| বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২
করোনা মহামারি ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি ও রাজনীতি টালমাটাল। বাংলাদেশও এই ভয়াবহ সংকট অতিক্রম করছে। এমন একটি সময় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান করতে ১৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক পৌছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগদান করে এখন ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন তিনি। শুধু বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদী প্রধানমন্ত্রীই নন, ইতোমধ্যেই তিনি দীর্ঘমেয়াদে নারী শাসক হিসেবে সৃষ্টি করেছেন বিশ্ব রেকর্ড। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিশ্বব্যাপী নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া এখনো বিদ্যমান। তারপরও বাংলাদেশকে একটি উন্নতশীল রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করছে হাসিনা সরকার। দেশে এখন উন্নয়নের জোয়ার বইছে এমন দাবি তার সরকার এবং দলের।
অপরদিকে দৃশ্যমান এ উন্নয়নকে ম্লান করে দিচ্ছে অপ্রতিমান গণতন্ত্র এবং দুর্নীতি-অনিয়ম। বার বার তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে দেশে শুদ্ধি অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু দেশজুড়ে চলমান এ অভিযানে যাদের নাম উঠে আসছে তারা সবাই তার নিজ দল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের মধ্যদিয়ে চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর জাতিসংঘে এটি তার তৃতীয়বার অংশগ্রহণ। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত মোট ১৬বার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগদান করছেন প্রধানমন্ত্রী। উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশের কোন সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান এতবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগাদান করেননি। সেদিক থেকে জাতিসংঘে যোগদানে বিশ্বরেকর্ড করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ১৩৬তম সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হয় ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। সেই থেকে জাতিসংঘে বাংলাদেশের বিরামহীন পথ চলা শুরু। সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশ পূর্ণ করতে যাচ্ছে ৪৮ বছর।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের চলতি অধিবেশনে নিয়মিত ভাষণদান সহ বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক ইস্যুভিত্তিক বৈঠকে যোগদান করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বৈশ্বিক আর্থিক মন্দা, জ্বালানি সংকট সহ রোহিঙ্গা শরনার্থী সমস্যা নিয়ে তিনি বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করছেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবর্ধনায় প্রতিবছর ভাষণ দেন। তার সম্মানে প্রদত্ত সংবর্ধনায় দেশ ও প্রবাসের নানাবিধ বিষয় নিয়ে কথা বললেও প্রবাসী বাংলাদেশীদের সমস্যা বরাবরই থেকে যাচ্ছে অমীমাংসিত।
দেশের অর্থনীতির চাকা যাদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রায় সচল, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত সেই সকল প্রবাসী বাংলাদেশীরা নিজ দেশে এখনো অবহেলিত-উপেক্ষিত। স্বদেশ-স্বজন ছেড়ে নানা প্রতিকূলতার মাঝে কঠোর পরিশ্রম করে যারা দেশের উন্নয়নে অবদান রাখছেন দুঃখজনক হলেও সত্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশে প্রতারণা এবং হয়রানিরও শিকার হচ্ছেন তারা। প্রতিটি সরকারের সময়ই কমবেশী এমনটি ঘটে আসছে। পাশাপাশি নিজ দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বাক, ব্যক্তি ও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সুশাসন নিশ্চিত করার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। দেশে আইনের শাসন, সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করে সাধারণ মানুষের জান মালের নিরাপত্তা বিধানের দায়-সরকারের। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা র্যাব ও কতিপয় কর্মকর্তার উপর যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত নিষেধাজ্ঞায় প্রবাসীরা বিব্রত। আমরা মনে করি দেশ ও জাতির বৃহত্তম স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী এসব সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট হবেন। নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগতম।
Posted ১২:০৬ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh