| বৃহস্পতিবার, ১২ মে ২০২২
প্রায় দুই বছর নিউইয়র্ক সিটিতে বাড়ি মালিকদের দ্বারা ভাড়াটে উচ্ছেদের খবর শোনা যায়নি। করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে সরকার উচ্ছেদের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছিল এবং দফায় দফায় স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি করার পর সেই স্থগিতাদেশ বা মরাটরিয়ামের মেয়াদ গত জানুয়ারিতে শেষ হয়েছে। তৎপর হয়ে উঠেছে বাড়ি মালিক, তাদের অ্যাটর্নিগণ ও হাউজিং আদালতগুলো। নিউইয়র্কের হাউজিং আদালতগুলো ইতোমধ্যে পাঁচ শতাধিক মামলা নিস্পত্তি করে উচ্ছেদ আদেশ জারি করেছে বলে নিউইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। নিউইয়র্ক সিটিতে প্রতিবছর গড়ে দুই লাখ হাউজিং মামলা হয়, যা নিস্পত্তির জন্য রয়েছেন মাত্র ৫০ জন বিচারক। করোনাজনিত পরিস্থিতিতে দুই বছর যাবত দায়ের না করা মামলার সংখ্যা যে আরও বেশি হবে, তা সহজেই অনুমেয়। অতএব আদালতগুলো সাধ্যমতো চেষ্টা করেও দ্রুত মামলা নিস্পত্তি শেষ করতে পারবে না এটাই স্বাভাবিক।
যেসব মামলা ইতোমধ্যে নিস্পত্তি হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট ভাড়াটেদের ওপর উচ্ছেদ আদেশ জারি করা হয়েছে, তাদের উচ্ছেদ প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি। কারণ কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ও বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে যে উচ্ছেদকৃতদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশই তাৎক্ষণিকভাবে নতুন জায়গায় বাড়িভাড়া নিতে পারবে না এবং সেটির পক্ষে উচ্ছেদ হওয়া এত সংখ্যক ভাড়াটেকে সাময়িক আবাসের সংস্থান করে দেওয়্ওা সম্ভব হবে না। এ পরিস্থিতি নিয়ে সিটি সরকারের আরও গভীরভাবে বিবেচনা করা প্রয়োজন। হাউজিং আদালতগুলোর বিচারের চাকা হয়তো মন্থরভাবে ঘুরছে, কিন্তু কাজ শুরু হয়েছে এবং ধারণা করা যায় যে শিগগিরই আরও গতি লাভ করবে। সিটির হাউজিং আদালতগুলো দেশের অন্যান্য এলাকার হাউজিং কোর্টগুলোর চেয়ে অধিক পরিমাণ মামলা নিস্পত্তি করে বলে তাদেরকে বিবেচনাধীন মামলা দ্রুত নিস্পত্তি করতে হয়।
তবে করোনা মহামারীতে দৃশ্যপট বদলে গিয়েছিল। নিউইয়র্ক স্টেট উচ্ছেদের ওপর দফায় দফায় মরাটরিয়াম এর মেয়াদ বৃদ্ধি করেছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত গত মধ্য জানুয়ারিতে মরাটরিয়াম সমাপ্ত হয় এবং ভাড়াটেদের উচ্ছেদ করা শুরু হয়। গত ফেব্রুয়ারি থেকে ৫০০’র বেশি ভাড়াটে উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে সিটির পরিসংখ্যৗানে দেখা যায়, পূর্ববর্তী ২০ মাসেও হাউজিং কোর্টগুলো এত অধিক উচ্ছেদ আদেশ জারি করেনি। সামনের দিনগুলো উচ্ছেদ আদেশ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে নিউইয়র্ক টাইমস আভাস দিয়েছে। বিপন্ন ভাড়াটেদের পক্ষে বেশকিছু অলাভজনক সংস্থা আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য এগিয়ে এসেছে এবং ভাড়াটেদের উচ্ছেদ ঠেকানোর জন্য আদালতে প্রয়োজনীয় দলিলপত্র প্রস্তুত করার কাজে তারা কর্মী সংকটে ভুগছে। লিগ্যাল সার্ভিসেস এনওয়াইসি আইনজীবীদের শূণ্যপদ পূরণ করতে হিমশিম খাচ্ছে।
প্রতিযোগিতামূলক চাকুরির বাজারে বহু আইনজীবী অধিক বেতনে অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকুরি নেওয়ার ফলে এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এই সংস্থার এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর রোন জে রাসমুসেন বলেছেন আমরা হন্যে হয়ে আইনে গ্রাজুয়েট করা লোককে খুঁজছি। লিগ্যাল এইড সোসাইটি নামে আরেকটি আইনি সহায়তা সংস্থাও একই ধরনের হতাশা ব্যক্ত করেছে। এ পরিস্থিতিতে হাউজিং কোর্টগুলোতে মামলা জট বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদি তা হয়ও তা হবে সাময়িক। কারণ বাড়ি মালিকদের পক্ষ থেকে ভাড়াটে উচ্ছেদের ব্যাপারে প্রশাসনের ওপর প্রচণ্ড চাপ রয়েছে।
Posted ১০:১০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১২ মে ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh