বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি প্রয়োগ

  |   বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি প্রয়োগ

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। গত ২৪ মে এই ঘোষণার চার মাসের মাথায় গত ২২ সেপ্টেম্বর দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হলো ভিসা নীতি প্রয়োগ শুরুর কথা। বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই ভিসা নীতির বার্তা মূলত যারা বাংলাদেশে নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে তাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বন্ধ। এই নীতির অধীনে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপে সক্ষম হবে।

এসব ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন। এর বাইরে বাংলাদেশে ভবিষ্যতে আরও যাদের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করায় দায়ী বা জড়িত হিসেবে পাওয়া যাবে, তারাও এ নীতির অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য অযোগ্য হিসেবে গণ্য হবেন। বাংলাদেশের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, বিরোধী ও সরকারি রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা সেবাদাতা সংস্থার সদস্যদের ক্ষেত্রে বিষয়টি প্রযোজ্য হবে। ভিসা নীতিতে গণমাধ্যমও যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। তিনি বলেছেন, সরকারি দল, বিরোধী দল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর আগামীতে গণমাধ্যমও এই ভিসা নীতিতে যুক্ত হবে।


বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা ইতিহাসে এই প্রথম। বিশ্বের হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি দেশের জন্য এমন ভিসা নীতি গ্রহণ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এই তালিকায় বাংলাদেশের আগে ৫টি দেশ ছিল: নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, উগান্ডা, নিকারাগুয়া ও বেলারুশ। তবে, কোনো দেশের নির্বাচনের আগে সে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া খর্বে জড়িত সুনির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের ঘটনা বিবেচনায় এটা দ্বিতীয়। বাংলাদেশের আগে কেবল আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় চলতি বছরের ২৫শে ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগে গত জানুয়ারি মাসে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া খর্বে জড়িত দেশটির সুনির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল।

যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ শুরু করায় তোলপাড় শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষণীয়। অভিজ্ঞ মহলের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও আলোচনা চলছে ভিসানীতি নিয়ে। যদিও ভিসা নিষেধাজ্ঞা কাদের বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে তার কোনো নাম প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্র। তবে মানুষের মধ্যে কৌতূহল ছিল, এখন পর্যন্ত কারা এ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, ভিসানীতির ফলে বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, তারা নির্বাচন প্রতিহত করার লক্ষ্যে সহিংসতা চালালে ভিসা নিষেধাজ্ঞায় পড়বেন। অপরদিকে, বিএনপি নেতারা মনে করেন, ভিসানীতির কারণে ক্ষমতাসীনরা চাপে পড়বে। কেননা আওয়ামী লীগের নেতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকারের অংশ অনেকেই এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়বেন। তবে অভিজ্ঞ কূটনীতিকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ-বিএনপি নির্বিশেষে বাংলাদেশের জন্য ভিসানীতি কোনো সুখবর নয়।


যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বিরাট বাণিজ্য সম্পর্ক, বিনিয়োগ এবং রেমিট্যান্স ঘিরে সম্পর্ক রয়েছে। ফলে এই দেশটি থেকে এমন নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের জন্য সম্মানজনক নয়। অভ্যন্তরীণ সংলাপের মাধ্যমে নির্বাচন ঘিরে সৃষ্ট সংকট নিরসন করা গেলে এমন নিষেধাজ্ঞা এড়ানো যেত বলে অভিজ্ঞ কূটনীতিকরা মনে করেন। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা এও মনে করেন যে, বাইডেন প্রশাসনের একটা প্রবণতা হলো, বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি অধিক জোর দেওয়া। ফলে তারা নির্বাচনি ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার বিষয়ে সহায়তা করা তাদের সেই নীতিরই অংশ। যুক্তরাষ্ট্র ধারাবাহিকভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া জোরদার এবং মানবাধিকারের কথা বলে আসছে।

২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময়েও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য চাপ দিয়েছে। তবে এবারের ভিসানীতি বাইডেন প্রশাসনের মস্তিষ্কপ্রসূত নতুন ধরনের ধারণা। এটার মাধ্যমে তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে জোর দিচ্ছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাস, নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সিদ্ধান্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি কার্যকর শুরু, এই ঘটনাগুলো প্রায় একই সময়ে ঘটেছে। এগুলো কাকতালীয় মনে করার কোনো কারণ নেই। এরসঙ্গে কোনো একটা যোগসূত্র আছে। সরকার যদি এটি উপলব্ধি করতে পারে তাহলে দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ বল ঠেলে দিয়েছে সরকারের কোর্টে। এগুলো যদি সরকার ধর্তব্যের মধ্যে না নেয়, তাহলে বাংলাদেশের মানুষের জন্য নানা সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। দেশের মানুষের কষ্ট আরও বাড়বে। বাংলাদেশ সরকারের উচিত ভিসা নীতিকে গুরুত্ব দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের সব ব্যবস্থা করা। তা না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।


Posted ১২:০৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

(4086 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

(1261 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়

(856 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়

(825 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়

(809 বার পঠিত)

সম্পাদকীয়

(752 বার পঠিত)

বিদায় ২০২০ সাল
বিদায় ২০২০ সাল

(717 বার পঠিত)

ঈদ মোবারক
ঈদ মোবারক

(638 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.