| বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট ২০২০
পরিবর্তনশীল বিশ্ব পরিস্থিতির আলোকে যুক্তরাষ্ট্রের এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত জনজীবন ও অর্থনীতিকে সচল কঈতে যোগ্য নেতৃত্ব বাছাই করা হয়ে উঠেছে অনিবার্য। বিগত সাড়ে তিন বছাে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শাসনে দেশের অভ্যন্তরে সৃষ্টি হয়েছে এক ধরণের অস্থিরতা। ফাটল ধরেছে জাতীয় ঐক্যে। বর্ণবাধ বিরোধী আন্দোলন এখনও চলমান দেশজুড়ে। করোনার কারণে চাকুরি হারিয়েছে তিন কোটি মানুষ। প্রাণহানি ঘটেছে প্রায় দু’লাখ মানুষের। অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় জাতীয় জীবনে এখন ভয়াবহ দু;সময় বিরাজমান। মাঠের রাজনীতি হয়ে পড়েছে ঘরবন্দী। ট্রাম্পের অভিবাসন বিরোধী আইন ও সংবাদ মাধ্যমের প্রতি বিরূপ আচরণ যুক্তরাষ্ট্রের মৌলিক নীতি বিরুদ্ধ। চলমান এ ক্রান্তিকাল কাটিয়ে উঠে ঘুরে দাঁড়াতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন সুযোগ্য নেতৃত্ব। যিনি হবেন গোটা জাতির ঐক্যের প্রতীক। সকল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠাই হবে যার অঙ্গীকার। যার নেতৃত্ব মহান এ রাষ্ট্রে সবার জন্য সমানভাবে নিশ্চিত হবে আইনের শাসন ও সামাজিক ন্যায় বিচার। যুক্তরাষ্ট্রের মূল চালিকা শক্তি আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগ পরিচালিত হবে চেক এন্ড ব্যালেন্সের মাধ্যমে। এজন্য আগামী ৩ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্ব বহণ করছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় প্রার্থী হয়েছেন দ্বিতীয় মেয়াদো জন্য। তার রানিংমেট বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। অপরদিকে ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কনভেনশনে মনোনীত হয়েছেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি রানিং মেট হিসেবে নিয়েছেন কমলা হ্যারিসকে।
ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন নিজ দলীয় সাবেক রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বি ক্যালিফোর্নিয়ার সিনেটর কমলা হ্যারিসকে তার রানিং মেট করার ঘোষণা দেন। জো বাইডেন এবং কমলা হ্যারিস দু’জনই সম্পূর্ণ ভিন্ন মেরুর বাসিন্দা। এছাড়া প্রজন্মগত ব্যবধানও দু’জনের মধ্যে স্পষ্ট। দেলওয়ার স্টেটের উইলমিংটন সিটিতে গত ১২ আগস্ট বুধবার বিকেলে কমলা হ্যারিস আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু ট্রাম্পকে হাটানোর অঙ্গীকার করেন। ডেমোক্র্যাট দল থেকে দ্বিতীয় একজন নারী যিনি কিনা ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। এর আগে ১৯৮৪সালের নির্বাচনে সর্বপ্রথম ও যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একজন নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তৎকালীন ডেমোক্র্যোট প্রার্থী ওয়াল্টার মেন্ডেলের রানিংমেট হয়েছিলেন নিউইয়র্কের কংগ্রেসওম্যান গার্লডাইন ফেরারা। কমলা হ্যারিস হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে মহিলা প্রার্থীদের মাঝে তৃতীয় এবং ডেমোক্র্যাট দল থেকে দ্বিতীয় কোন মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। ২০১৬ সালে প্রথম তিনি ক্যালিফোর্নিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর নির্বাচিত হন। ইতোপূর্বে তিনি সানফ্রান্সিসকোর ডিস্ট্রিক্ট এটর্নি, সান্ফ্রান্সিকো সিটি এটর্নির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ সালে কমলা হ্যারিস ক্যালিফোর্নিয়ার এটর্নি জেনারেল নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে তিনি একই পদে পুন:নির্বাচিত হন। কমলা হ্যারিস বর্তমানে সিনেট জুডিশিয়ারী কমিটির একজন প্রভাবশালী সদস। আমেরিকার প্রধান দুই দলের একটিতে কৃষ্ণাঙ্গ ও ভারতীয় মিশ্রণের কোনো নারীর ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন পাওয়া একটা ইতিহাস। কমলা হ্যারিস সিনেটে প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিসেবে ও দ্বিতীয় কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিতর্কে ঝানু কমলা হ্যারিসকে ডেমোক্রেটিক পার্টির উদারনৈতিক পক্ষের সঙ্গে বনেদিদের মধ্যে একটা যোগসূত্র হিসেবে দেখা হচ্ছে। সাম্প্রতিক নাগরিক আন্দোলনের সময়ে কমলা হ্যারিসকে অগ্রভাগে দেখা গেছে। এসব বিবেচনায় কমলা হ্যারিসই জো বাইডেনের রানিংমেট হিসেবে আলোচনার শীর্ষে ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে এর আগে কখনো দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের কোনোটি থেকে অশ্বেতাঙ্গ কোনো নারীকে প্রেসিডেন্ট বা ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে গ্রহণ করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনো নারী জয়ী হননি। এ বছর হোয়াইট হাউসে যাওয়ার লড়াইয়ে কমলার এটি দ্বিতীয় প্রচেষ্টা। ৫৫ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডেমোক্রেটিক পার্টির অন্যতম একটি জনপ্রিয় মুখ হিসেবে পরিচিত কমলা। ৭ অক্টোবর উটাহর সল্ট লেক সিটিতে বিতর্কে মাইক পেন্সের মুখোমুখি হবেন কমলা হ্যারিস।
Posted ৭:৫৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh