| বৃহস্পতিবার, ১৯ আগস্ট ২০২১
করোনা মহামারী শুরু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার দুই দফায় যথাক্রমে ‘প্যানডেমিক আনএমপ্লয়মেন্ট অ্যাসিষ্ট্যান্স’ (পিইউএ) ও ‘প্যানডেমিক এক্সটেনডেড আনএমপ্লয়মেন্ট অকমপেনসেশন’ (পিইইউসি) কর্মসূচির আওতায় কর্মহীন হয়ে পড়া আমেরিকান ও বৈধ অধিবাসীদের যে আর্থিক প্রনোদনা প্রদান করেছে, তা বিশেষ করে স্বল্প আয়ের লোকদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করেছে গত দশকের শেষদিকের অর্থনৈতিক মন্দার সময়ের চেয়ে বেশি।
ফেডারেল রিজার্ভ বোর্ডের সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা অনুযায়ী ২০২০ সালে ৫২ শতাংশ আমেরিকানের আয় ১০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল, আনএমপ্লয়মেন্ট বেনিফিট তাদের হ্রাসকৃত আয় পুষিয়ে দিয়েছে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে আয় বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। আর্থিক মন্দার সময় ২০০৯ সালে সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছিল তখন আনএমপ্লয়মেন্ট বেনিফিট গ্রহণকারীদের মধ্যে মাত্র ১৯ শতাংশ তাদের হ্রাসকৃত আয় পুষিয়ে নিতে পেরেছিল। করোনা ভ্ইারাস মহামারীর কারণে ফেডারেল ও স্টেট সরকার ভুক্তভোগীদের যে আর্থিখ সহায়তা প্রদান করছে তা আগামী মাসেই (সেপ্টেম্বর ২০২১) ৭৫ লাখ সুবিধাভোগীর ক্ষেত্রে বন্ধ হয়ে যাবে। শুধু সাপ্তাহিক ৩০০ ডলারের ফেডারেল আনএমপ্লয়মেন্ট বেনিফিটই নয়, তাদের ক্ষেত্রে সব ধরনের আনএমপ্লয়মেন্ট সহায়তা বন্ধ হয়ে যাবে এবং এই সুবিধাগুলো পুনর্বহাল করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।
২০২০ সালে অন্তত চার কোটি ২০ লাখ আমেরিকান আনএমপ্লয়মেন্ট সুবিধা লাভ করেছে, আইআরএস এর ট্যাক্স রেকর্ড উপাত্ত অনুযায়ী যার পরিমাণ ৪৯৩ বিলিয়ন ডলার; অথবা গত দশকের মহামন্দার সময়ে দেয়া অর্থনৈতিক প্রনোদনার চেয়ে তিন গুণেরও অধিক। ওই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ স্টেটে ২৬ সপ্তাহের ভাতার উপর চাকুরি হারানো কর্মীদের ৫৩ সপ্তাহের আনএমপ্লয়মেন্ট বেনিফিট প্রদান করা হয়েছিল। করোনা মহামারীর সময়ে আনএমপ্লয়মেন্ট প্রোগ্রামের আওতা আরো বেশি সম্প্রসারণ করা হয়েছে। আনএমপ্লয়মেন্ট বেনিফিট দেয়া শুরু হয়েছে ২০২০ সালের মার্চ মাসের শেষ দিক থেকে, যা এখনো বহাল রয়েছে এবং এবারের আনএমপ্লয়মেন্ট বেনিফিট লাভকারীদের মধ্যে নিয়মিত কর্মীরা ছাড়াও যারা সাধারণত আনএমপ্লয়মেন্ট বেনিফিট পাওয়ার যোগ্যতার মধ্যে পড়ে না, যেমন ইন্ডিপেন্ডেন্ট কন্ট্রাক্টর ও ফ্রিল্যান্সার। গত বছরের করোনা ভাইরাস বিস্তারের আগের সময়ের পর্যায়ে কর্মসংস্থান না হলে সেপ্টেম্বর মাসে যদি ৭৫ লাখ মানুষের আনএমপ্লয়মেন্ট বেনিফিট বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে অন্ততপক্ষে সাময়িক সংকটে পড়তে হবে।
সেজন্য একাধিক অধিকার সংগঠন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আর্থিক প্রনোদনা তা যে নামেই হোক না কেন, যারা তা পাওয়ার যোগ্য তাদের জন্য চালু করার পক্ষে বলছেন। সেঞ্চুরি ফাউন্ডেশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, করোনা ভাইরাসের ডেল্টা ভেরিয়েন্টের বিস্তারের কারণে শিথিল করা স্বাস্থ্যবিধি পুনরায় বহাল করা সত্ত্বেও ওয়াশিংটন ডিসিতে আইন প্রনেতারা আর্থিক সুবিধার মেয়াদ সম্প্রসারণের ব্যাপারে কোনো আগ্রহ প্রদর্শন করছেন না। মহামারীর কারণে বেকার হয়ে পড়া লোকজনের সংকট এখনো কাটেনি। তিনি যে ৭৫ লাখ লোকের আসন্ন সংকটের কথা উল্লেখ করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্তটি কিছুটা দ্রুত ও তাৎক্ষণিক নেয়া হচ্ছে বলে অভিমত প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের মতে, এর ফলে কর্মচ্যুত শ্রমিকরা উপকৃত হবে না বরং ইতোমধ্যে ভোগ্যপন্যের মূল্যে যে স্ফীতি ঘটেছে, তাতে কর্মহীনদের দুর্ভোগ বাড়বে এবং জিডিপি বৃদ্ধির গতিও মন্থর হয়ে পড়বে। অধিকার প্রবক্তারা বলছেন যে বেকারত্ব হার মহামারী পূর্ব পর্যায়ে ফিরে না আসা পর্যন্ত কর্মহীনদের জন্য আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আবশ্যকতা রয়েছে।
Posted ৪:৫০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৯ আগস্ট ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh