা দেশের আর্থ সামাজিক অবকাঠামোর উন্নয়নের বড় অংশীদার। প্রবাসীদের শতকরা প্রায় সত্তুর ভাগই অস্থায়ীভাবে মধ্যপ্রাচ্য এবং মালয়েশিয়া সহ অন্যান্য দেশে বসবাসরত। বাকি ত্রিশ শতাংশ বাংলাদেশি স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য দেশের নাগকিরত্ব গ্রহণ করে। দ্বৈত-নাগরিকত্বের আওতায় নিশ্চিত করা হয়েছে তাদের অধিকার সমূহ। এই আইনে জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশি একই সাথে দু’টি দেশের বিভিন্ন অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারেন। বিশেষ করে উভয় দেশে বসবাস, কাজ ও পড়াশুনা, আজীবন একাধিক প্রবেশাধিকার ভিসা, নিজ দেশে সম্পত্তির মালিক হওয়া ইত্যাদি। কিন্তু বিদেশি নাগরিকত্ব বহাল রেখে রাষ্ট্রপতি, জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের কোন নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না তারা। বিচারপতিসহ সরকারি, সামরিক-বেসামরিক চাকুরী লাভের সুযোগ নেই দ্বৈত নাগরিকত্বধারীদের। বর্তমানে ১০১ট্ িদেশের দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ পাচ্ছেন বাংলাদেশিরা। মায়ানমার ও সার্কভূক্ত দেশগুলোতে নেই দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ। প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব আইনে প্রবাসীদের অধিকার দ্বৈত নাগরিকত্ব আইন বহাল রেখে ২০১৬ সালে তৈরী বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইনে প্রবাসীদের মৌলিক নাগরিক অধিকার উপেক্ষিত হয়েছে। ‘বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন ২০১৬’-এর খসড়া সেবছরই অনুমোদন করে সরকারের মন্ত্রীসভা। যা জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার অপেক্ষায় ছিল। তবে নাগরিকত্ব আইনের খসড়ার বেশ কয়েকটি ধারা নিয়ে আপত্তি উঠায় এটি সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারণ এ আইনের খসড়া যে অবস্থায় আছে তা হুবহু কার্যকর হলে, প্রবাসীরা তাদের সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার হারাবেন। সংকুচিত হয়ে যাবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের প্রবাসীদের বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার সুযোগ। এ আইনের কিছু ধারা কিছু মানুষকে রাষ্ট্রহীন করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে এগুলো সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার পরিপন্থী। খসড়া আইনে বিধৃত হয়েছে কোন ব্যক্তির বাংলাদেশের নাগরিকত্ব লাভ, নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্যতা, অযোগ্যতা, নাগরিকত্ব বাতিল ও নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়গুলো। দেশবাসীকে এ সম্পর্কে কোন ধারনা দেওয়া হয়নি খসড়াটি মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত হওয়ার আগে। মন্ত্রীসভা খসড়াটির অনুমোদন দেয়ার পরই এ নিয়ে ভাবার সুযোগ পেয়েছেন প্রবাসীরা ।

খসড়া আইনের ৪ ধারায় জন্মসূত্রে অর্জিত নাগরিকত্বের শর্তাবলী বিবৃত হয়েছে। অন্যদিকে ধারা: ৫ (বংশসূত্রে নাগরিকত্ব), ধারা: ৬ (প্রবাসীদের নাগরিকত্ব), ধারা: ৮ (দ্বৈত নাগরিকত্ব), ধারা: ৯ (সম্মানসূচক নাগরিকত্ব), ধারা: ১০ (দেশীয়করণ সূত্রে নাগরিকত্ব), ধারা: ১১ (বৈবাহিক সূত্রে নাগরিকত্ব) এবং ধারা: ১২তে (ভূখন্ড সংযোজন সূত্রে নাগরিকত্ব) ইচ্ছাসূত্রে নাগরিক হওয়ার বিধান রয়েছে। ৬ ধারা অনুযায়ী, “বিদেশে বসবাসকারী কোন ব্যক্তি বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্তে সরকারের নিকট তাহার আবেদনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব লাভ করিতে পারিবেন, যদি তাঁহার পিতা বা মাতা বা পিতামহ বা মাতামহ তিনি বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণের পূর্বে বাংলাদেশের নাগরিক হইয়া থাকেন।” অর্থাৎ খসড়া আইনটিতে নাগরিকদের মধ্যে শ্রেণি বিভাজন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনের ধারা: ৭ এর ২ উপধারা অনুযায়ী ধারা: ৬ এর আওতায় নাগরিকত্ব লাভকারী ব্যক্তিরা বিভিন্ন সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার হারাবেন। যেমন, জাতীয় সংসদের সদস্য পদে নির্বাচন, সুপ্রীম কোর্টের বিচারকসহ প্রজাতন্ত্রের কোন দায়িত্বে নিয়োগ লাভ, স্থানীয় সরকারসহ যে কোন পদে নির্বাচন এবং কোন রাজনৈতিক সংগঠন করা। ধারা: ৮ এর ১ উপধারা অনুযায়ী সুপ্রীম কোর্টের বিচারক, জাতীয় সংসদের সদস্য অথবা শৃংখলা বাহিনীতে বা প্রজাতন্ত্রের অসামরিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি তার দায়িত্বে বা পদে নিয়োজিত থাকাকালীন সময়ে দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারবেন না।

এ আইনের খসড়া বিশ্লেষণ করে আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, এই আইন প্রবাসের তৃতীয়, চতুর্থ প্রজন্মকে বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার পথ রুদ্ধ করে দেবে। একই সাথে যাদের দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকবে তারা সরকারী চাকুরি, সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করাসহ সরকারি নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। এছাড়া দ্বৈত নাগরিকত্ব, বংশসূত্রে ও সম্মানসূচক নাগরিত্বসহ বৈবাহিক সূত্রে যারা নাগরিত্ব গ্রহণ করবেন তারা বিভিন্ন সাংবিধানিক অধিকার হারাবেন। যা বৈষম্যমূলক এবং বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮(১) অনুচ্ছেদের লংঘন। ধারা: ৫-এর ২(ক) উপধারায় বলা হয়েছে, বংশসূত্রে নাগরিকত্ব অর্জনের জন্য জন্মের দুই বছর বা আইনটি বলবৎ হওয়ার দুই বছরের মধ্যে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনে জন্মনিবন্ধন করতে হবে। ফলে দুই বছরের মধ্যে জন্মনিবন্ধনে ব্যর্থ হওয়া দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রবাসীরা বাংলাদেশি নাগরিক হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। এর ফলে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী বাংলাদেশী নাগরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিরাট অংশই তৃতীয় প্রজন্মের। এই আইন কার্যকর হলে তাঁরা বংশসূত্রে নাগরিক হওয়ার যোগ্যতা হারাবেন।এতে অনেকেই আর আগ্রহী হবেন না বাংলাদেশে যেতে ও সেখানে বিনিয়োগ করতে। আইনের ধারা: ৫ ও ১৩ এর মাধ্যমে প্রবাসীদের মূলত গণ্য করা হয়েছে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে। আইনের ৪(২) উপধারায় বলা হয়েছে, কারও পিতা বা মাতা বিদেশি শত্রু হলে তিনি জন্মসূত্রেও নাগরিক হতে পারবেন না।  প্রবাসীদের ভোটিংয়ের প্রস্তাবিত ব্যবস্থা : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবেও উত্থাপিত হয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়টি। বিপুল সংখ্যক প্রবাসীকে ভোটার তালিকায় নিবন্ধিত করা এবং এনআইডি ডাটাবেজের আওতায় আনা নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ। তারপরও নির্বাচন কমিশন সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইতোমধ্যেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে প্রবাসীদের ভোটার তালিকাভুক্ত করতে। প্রবাসী ভোটার তালিকা তৈরী হয়ে গেলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা মোটা দাগে চারটি পদ্ধতিতে নিজ দেশের নির্বাচনে ভোট প্রয়োগ করতে পারবেন।

উপায় চারটি হলো ১. ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত থেকে ২. পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে, ৩. প্রক্সি ভোট এবং ৪. ইলেকট্রোনিক বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভোট প্রদান। প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য প্রস্তাবিত চারটি পদ্ধতি নিয়েই রয়েছে বড় ধরণের জটিলতা। পোস্টাল ভোটিং ব্যবস্থার একটি প্রধান বাধা হল তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী নিবন্ধিত ভোটার নন এবং তারা তালিকাভূক্ত নন এনআইডি সার্ভারে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে একটি ট্রায়াল শুরু করেছে। যাতে অনুমতি পেয়েছে বাংলাদেশি প্রবাসীদের নির্বাচনি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার। দেশগুলো হচ্ছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব-আমিরাত, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, ওমান, বাহরাইন, জর্ডান, সিঙ্গাপুর, লেবানন, লিবিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মালদ্বীপ এবং কানাডা। তবে নভেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত কেবল সাতটি দেশে আংশিকভাবে ট্রায়ালটি পরিচালিত হয়েছে। দেশগুলো হচ্ছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত এবং কাতার।

এই সাতটি দেশে মোট ৩৪,৭৪৮ জন প্রবাসী তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করেছেন, যার মধ্যে ১৩,১৮২ জনকে প্রবাসীদের ভোটাধিকার শতভাগ নিশ্চিত করার বিষয়টি হয়তো বা এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে সম্ভব হবে না। তবে সহজ পদ্ধতিতে বাছাই করে ভোটার নিবন্ধন দ্রুততর করতে হবে। দ্বৈত নাগরিকত্বের বিধান না থাকলেও ভারত সহ বিভিন্ন দেশ তাদের প্রবাসী নাগরিকদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেছে একাধিক আইনী প্রক্রিয়ায়। প্রস্তাবিত বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন-২০১৬, সংশোধন করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে। বাংলাদেশ থেকে মানুষ বিদেশে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিশেষ করে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, অষ্ট্রেলিয়া ইত্যাদি দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে। অস্থায়ীভাবে চাকরি নিয়ে প্রবাসী হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। তাই প্রবাসী বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রবাসী বাংলাদেশীরা শিক্ষা, অর্থনীতি, উন্নয়নের লক্ষ্যে বিদেশে পাড়ি জমালেও তাঁদের মন পড়ে থাকে স্বদেশে। বাংলাদেশ তাঁদের শিকড়। তাঁরা শিকড়কে ভালোবাসেন। বিনিয়োগ করতে চান শিকড়ের টানে দেশে ফিরে। দেশকে ফিরিয়ে দিতে চান প্রবাসের অর্জিত অভিজ্ঞতা। বসবাস ও নিয়মিত যাতায়াত করতে চান স্বদেশে।  খসড়া আইনে আরোপিত নাগরিকত্বের সীমাবদ্ধতার কারণে বাংলাদেশ বিমুখ হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে প্রবাসী ও তাঁদের সন্তান-সন্ততিদের। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বাংলাদেশে প্রবাসীদের বিনিয়োগ, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং মেধা আমদানির সম্ভাবনা। বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর পড়তে পরে এর এর ক্ষতিকর প্রভাব। তাই বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূণ প্রবাসীদের ভোটাধিকার বিষয়টি। প্রবাসীদের বাংলাদেশে সম্পত্তির পূর্ণাঙ্গ সমমর্যাদা মালিকানা নিশ্চিত করতে হবে নাগরিকত্ব আইনে। প্রবাসী এবং তাদের সন্তানদের সম নাগরিক অধিকার, স্বদেশে তাদের জানমাল, সম্পত্তি ও বিনিয়োগের নিরাপত্তা, জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগসহ সব নিশ্চিত করতে হবে ধরণের সাংবিধানিক অধিকার।

Posted ১:০৬ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.