| শুক্রবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
বাংলাদেশ নিয়ে অহঙ্কারের শেষ নেই সরকারের মন্ত্রী, আমলা, তাদের তাবেদার ও বশংবদদের। দু’হাতে অর্থ কামাচ্ছে তারা। ছোটবড় সকল কন্ট্রাক্ট, যেকোনো ব্যবসা, জমি, রিজোর্ট, বাগানবাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট সবকিছুর মালিক তারা। কত জনের হাতে শতকোটি টাকা আছে, হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করছে, তার সঠিক কোন হিসাব নেই। দেশ মধ্য আয়ের দেশ হয়ে গেছে, শিগগিরই তা সমৃদ্ধ দেশের তালিকাভূক্ত হবে। তবুও এই শ্রেণিটি দেশের বাইরে আরেকটি নিরাপদ আশ্রয় খোঁজে হন্যে হয়ে। তারা ভিন দেশের পাসপোর্ট পেতে চায়, নিদেনপক্ষে স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে, যাতে দেশে গাঁয়ে একটু আঁচ লাগলেই কেটে পড়তে পারে পরিবার পরিজন নিয়ে। তারা ছড়িয়ে আছে ইউরোপের দেশগুলো, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাপ, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, মালয়েশিয়ায়। এই গজিয়ে উঠা বাংলাদেশি কোটিপতিদের অনেকেই এখন ইউরোপ বা আমেরিকা, কানাডা দিয়ে এখন অখ্যাত কয়েকটি ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্রের পাসপোর্ট প্রকল্পে দুহাতে টাকা ঢালছেন। ইতোমধ্যে অনেকের হাতে হাতে ঘুরছে এসব পাসপোর্ট। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রাজনীতিবিদ ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ছাড়াও আছেন সরকারি-বেসরকারি সেক্টরের প্রভাবশালীরা। এমনকি পরিচয় লুকিয়ে ভিন্ন নাম-ঠিকানায় পাসপোর্ট পেতেও মরিয়া অনেকে। তবে বিদেশি পাসপোর্ট প্রকল্পে বিনিয়োগের পুরোটাই পাচার হচ্ছে-এমন সন্দেহ করে দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এমনকি এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকে বসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ সময় দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর পাসপোর্ট পাওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রতিবেদন তৈরির সুপারিশ করা হয়। এছাড়া এ ধরনের পাসপোর্ট গ্রহীতাদের তালিকা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। যদিও পরে বিষয়টি আর বেশিদূর এগোয়নি। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্যারিবিয়ান দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডায় বিনিয়োকারী বাংলাদেশির সংখ্যা সর্বোচ্চ। সে দেশের বিশেষ নাগরিকত্ব প্রকল্পে বিনিয়োগ করে ইতোমধ্যে পাসপোর্ট নিয়েছেন চট্টগ্রামের প্রয়াত রাজনীতিবিদ আক্তারুজ্জামান চৌধুরীর ছেলে আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং তার স্ত্রী ইমরানা জামান চৌধুরী। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের বাইরে বিনিয়োগ করে নাগরিকত্ব গ্রহণের জন্য অর্থ প্রেরণের প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদনের আবশ্যকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে উল্লিখিত ব্যক্তিদ্বয় কর্তৃক অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডায় বিনিয়োগের অনুমতির তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকে পাওয়া যায়নি। এ ধরনের অনুমোদন ছাড়া বিদেশে বিনিয়োগ করলে তা মানি লন্ডারিং অপরাধ হিসাবে বিবেচ্য। শুধু আনিসুজ্জামান দম্পতি নয় আরো অনেকে ওইসব দ্বীপদেশের পাসপোর্ট নিতে অনেক অর্থ ঢেলেছেন এবং আরো অনেকে একই চেষ্টায় নিয়োজিত বলেও জানা গেছে। বৈরী পরিস্থিতিতে বিদেশি পাসপোর্ট দেখিয়ে দেশের বাইরে যাওয়াও তুলনামূলক সহজ। তাই সুবিধাভোগীদের বিদেশি পাসপোর্টের বিশেষ প্রয়োজন। এ ধরনের লোকদের দ্বারা সরকার দেশ থেকে অর্থ পাচারের বিষয় যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিলেও শেষ পর্যন্ত তা বন্ধ রাখে। কারণ, যারা বিদেশি পাসপোর্ট গ্রহণ ও অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত তারা সকলেই ক্ষমতাসীন দলের উর্ধতনদের সঙ্গে জড়িত।
Posted ৫:২৭ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh