| শনিবার, ০৭ আগস্ট ২০২১
করোনা ভাইরাস সংক্রমনে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুর দেশ যুক্তরাষ্ট্র। সর্বশেষ পরিসংখ্যানে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩ কোটি ৬০লাখ। আর প্রাণ হারিয়েছে প্রায় সাড়ে ৬লাখ মানুষ। গত বছরের মার্চে শুরু হওয়া ঘাতক এ ব্যাধির তিন দফা ঢেউয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন। ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হলে চলতি বছরের শুরু থেকে ঘুরে দাঁড়ায় সবকিছু। নূতন স্বাভাবিক প্রাণের সঞ্চার ঘটে জনজীবনে। এরই মাঝে আবার নূতন করে সংক্রমন বৃদ্ধি পেয়েছে করোনা ভাইরাসের রূপান্তরিত ডেল্টা ভেরিয়েন্টের। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে ডেল্টা ধরণের সংক্রমন ঘটছে ব্যাপকভাবে।
অ্যারিজোনা, ওয়াইমিং, ফেøারিডা ও লুজিয়ানা সহ অন্যান্য রাজ্যের সংক্রমনের হারকে উচ্চমাত্রার বলে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। নিউইয়র্ক স্টেট ও সিটিতেও প্রতিদিন বাড়ছে ডেল্টার সংক্রমন। নূতন করে করোনা সংক্রমনের ঘটনায় জনজীবনে শুরু হয়েছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা। সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন- সিডিসি পরামর্শ দিয়েছে আবার মাস্কের ব্যবহার শুরু করতে। বিশেষ করে যেসব এলাকায় সংক্রমন অধিক। ভ্যাকসিন নিয়েছেন এমন ব্যক্তিদেরকেও মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। কর্মস্থল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বলা হয়েছে মাস্ক ব্যবহার করতে। পরিবর্তিত এ পরিস্থিতিতে দেশ জুড়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে স্বাস্থ্য সতর্কতা নির্দেশনায়। গণহারে ভ্যাকসিন প্রদান শুরু হলে গত মে মাসে সংক্রমনের হার নেমে যায় নিম্নপর্যায়ে। সবকিছু বিবেচনায় শিথিল করা হয় মাস্ক পরার বাধ্যবাধ্যকতা। কিন্তু করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন ভ্যাকসিন গ্রহণকারীরাও। যদিও তাদের মৃত্যুহার খুবই নগণ্য।
তারপরও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমন খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। এ কারণেই গত সপ্তাহে সিডিসি ও হোয়াইট হাউস যৌথভাবে সর্তকতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে সতর্কতা জারি করেছে। করোনা সংক্রমনের কারণে মানুষ অনেকটাই হাঁপিয়ে উঠেছে। শারিরীক সমস্যার পাশাপাশি মানসিক সমস্যার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। প্রত্যাশা ছিলো ৭০ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণ করলে হার্ড ইম্যুনিটি গড়ে উঠবে। গত সপ্তাহে ৭০ শতাংশ মানুষের ভ্যাকসিন গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও থামেনি করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমন। নূতন এ সংক্রমন রোধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সরকারি সতর্কতা ও ব্যবস্থার পাশাপাশি এগিয়ে আসতে হবে জনগণকে। মেনে চলতে হবে সবধরণের স্বাস্থ্য সতর্কতা। যে সকল রাজ্যের মানুষের মাঝে ভ্যাকসিন গ্রহণে অনীহা ছিলো সেসব রাজ্যে নূতন সংক্রমনের হার অধিক। জনস্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, এখন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া লোকজনের অধিকাংশই ৩০ থেকে ৬০ বছর বয়সী। তাঁদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ টিকা নেননি।ফলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সরকারও ভ্যাকসিন গ্রহণকারীদের জন্য ব্যবস্থা করেছে বিশেষ প্রনোদনার। মোট কথা করোনায় সংক্রমন রোধে ভ্যাকসিনের কোন বিকল্প নেই।
নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষে যে কোনো বিভাগে কর্মরত কোনো ব্যক্তি যদি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন গ্রহণ না করেন তাহলে তাকে প্রতি সপ্তাহে একবার করোনা টেস্ট করতে হবে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে এ নির্দেশ কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে। সিটির পাবলিক স্কুলের সকল শিক্ষক এবং এনওয়াইপিডির সকল পুলিশ সদস্য এই নির্দেশের আওতায় গন্য হবেন। ভ্যাকসিন না নেয়া কর্মীরা যদি মাস্ক পরিধান না করতে চান তাহলে তারা কাজে যোগ দিতে পারবেন না এবং তাদেরকে বেতনও দেয়া হবে না। দেশব্যাপী ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের মধ্যে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন বাধ্যতামূলক করার তীব্র চাপের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য এবং এর বৃহত্তম শহর উভয়ই ঘোষণা করেছে যে, তাদের লাখ লাখ সরকারি কর্মীকে ভ্যাকসিন গ্রহণ বা সাপ্তাহিক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে।
একই সাথে, ভেটেরান্স বিষয়ক অধিদফতর এ ধরনের টিকা দেওয়ার প্রথম ফেডারেল এজেন্সি যারা ঘোষণা দিয়েছে যে, তাদের ১ লাখ ১৫ হাজার ফ্রন্টলাইনার স্বাস্থ্যসেবা কর্মীকে অবশ্যই আগামী দুই মাসের মধ্যে একটি করোনভাইরাস টিকা গ্রহণ করতে হবে বা সম্ভাব্য চাকরিচ্যুতির মুখোমুখি হতে হবে। চলমান পরিস্থিতিতে করোনার নতুন সংক্রমণ ঠেকাতে সবাইকে সিডিসি ঘোষিত স্বাস্থ্য সতর্কতা মেনে চলতে হবে।
Posted ১১:০২ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৭ আগস্ট ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh