শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

করোনা মহামারিতে জীবন রক্ষাকারী ভ্যাকসিন

সম্পাদকীয়   |   বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২০

করোনা মহামারিতে জীবন রক্ষাকারী ভ্যাকসিন

শতাব্দীকালের সবচেয়ে ভয়াবহ মরণব্যাধি করোনা ভাইরাসে ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২লাখ ৫৫ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। গত ১৭ নভেম্বর একদিনেই প্রাণহানি ঘটেছে ১হাজার ৭০০ মানুষের। আর এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১ কোটি ২০লাখ মানুষ। অপরদিকে বিশ্বের প্রায় ১৩লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৫কোটির উপরে। বিশ্বব্যাপী এখন চলছে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ। এমন একটি কঠিন সময় জীবন রক্ষাকারী ভ্যাকসিন আবিষ্কার হওয়ায় আশাবাদী হয়ে উঠেছে মানুষ। শুধু যুক্তরাষ্ট্র ক্রমান্বয়ে বিশ্বের সকল মানুষই ভ্যাকসিনের সুবিধা পাবে। যুক্তরাষ্ট্রে মানবদেহে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হবে আগামী ডিসেম্বরেই। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক প্রখ্যাত ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার এবং মর্ডানা করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে। ফাইজার গত ৯ নভেম্বর প্রথম ঘোষণা দেয় তাদের তৈরী ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সম্পর্কে। এর এক সপ্তাহ পর গত ১৬ নভেম্বর ফার্মাসিউটিক্যাল মর্ডানা জানান দেয় তাদের আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনের কথা। মর্ডানার তৈরী ভ্যাকসিন ৯৪.৫ শতাংশ কার্যকর বলে দাবি করে প্রতিষ্ঠানটি। ফাইজারের তৈরী করোনা ভাইরাসভ্যাকসিন ৯০ শতাংশ কার্যকর বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়। কিন্তু গত ১৭ নভেম্বর পরিবর্তিত এক ঘোষণায় বলা হয় এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ৯৫ শতাংশ। ফলে উভয় ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ৯৫ শতাংশ হওয়ায় জনমনে আশার সঞ্চার করেছে। ফাইজার কোম্পানী তাদের প্রস্তুতকৃত ভ্যাকসিন দু’চার দিনের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিষ্ট্রেশন-এফডিএ’র অনুমোদনের জন্য আবেদন করবে। এফডিএ জরুরী ভিত্তিতে অনুমোদন দিল আগামী মাসেই মানবদেহে প্রয়োগ শুরু করা হবে ফাইজারর তৈরী ভ্যাকসিন।

শীতের প্রকোপ শুরু না হতেই যুক্তরাষ্ট্রে নূতন করে বাড়ছে করোনা ভাইরাস সংক্রমন। ঘাতক এ ব্যাধির প্রথম ধাক্কা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি মানুষ। বিপর্যস্ত দেশের অর্থনীতি ও জনজীবনে আসেনি স্বাভাবিকতা। নূতন সংক্রমন ইতোমধ্যেই ধারণ করেছে ভয়াবহ আকার। প্রতিদিন ৮০হাজার ছাড়িয়ে গেছে গড় সংক্রমন। এমতাবস্থায় উদ্বেগ-উৎকন্ঠা ও আতঙ্কে দিন কাটছে আমেরিকানদের। বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস বিশ্বমানবতার জন্য এক অভিশাপ। চীনের উহান শহরে গত নভেম্বর মাসে উৎপত্তি কোভিড-১৯ এর। চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে বিশ্বব্যাপী বিরামহীন যুদ্ধ চলছে অশরীরি এই মরণব্যাধির বিরুদ্ধে। ভয়াবহ এ ঘাতক ব্যাধির হাত থেকে রেহাই পায়নি কোন ধর্ম-বর্ণের মানুষ। রক্ষা পায়নি মহা শক্তিধর ব্যক্তি বিশেষ ও রাষ্ট্র। করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমনের ঢেউ বিশ্বের প্রায় সবগুলো দেশেই আছড়ে পড়ে। সবচেয়ে বেশী মানুষ আক্রান্ত এবং মৃত্যুবরণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অর্থ-বিত্ত, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও আধুনিক চিকিৎসা সেবার সূতিকাগার বলে খ্যাত এদেশটি এখনও পাড় করছে অস্থির সময়। গত মার্চে কোভিড-১৯ এর সংক্রমন শুরু হওয়ার পর এপর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস সংক্রমনে মৃত্যু ঘটেছে সবচেয়ে বেশী মানুষের। মৃত্যুর প্রকৃত পরিসংখ্যান এর চেয়েও অধিক বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। আর দেশটিতে সবচেয়ে বেশী মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে নিউইয়র্ক নগরীতে। এখানে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর এ মিছিলে রয়েছে প্রায় তিনশত বাংলাদেশী। নজিরবিহীন এ মহামারীতে দেশটির অর্থনীতিতে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ মন্দা। এখনো বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছে তিন কোটি মানুষ। দীর্ঘ লক ডাউনের পর বিভিন্ন রাজ্যে চলছে নূতন স্বাভাবিকতায় ফিরে যাওয়ার প্রচেষ্টা। সংক্রমণ কিছুটা স্তিমিত হওয়ায় এমন উদ্যোগ আয়োজনে মানুষ যখন কিছুটা আশাবাদী হয়ে উঠেছে ঠিক তখনি করোনা ভাইরাস সংক্রমনের দ্বিতীয় ঢেউ আসছে। নূতন করে শুরু হচ্ছে সংক্রমন। আর এ সংক্রমন প্রথম ঢেউয়ের চেয়েও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে আভাস ইঙ্গিত দিচ্ছেন সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞগণ। দশ মাস আগে যখন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা হানা দিয়েছিল, তখন কেউ হয়ত ভাবতেই পারেনি কোভিড-১৯ এতটা ভয়ঙ্করভাবে দেশটিকে আক্রান্ত করবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ ও মৃত্যুর দ্বিতীয় পর্যায়ের আশঙ্কা বহুদিন থেকেই করা হচ্ছে। এখন তারা অনেকটা নিশ্চিতভাবেই বলছেন যে, এটি সম্ভবত আরো বিপর্যয়কর হবে। ভয়াবহ রূপ নেবে কয়েক সপ্তাহ পর। যখন শীত জাঁকিয়ে বসবে। শ্বাস-প্রশ্বাস সংক্রান্ত অন্যান্য ভাইরাসের প্যাটার্নের কারণে কোভিড ১৯ এর শীতকালীন প্রকোপের শোচনীয় অবস্থার কথা বলা হচ্ছে।


করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করতে না পারলে মানব জাতিকে বড় ধরণের মাশুল গুনতে হবে। এর ভয়াবহতা আঁচ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং বিভিন্ন দেশের সরকার ও সচেতন শ্রেনী উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। যেকোন মূল্যে মানুষকে প্রস্তুত হতে হবে। গ্রহণ করতে হবে সচেতনামূলক ব্যবস্থা। রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবনে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলো মেনে চলার কোন বিকল্প নেই। বিশেষ করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, ঘরের বাইরে সার্বক্ষণিক মাস্ক পরিধান করা, সমাবেশ এড়িয়ে চলা। প্রয়োজন হলে কোয়ারেন্টাইন মেনে চলা। এসব মেনে চলে নিজেকে করোনা সংক্রমন থেকে দূরে রাখার পাশাপাশি অপরকেও নিরাপদ রাখা জরুরী। মহামারী কেটে গেলে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবো আমরা। উপভোগ করার সুযোগ পাবো সবধরণের অনুষ্ঠানাদি। কোন সংক্রমন ব্যাধিই দীর্ঘস্থায়ী হয় না। মহান সৃষ্টিকর্তা এর হাত থেকে এবারো মানবজাতিকে নিশ্চয়ই রক্ষা করবেন। তবে এজন্য আমাদেরকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের এলার্জি ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা: এন্থনী ফাউচি দুই কোম্পানির সফল ভ্যাকসিন আবিষ্কার নিয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করে বলেন, আমরা গভীর অন্ধকার গহব্বরের শেষপ্রান্তে আলোর রশ্মি দেখতে পাচ্ছি। ভ্যাকসিন আবিষ্কার হওয়ায় আশাবাদী হয়ে উঠেছে মানুষ।


advertisement

Posted ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২০

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

(4069 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

(1261 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়

(856 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

(825 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়

(809 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়

(752 বার পঠিত)

বিদায় ২০২০ সাল
বিদায় ২০২০ সাল

(715 বার পঠিত)

ঈদ মোবারক
ঈদ মোবারক

(637 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.