প্রবাসী বাংলাদেশিদের আমব্রেলা সংগঠন খ্যাত বাংলাদেশ সোসাইটির ইতিহাসে এক কলংকজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি হয়েছে। গত ২ জুলাই রোববার কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় কিলকুষি, চেয়ার ও পানির বোতল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। সভাপতি আব্দুর রব মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী প্রাণপণ চেষ্টা করেও সংঘর্ষে লিপ্ত কর্মকর্তাদের নিবৃত করতে পারেন নি। প্রথমে কথাকাটাকাটি, পরে কিলঘুষির মধ্য দিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে সোসাইটির সিনিয়র সহসভাপতি মহিউদ্দীন দেওয়ান ও কোষাধ্যক্ষ নওশেদ হোসেনের মধ্যে। এক পর্যায়ে মহিউদ্দীন দেওয়ান চেয়ার নিক্ষেপ করেন । এতে আহত হন নওশেদ হোসেন। তার সর্মথকরা চড়াও হন মহিউদ্দীনের ওপর। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে চিয়ার এসে সহসভাপতি ফারুক চৌধুরীর গায়েও লাগে। ক্রীড়া সম্পাদক মইনুল উদ্দীন মাহবুব ক্ষুব্ধ মহিউদ্দীনকে জড়িয়ে ধরেও থামাতে পারছিলেন না।

তবে মহিউদ্দীনের একজন সর্মথক বলেন, তাকে জড়িয়ে ধরার সুযোগে নওশেদ মহিউদ্দীনকে আঘাত করার সুযোগ পায়। বোতল নিক্ষেপে আহত হন সহ সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। ভীত হয়ে ফারহানা চৌধুরী অন্য রুমে গিয়ে আশ্রয় নেন। কর্মকর্তারা একে অপরের বিরুদ্ধে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একজন অপরজনকে বলেন, সোসাইটির অফিসে বাইরে আয়, খেলা হবে। আঘাতপ্রাপ্ত নওশেদের আঙ্গুল ফুলে কালচে বর্ণ ধারণ করে। তিনি ৯১১ কল করেন। ঘটনাটি পুলিশকে অবহিত করেছেন। এম্বুলেন্সের ভেতরে তার আঙ্গুলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে সোসাইটির সভাপতি উভয় পক্ষকে মিলিয়ে দেন। মহিউদ্দীন দেওয়ান সভা ত্যাগ করে চলে যান। কার্যকরি কমিটির সভা শেষে নবগঠিত ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্যদের পরিচয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

সোসাইটিতে সংঘাতের ব্যাপারে সভাপতি আব্দুর রব মিয়ার বলেন, সভায় অপ্রীতিকর একটি ঘটনা ঘটেছে। এর নিন্দা জানানোর ভাষা আমার নেই। তবে আমি ও সাধারণ সম্পাদক আপ্রাণ চেষ্টা করেছি পরিবেশ শান্ত রাখতে। শেষে মহিউদ্দীন দেওয়ান ও নওশেদকে মিলিয়ে দিয়েছি। বৈঠক শেষ হবার পর আমি , রুহুল আমিন সিদ্দিকী ও ফারুক চৌধুরী চলে আসি। নওশেদ তার আহত হবার বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেছেন বলে জানতে পেরেছি।

অন্য একটি সুত্র জানায়, ট্রাষ্টি বোর্ডের ১২ জনের মধ্যে ১১ জন ইতোমধ্যেই নির্বাচিত হয়েছেন। অবশিষ্ট একজন ট্রাস্টির নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই এই সংঘাতের সুত্রপাত।

নবনির্বাচিত ট্রাষ্টি বোর্ডের সাথে মতবিনিময়

যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী বাংলাদেশীদের আমব্রেলা সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটির নবনির্বাচিত ট্রাষ্টি বোর্ডের সাথে কার্যকরী পরিষদের পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। সোসাইটির কার্যালয়ে গত রোববার ২ জুলাই রোববার বিকেলেয় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংগঠনের সভাপতি মোঃ আব্দুর রব মিয়ার নেতৃত্বে কার্যকরী পরিষদের সদস্যরা নবনির্বাচিত বোর্ড অব ট্রাষ্টির সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় কার্যকরী পরিষদ সদস্যরা তাদের দেয়া বক্তব্যে সোসাইটিকে আরো গতিশীল এবং কল্যাণমূলক কাজে নিয়োজিত করতে তাদের পরামর্শ এবং সহযোগিতা কামনা করেন।

নবনির্বাচিত ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোঃ আক্তার হোসেন, মফিজুর রহমান, আজিমুর রহমান বোরহান, মোঃ এমদাদুল হক কামাল, আব্দুল হাসিম হাসনু, মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, মোঃ শাহজাহান সিরাজী, খোকন মোশারফ, মোঃ জহিরুল ইসলাম মোল্লা, মোঃ আতরাউল আলম। বোর্ড অব ট্রাষ্টির সদস্যরা তাদের নির্বাচিত করে বাংলাদেশ সোসাইটির কল্যাণে তাদের সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য কার্যকরী পরিষদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তারা বলেন সোসাইটিকে আরো গণমুখী এবং কল্যাণকর সংগঠনের পরিণত করতে যেকোনো ধরনের সহযোগিতার জন্য তারা সবসময় প্রস্তুত আছেন।

এদিকে একদিন সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের নিয়মিত মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয় দুপুর ১২:৩০। সভাপতি মোঃ আব্দুর রব মিয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ রুহুল আমিন সিদ্দিকীর পরিচালনায় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি-মোঃ মহিউদ্দিন দেওয়ান, সহ-সভাপতি- ফারুক চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক- আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ- মোঃ নওশেদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক- আবুল কালাম ভূঁইয়া, জনসংযোগ ও প্রচার সম্পাদক- রিজু মোহাম্মদ, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মোঃ টিপু খান, সাহিত্য সম্পাদক- ফয়সল আহমদ, ক্রীড়া ও আপ্যায়ন সম্পাদক- মাইনুল উদ্দিন মাহবুব, স্কুল ও শিক্ষা সম্পাদক- প্রদীপ ভট্টাচার্য, কার্যকরী সদস্য- ফারহানা চৌধুরী, মোঃ আখতার বাবুল, আবুল বাশার ভূঁইয়া, মোঃ সাদী মিন্টু ও শাহ মিজানুর রহমান।