| বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২২
নিউইয়র্ক সিটির প্রায় এক কোটি বাসিন্দার তুলনায় বাড়ির সংখ্যা অপ্রতুল। কম করে হলেও আরো ৩ লাখ ৪০ হাজার নূতন বাড়ির প্রয়োজন। কিন্তু নূতন করে হাউজিং প্রকল্প বাস্তবায়িত না হওয়ায় সিটি নজিরবিহিন আবাসন সংকটে পড়েছে। বাড়ি ভাড়া কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেনীর বাসিন্দাদের জীবন। অপরদিকে বাড়ছে হোমলেস ও সীমান্ত পেরিয়ে আসা ইমিগ্র্যান্টদের সংখ্যা । চলমান এই আবাসন সংকট কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন সময় নতুন হাউজিং প্রকল্প বাস্তবায়নে ডেভেলপাররা এগিয়ে আসার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এই উদ্যোগ বাঁধাগ্রস্থ করছেন একশ্রেনীর জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিক ।
সিটির আবাসন খাতে বিনিয়োগকারীদের বরাবরই শত্রু ভেবেছেন তারা। এসব কারণে থমকে গেছে অনেক বড় বড় হাউজিং প্রকল্প বাস্তবায়ন। বৃদ্ধি পেয়েছে আবাসন সংকট। সাম্প্রতিককালে সিটির আবাসন সংকট চরম আকার ধারণ করায় বাম ঘরানার এসব রাজনীতিকের মাঝে উদয় হয়েছে শুভ বুদ্ধির। আবাসন খাতে নতুন অনেক প্রকল্প বাস্তবায়নে অনুমতি মিলছে তাদের কাছ থেকে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে কাংখিত এফোর্ডেবল হাউজের প্রতিশ্রুতি ছাড়াই বিনিয়োগকারীদেরকে স্বাগত জানাচ্ছেন রাজনীতিকরা। বিশেষ করে কয়েকজন সিটি কাউন্সিল মেম্বার ও বরো প্রেসিডেন্ট। তবে এখনো কোন কোন প্রকল্পে সায় দিতে গড়িমসি করছেন দু’একজন কাউন্সিল মেম্বার।
রিয়েল এস্টেট খাতে বিনিয়োগকারীদেরকে দীর্ঘদিন ধরে তারা শত্রু মনে করে আক্রমনাত্নক মনোভাব পোষন করেছেন। স্থানীয় কমিউনিটির সম্পত্তির মূল্য এবং প্রতিবেশের ঐতিহ্য রক্ষার জন্য আটকে দিয়েছেন হাউজিং প্রকল্প । তারাই এখন কঠিন বাস্তবতা অনুধাবন করে নতুন নতুন হাউজিং প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমোদন দিচ্ছেন। নিউইয়র্ক সিটি মেয়র সহ সিটি কাউন্সিলের সিংহভাগ সদস্য আবাসন সংকট নিরসনে নতুন হাউজিং প্রকল্প বাস্তবায়নের পক্ষে। তারা মনে করেন বর্তমান বাস্তবতার শতভাগ অ্যাফোর্ডেবল হাউজিং সম্ভব নয়। চলমান হাউজিং সংকট কাটিয়ে উঠতে নতুন হাউজিংয়ের কোন বিকল্প নেই। নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন না হলে এসব এলাকা আরো অনুন্নত হয়ে পড়বে।
সিটির কম পরিমাণ এবং অবহেলিত ও পতিত জায়গায় বহুতল ভবন করে সবধরণের নাগরিক সুবিধা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হয় তাদেরকে। এজন্য সিটির প্রতিটি নিয়মনীতি মেনে চলার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। স্থানীয় কমিউনিটি বোর্ড সহ গোটা এলাকার মানুষের সুবিধা-অসুবিধা আমলে নিতে হয় বিনিয়োগকারীদের। সার্বিক বিবেচনায় নিউইয়র্ক সিটি এখন নতুন হাউজিং প্রকল্পের পক্ষে। আর এক্ষেত্রে একটি গতিরও সঞ্চার হয়েছে সর্বত্র। সিটির প্রায় অর্ধেক বাসিন্দাকে তাদের আয়ের এক তৃতীয়াংশেরও অধিক ব্যয় করতে হয় বাড়ি ভাড়ার জন্য। যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সিটির হোমলেসদের জন্য নির্ধারিত আবাসন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে।সম্প্রতি নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে বিপুল সংখ্যক বহুতল আবাসিক ভবন। ফলে এসব এলাকায় গোটা পরিবেশ ও প্রতিবেশ পাল্টে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে নতুন সুযোগ সুবিধা।
থাকছে এফোর্ডেবল হাউজ ।গোটা নিউইয়র্ক সিটি জুড়ে যখন এমন একটি ইতিবাচক হাওয়া বইছে আবাসন খাতে তখন এস্টোরিয়া এলাকায় ২ হাজার ৮৪৫ এপার্টমেন্টের একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে অনুমোদন দিতে গড়িমসি করছেন স্থানীয় কাউন্সিল মেম্বার । দুই বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পে সবধরণের নাগরিক সুবিধা থাকবে বলে জানা গেছে। আর যারা এই এলাকার বাসিন্দা তারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাবেন এফোর্ডবল হাউজিং সুবিধা। যা বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে হবে অনেক সাশ্রয়ী। ঝুলে থাকা প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থানীয় এলাকাবাসীও আগ্রহী। তারা মনে করেন এই হাউজিং প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে গোটা এলাকার চেহারা পাল্টে যাবে। তারা মনে করেন আধুনিক নগরায়নের ক্ষেত্রে জেন্টি ফ্রিকেশন’ একটি চলমান প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া ব্যাহত করার কোন সুযোগ নেই। গত সপ্তাহে সিটি হলে এস্টোরিয়ায় প্রস্তাবিত হাউজিং প্রকল্প নিয়ে শুনানি হয়েছে। অচিরেই প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখবে এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা।
Posted ১২:০৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh