| বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্র থেকে হঠাৎ করে রেমিট্যান্স আসা বেড়ে যাওয়া নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে যে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ থেকে যে অর্থ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় পাচার হয়েছে বাংলাদেশে রাজনীতিতে গনেশ পাল্টে যাওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হওয়ায় পাচার করা অর্থই রেমিট্যান্স হিসেবে ফেরত আসছে। ব্যাপারটি আসলেই অস্বাভাবিক, যা কখনোই কখনোই ঘটে না তা সহসা ঘটতে শুরু করলো কেন? বাংলাদেশে বেশির ভাগ রেমিট্যান্স যায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে। কিন্তু গত দশ মাসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ৯ দশমিক ২২ লাখ মানুষ গেলেও সেখান থেকে প্রত্যাশিত রেমিট্যান্স আসেনি। এতদিন ধরে সৌদি আরব থেকে বেশি রেমিট্যান্স বাংলাদেশে গেলেও গত ছ’মাসে সে স্থান দখল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীরা। ফলে রেমিট্যান্সের উৎস হিসেবে এখন প্রথম অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র।
একথা দিবালোকের মতো সত্য যে, যারা যুক্তরাষ্ট্রে আসেন তাদের একটি বড়ো অংশ হোয়াইট কালার জব করেন। অনেকেই ঘরবাড়ি ও জমিজমা বিক্রি করে দেশ অধিক মূল্যে ডলার কিনে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসেন। অনেক শিক্ষার্থীও যুক্তরাষ্ট্রে এসেছে, কিন্তু তারা তো যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারে না। তাহলে এইবিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স যাচ্ছে কীভাবে? এমন তো নয়, বাংলাদেশ থেকে যেসব রাজনীতিবিদ, বিশেষ করে বর্তমান সরকারের আমলে বিপুল বিত্তের মালিক হয়েছেন তারা হুন্ডির মাধ্যমে তা উত্তর আমেরিকায় পাঠিয়েছেন, তারা বিপাকে পড়তে পারেন এমন একটি মানসিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাদের মধ্যে। অতএব তারা সেই অনুপার্জিত অর্থ রেমিট্যান্স হিসেবে দেশে পাঠাচ্ছেন্ন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টি গভীরভাবে অনুসন্ধান করা।
যদিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন যে, অনেক শর্ত শিথিল করায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে আগের তুলনায় এখন দেশে অর্থ প্রেরণ সহজ হয়েছে। এছাড়া বৈধ পথে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। ডলারের রেটও বেড়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে থাকা বাংলাদেশিদের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীরা পেশাগতভাবে তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থানে আছেন। এসব কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১.৯৬ বিলিয়ন বা ১৯৬. ৬৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে গেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ শতাংশ অধিক। বরাবরের অধিক রেমিট্যান্স প্রেরণকারী সৌদি আরব থেকে এই ছয় মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে ২১. ৫৩ শতাংশ। গত ছয় মাসে সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স গেছে ১৯০.৯১ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন সৌদি প্রবাসীরা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২৪৩.৩৪ কোটি ডলার। অর্থ্যাৎ রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রথম অবস্থানে থাকা সৌদি আরবকে পেছনে ফেলে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম অবস্থানে চলে গেছে। বিষয়টি হালকাভাবে না দেখে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর অনুসন্ধান করে দেখা উচিত যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সহসা রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ার রহস্য কি!
Posted ৬:২১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh