শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস

  |   বৃহস্পতিবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২১

বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস

আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। এটা আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা আসে। মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল দারিদ্র্যমুক্ত ও শোষণমুক্ত স্বদেশ, যে বাংলাদেশ হবে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে সমুন্নত। মানুষ পাবে তার সার্বজনীন মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার স্বাধীনতা। দিনটি আমাদের আত্মপরিচয় লাভের দিন।

তবে জাতীয় জীবনে এবারের বিজয় দিবসের তাৎপর্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ এবার পূর্ণ হলো আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছিল মহান স্বাধীনতা; বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছিল একটি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বিজয়ের লাল সূর্য নতুন ‘আলোর ঝর্ণাধারা’ বয়ে আনবে জাতির জীবনে এটিই কাম্য। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের কথা বলা থাকলেও তা এখনো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। স্বাধীনতার অর্ধশত বছরে আমাদের অর্জন যেমন ঈর্ষণীয়, ঠিক তেমনি ব্যর্থতাও কম নয়। অনুন্নত থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ঘটতে যাচ্ছে। কিন্তু আর্থসামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা এখনো অনেক দূরে। বিশেষ করে ধনী ও দরিদ্রের ব্যবধান আকাশচুম্বী। স্বাধীনতার সুফল আমরা প্রতিটি মানুষের ঘরে পৌঁছে দিতে পেরেছি এমন নয়। বরং মুষ্টিমেয় মানুষের ঘরেই যেন সব সুবিধা পুঞ্জীভূত হচ্ছে। আমাদের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম। চেপে বসা কর্তৃত্ববাদী শাসনে নাগরিকদের মৌলিক ও মানবাধিকারের আকুতি শূন্যে মিলিয়ে যাচ্ছে। জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে রাষ্ট্রের মালিকানা থেকে জনগণকে উচ্ছেদ করার কারণে। এ অবস্থা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে কোনোভাবেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সাথে সাথে এসব বিষয় নিয়ে ভেবে দেখার প্রকৃষ্ট সময় এখন।


মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল দারিদ্র্যমুক্ত-শোষণমুক্ত স্বদেশ, যে বাংলাদেশ হবে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে সমুন্নত। জনগণ পাবে সার্বজনীন মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার স্বাধীনতা। নাগরিকরা পাবে নিজেদের অবস্থান উত্তরণের সুযোগ। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে দীর্ঘ পথপরিক্রমায় বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়, সেটিও মূল্যায়ন করা জরুরি। পাঁচ দশকে আমাদের আর্থসামাজিক খাতে নজরকাড়া পরিবর্তন হয়েছে। উন্নয়নের কিছু সূচক বৈশ্বিক প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে বৈষম্য দূর করে সাম্যভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র অর্জনে এখনো সক্ষম হইনি, এটিই বাস্তবতা। দেশবাসীর জীবনমানে বিপুল পরিবর্তন এসেছে। গ্রাম-শহরে উন্নয়ন দেখার মতো। দেশে গড়ে উঠেছে আকাশচুম্বী অট্টালিকা।

কিন্তু গ্রাম-শহরে জীবনযাত্রার ফারাকও অনস্বীকার্য। বাস্তবে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য আকাশছোঁয়া। এ ব্যবধান ঘোচানোর রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। এখনো দেশে দারিদ্র্যসীমায় পাঁচ কোটি লোকের বাস। অর্থনীতির আকার বেড়েছে; কিন্তু সম্পদের বণ্টন ন্যায্যতাভিত্তিক নয়। বেশির ভাগ সম্পদ গুটিকয় ব্যক্তি বা পরিবারের হাতে কুক্ষিগত। দুর্নীতি বেড়েছে মহামারী আকারে। সুশাসনের অনুপস্থিতি এবং দুর্বল গণতন্ত্র এ জন্য দায়ী। রাজনীতি ও প্রশাসনে গণতন্ত্রচর্চায় অনেক পিছিয়ে রয়েছি আমরা। দেশে রাজনৈতিক বিভাজন পাগাড়সম। সব মত-পথের মানুষের জন্য সমান ব্যবস্থা করা যায়নি। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারছে না।


গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বিকশিত হয়ে ওঠেনি। মানবাধিকার নিয়ে তীব্র সমালোচনা বিদ্যমান। জনগণ সেবা গ্রহণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরপেক্ষ অবস্থান পাচ্ছে না। স্বাধীনতাকামী মানুষ একটি চেতনা নিয়ে একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সেই চেতনার যথাযথ মূল্যায়ন হতে হবে। আমরা দেখছি, প্রায় একই সময় পাড়ি দিয়ে অনেক দেশই উন্নতির শিখরে পৌঁছেছে। নির্মাণ করেছে বিকশিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। সমৃদ্ধ একটি দেশ প্রতিষ্ঠা আমাদের পক্ষেও সম্ভব। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বক্তৃতা-বিবৃতিতে আটকে না রেখে বাস্তবে চর্চার মাধ্যমেই সেটি সম্ভব। সে জন্য দরকার জাতীয় ঐকমত্য। ভেঙে ফেলতে হবে বিভেদের সব দেয়াল। তৈরি করতে হবে সাম্য। টেকসই গণতন্ত্র ও উন্নয়ন সমান্তরালে চললে স্বাধীনতার লক্ষ্য অর্জন অসম্ভব নয়। এ জন্য এগোতে হবে জাতীয় সমঝোতা, সম্প্রীতি ও ঐক্যের মহাসড়কে।


advertisement

Posted ৮:৫৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২১

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

(4026 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

(1256 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়

(851 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

(822 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়

(806 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়

(748 বার পঠিত)

বিদায় ২০২০ সাল
বিদায় ২০২০ সাল

(708 বার পঠিত)

ঈদ মোবারক
ঈদ মোবারক

(633 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.