| বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
নির্বাচন কমিশন জোরেশোরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। চলতি সপ্তাহের যেকোনো দিন নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হবে।
যেহেতু একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে, সেজন্য ভোট গ্রহণের সময় চিরাচরিত সময়ের চেয়ে এক ঘন্টা বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে একটানা ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।অন্তর্বর্তী সরকার ইতোপূর্বে ঘোষণা করেছিল যে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। সেই আলোকেই কমিশন প্রস্তুতি সম্পন্ন করে তফসিল ঘোষণার সময় নির্ধারণ করেছে। কমিশন এরই মধ্যে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করেছে, অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন সম্পন্ন করেছে।
এছাড়া নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলগুলোর নিবন্ধনের কাজও সম্পন্ন করেছে। বর্তমানে নির্বাচন-কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও প্রবাসীদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেয়ার জন্য নিবন্ধনের কাজ করছে। সাধারণত জাতীয় নির্বাচনে ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসক এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। এবার ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের এই দায়িত্ব প্রদানের প্রস্তাব করে বিএনপি। এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে ইসি, যাদের মধ্যে রয়েছেন সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাগণ। কোনো বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার হিসেবে রাখা হয়নি।
বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের রিজার্ভ হিসেবে রাখা হবে। তবে প্রয়োজন না হলে তাদের নেয়া হবে না। কমিশন তাদের নিজস্ব বিবেচনায় জাতির প্রতি কমিটমেন্ট এবং সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে তাকে অবহিত করেছে। নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠানে সরকারের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছে কমিশন। প্রধান উপদেষ্টা কমিশনকে প্রয়োজনীয় সব রকম সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে বলেন যে, জাতিকে একট সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতিকে আমরা ইতিহাসের সেরা নির্বাচন উপহার দেয়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে চলেছি। প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশ্যে বারবার বলেছেন যে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন হবে এবং কেউ নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না।
নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং ঈদের উৎসবের মতো। নানা রকমের দোলাচল, বাধা, প্রতিবন্ধকতা, কাজের ভিন্নতা ও দুরূহতা অতিক্রম করে নির্বাচন কমিশন শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে, সেজন্য তারা অবশ্যই জাতির ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে গণভোট আয়োজন নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এখন সকল চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা সম্ভব হয়েছে এর চেয়ে সন্তোষজনক আর কিছু হতে পারে না। কমিশন দ্রুততম সময়ে একটি অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। তবে নির্বাচন কমিশনের জন্য আসল চ্যালেঞ্জ সামনে অপেক্ষমান। নির্বাচনের পথে সকল বাধা-বিপত্তির আশঙ্কা দূর করে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।
নির্বাচন যদি জনআকাক্সক্ষ অনুযায়ী সম্পন্ন করা সম্ভব হয়, তবে ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান লাভ করবে নির্বাচন কমিশন। জাতির বৃহত্তর স্বার্থে কমিশনকে যেকোনো মূল্যে সফল হতেই হবে। কমিশনকে সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা করতে হবে সরকারকে। নির্বাচন বানচাল করা, গণতন্ত্রে উত্তরণ ব্যর্থ করার জন্য দেশি-বিদেশি চক্রান্ত সক্রিয়। তারা সন্ত্রাস ও আইনশৃংখলার অবনতি ঘটিয়ে নির্বাচনকে ভন্ডুল ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। সে ক্ষেত্রে আইনশৃংখলা সুরক্ষায় জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করতে হবে।
Posted ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh