শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

বন্দুক সহিংসতা বন্ধে প্রয়োজন কার্যকর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন

  |   বৃহস্পতিবার, ১৯ মে ২০২২

বন্দুক সহিংসতা বন্ধে প্রয়োজন কার্যকর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন

নিউইয়র্কের উত্তরাঞ্চলীয় সিটি বাফেলোতে গত ১৪ মে শনিবার শপিং সেন্টারে এক শ্বেতাঙ্গ তরুণের এলোপাতারি গুলিবর্ষণে ১০ ব্যক্তি নিহত এবং ৩ জন আহত হয়। । হতাহত ১৩ জনের মধ্যে ১১ জনই কৃষ্ণাঙ্গ। যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক সহিংসতা দীর্ঘদিনের সামাজিক সমস্যা। এর সমাধানে নানাভাবে চেষ্টা করছে দেশটির সরকার। কিন্তু কোনোভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না। দেশটির কোথাও না কোথাও প্রায় প্রতিদিনই বন্দুক হামলায় প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

বন্দুক সহিংসতায় প্রাণহানি কিছুতেই কমছে না। গুলিতে প্রাণহানি বৃদ্ধির পাশাপাশি দিন দিন বাড়ছে আগ্নেয়াস্ত্র উৎপাদন ও বিক্রি। করোনা মহামারিকালে দশ লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি আমেরিকানরা। এমন একটি দুঃসময়ে উল্টো বেড়েছে বন্দুক সহিংসতা ও বর্ণ-বৈষম্যমূলক আচরণ। বাফেলোর টপস সুপার মার্কেটে গুলিতে ১০ জন কৃষ্ণাঙ্গের নিহতের ঘটনায় রাজনৈতিক মহল সহ হোয়াইট হাউজ প্রশাসনের টনক নড়েছে। নূতন করে দাবি উঠেছে বন্দুক সহিংসতা বন্ধে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন সংস্কারের। শুধু চলতি বছরের ১৯ সপ্তাহেই গুলিতে প্রাণ গেছে ৭ হাজার মানুষের। এসময় বন্দুক সহিংসতার বড় ঘটনা ঘটেছে ২০১টি। প্রায় একযুগের এক পরিসংখ্যান দেখা যায় ২০১৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকের গুলিতে প্রতিবছর গড়ে প্রাণহানির সংখ্যা ছিলো ৩৬হাজার ৩৮৩জন। সে হিসেবে প্রতিদিন গড়ে মৃত্যু সংখ্যা ছিলো ১০০ জন। ২০২০ সালে এসে বন্দুকের গুলিতে রেকর্ড সংখ্যক সর্বাধিক ৪৫ হাজার ২২২ জন মানুষের মৃত্যু হয়। সিডিসি’র মৃত্যূ পরিসংখ্যানে ১৯৬৮ সালের পর বন্দুকের গুলিতে এতো মানুষের আর মৃত্যু হয়নি কখনো।


বছরটিতে গড়ে প্রতিদিন প্রাণহানি ঘটেছে ১২৪ জন মানুষের। এর আগের বছর এই সংখ্যা ছিলো ৩৯ হাজার ৭০৭ জন। ভয়ঙ্কর এ পরিসংখ্যান নিয়ে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত, উদ্বিগ্ন-উৎকন্ঠিত। শিশু থেকে সব বয়সী মানুষই মরছে বন্দুক সহিংসতায়। এ নিয়ে বিতর্ক সমালোচনা চলছে বিরামহীন। কখনো কখনো আন্দোলনও গড়ে উঠেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। রাজনৈতিক সদিচ্ছ্বার অভাবে বরাবরই চাপা পড়ে গেছে বিষয়টি। আগ্নেয়াস্ত্রের অবাধ লাইসেন্স এবং বহনের ক্ষেত্রে কঠোর আইন প্রণয়ন জরুরী হয়ে পড়েছে। দেশের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রাজনীতিকগণও বিষয়টি অনুধাবন করেন। কিন্তু ন্যাশনাল রাইফেল এসোসিয়েশনের বাঁধার মুখে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না। ন্যাশনাল রাইফেল এসোসিয়েশন বা এনআরএ অত্যন্ত শক্তিশালী একটি সংগঠন। তাদের প্রতি একশ্রেনীর রাজনীতিকদের রয়েছে জোর সমর্থন। এমনকি অনেক রাজনীতিক এই সংগঠনের সক্রিয় সদস্য ও কর্মকর্তা। তাদের সদিচ্ছার অভাবেই আইনটি দেখছে না আলোর মুখ। আইনিভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার সুযোগ অনেকটা অবাধ হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে এসব আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবি উঠলেও অস্ত্র উৎপাদক ও ব্যবসায়ীদের চাপে তাতে কোনো কাজ হয়নি। সিডিসির তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালে আগ্নেয়াস্ত্রের কারণে এক থেকে ১৯ বছর বয়সী শিশুর মৃত্যু আগের বছরের চেয়ে ৩৩.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। বিগত বছরগুলোতে তরুণ আমেরিকানদের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল গাড়ি দুর্ঘটনা। এরপরই ছিল বন্দুক হামলা ও গুলিজনিত মৃত্যু।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে বছরে মারা যায় ১.৪ শতাংশ মানুষ। যার সংখ্যা ৪৯৬ জন। অপরদিকে অনিচ্ছাকৃত যা অসাবধানতাবশত গুলিতে মারা যায় ৪৮৭ জন আমেরিকান। এই হার ১.৩ শতাংশ। এছাড়া অনিরূপিত মৃত্যুর সংখ্যা ২৯৫ জন। যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যামান দুর্বল বন্দুক আইন ও আগ্নেয়াস্ত্র সহজলভ্য হওয়ার কারণে প্রতিদিন প্রাণহানি ঘটছে বেঘুরে। বন্দুক সহিংসতায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটে ১০ স্টেটে। যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমেরিকানদের বন্দুকের গুলিতে মৃত্যুর সম্ভাবনা ২৫ শতাংশ বেশি। বন্দুকে গুলি সার্বক্ষণিক লোড করা থাকে এমন পরিবারে বড় হচ্ছে ৪৬ লাখ শিশু। ফলে বছরে মারা যাচ্ছে ১ হাজার ৫’শ শিশু। পুলিশের গুলিতে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গদের মৃত্যুহার পাঁচগুণ বেশি। বন্দুক সহিংসতার খাতে বার্ষিক ব্যয়ের পরিমাণ ২২৯ বিলিয়ন ডলার। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন কার্যকর করতে হলে কংগ্রেসকে পালন করতে হবে জোরালো ভূমিকা। এজন্য প্রয়োজনে চাপ সৃষ্টি করতে হবে তাদের উপর। বন্দুক সহিংসতার ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে জনমনে। বিশেষ করে আগ্নেয়াস্ত্র আইন এবং অস্ত্র বহনের দায়িত্বশীলতা সম্পর্কে সতর্ক করতে হবে সবাইকে। এ নিয়ে জনসমর্থন সৃষ্টি করতে হবে তৃণমূল পর্যায়ে। যে সকল পরিবারের সদস্য বন্দুক সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন এবং যারা আহত হয়েছেন তাদেরকে সামনে নিয়ে আসতে হবে। সাধারণ নির্বাচনের পূর্বে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন ইস্যুটি জোড়ালোভাবে তুলে ধরতে হবে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম পারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে। প্রতিদিন, প্রতিবছর এভাবে প্রাণহানি ঘটতে থাকলে মানুষ আরো অসহায় হয়ে পড়বে। তেমনি লোপ পাবে মানবিকতা। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিধানের বিষয়টি রাষ্ট্রকেই নিশ্চিত করতে হবে। দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন।


advertisement

Posted ৬:৫১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৯ মে ২০২২

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1392 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.