| বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০২৩
অভিবাসীর দেশ যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিদিন ভিন্ন ভাষাভাষী মানুষ উন্নত জীবন ও জীবিকার অন্বেষায় প্রবেশ করছে দেশটিতে। বৈধ বা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারীদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো আমেরিকান নাগরিকত্ব অর্জন। নানা আইনি জটিলতার কারণে অনেকেই ব্যর্থ হন নাগরিকত্ব লাভে। বাকীরা সময়ের ব্যবধানে বনে যান আমেরিকান। এজন্য পোড়াতে হয় অনেক কাঠখড়। তন্মধ্যে ইংরেজী ভাষা রপ্ত করা অন্যতম।
শুধুমাত্র ইংরেজী বলতে, লিখতে বা বুঝতে না পারার কারণে আমেরিকান নাগরিকত্ব পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে পারেন না অনেকে । সম্প্রতি এই পরীক্ষায় ইংরেজীর প্রাধান্য বাড়িয়ে দেয়ায় বেড়েছে উৎকন্ঠা। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনকার্ডধারী সংখ্যা ছিল ৯২ লাখ। যাদের প্রত্যেকেই প্রযোজ্য সময়সীমা অতিক্রম করার পর যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ার জন্য আবেদন করার যোগ্য।
মাইগ্রেশন পলিসি ইন্সটিটিউটের হিসাব অনুযায়ী প্রতিবছর গড়ে ১৩ লাখ বিদেশি বৈধ ও অবৈধ উপায়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। তাদের সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব চান এমন নয়। অনেকে গ্রিনকার্ড নিয়ে স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস ও কাজ করতে পারলেই সন্তুষ্ট। কিন্তু যারা নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে চান তাদের জন্য প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ ও চ্যালেঞ্জিং এবং বেশ কিছু আইনি ধাপ পার হওয়ার পরই তা অর্জন করা সম্ভব। আমেরিকার সিটিজেনশিপের টেস্টের প্রশ্নে পরিবর্তন আসছে। ইতিপূর্বে যে প্রশ্নগুলো ছিল এবং বিদ্যমান রয়েছে, তার সঙ্গে বিশেষ করে ইংরেজিতে দক্ষতা যাচাইয়ের টেস্ট হালনাগাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সিটিজেনশিপের জন্য আবেদনকারী এবং ইমিগ্রেশন বিষয়ক প্রবক্তাগণ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সাম্প্রতিক উদ্যোগে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন। আবেদনকারীদের মধ্যে যাদের ইংরেজিতে দক্ষতা সামান্য, তারা এ পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি ইমিগ্রান্টদের ন্যাচারালাইজেশন টেস্টের শেষ ধাপ হচ্ছে সিটিজেনশিপ লাভের পথে যাওয়া। বহু বছর আগে বৈধভাবে স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করার পর অনেকগুলো মাস প্রতীক্ষা করতে হয় এ প্রক্রিয়ার মধ্যে আসার জন্য।
সিটিজেনশিপের আবেদনকারী অনেকে এখনো ২০২০ সালে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের সময় সিটিজেনশিপ টেস্টের প্রশ্ন পরিবর্তন করে দীর্ঘ করা হয় এবং এর ফলে সময় যেমন বেশি লেগেছে, প্রক্রিয়াটি কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যে প্রশাসনে আসেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং নির্বাহী আদেশে সিটিজেনশিপের পথে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে সৃষ্টি করা বাধা দূর করেন।
এতে সিটিজেনশিপ টেস্টের প্রশ্ন পূর্ববর্তী পর্যায়ে চলে যায়, যা সর্বশেষ ২০০৮ সালে হালনাগাদ করা হয়েছিল। বর্তমান প্রশাসন গত ডিসেম্বর মাসে সিটিজেনশিপের টেস্টের প্রশ্নপত্রে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছে এবং ধারণা করা হচ্ছে যে শেষবারের পরিবর্তনের ১৫ বছর পর আনা পরিবর্তনের প্রস্তাব আগামী বছরের শেষ দিকে কার্যকর হবে। ইউএস সিটিজেনশিপ এন্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস প্রস্তাব করেছে যে, নতুন টেস্টে ইংরেজিতে কথা বলার অংশ দক্ষতা যাচাইয়ের প্রশ্ন থাকবে।
টেস্ট গ্রহণকারী অফিসার সাধারণ দৃশ্যের কিছু ছবি দেখাবেন Ñ যেমন দৈনন্দিন কার্মকান্ড, আবহাওয়া অথবা খাদ্য এবং আবেদনকারীকে ছবিগুলো সম্পর্কে মৌখিক বর্ণনা করতে বলা হবে। বর্তমান টেস্টে একজন অফিসার মৌখিক উত্তর দেওয়ার জন্য আবেদনকারীকে কোনো ব্যক্তিগত প্রশ্ন করেন, যা আবেদনকারী ইতোমধ্যে তার আবেদন ফরমে উত্তর দিয়েছেন। ইংরেজিতে স্বল্প দক্ষ কোনো আবেদনকারীর পক্ষে ছবি দেখে বর্ণনা করা কঠিন হবে। যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর ইংরেজি ভাষা শিখা এবং অধিকাংশ ইংরেজি শব্দের উচ্চারণ দুরুহ। তার মতে ব্যক্তিগত প্রশ্নে চেয়ে ছবি দেখে বর্ণনা করা কঠিন হবে। এছাড়া টেস্টের প্রশ্নে আরেকটি পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে, তা হলো, আমেরিকার ইতিহাস ও সরকার সম্পর্কিত অংশে বর্তমান চালু অফিসারের প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত মৌখিক উত্তরের পরিবর্তে মাল্টিপল-চয়েস উত্তর থাকবে, যা থেকে আবেদনকারীকে একটি উত্তর বেছে নিতে হবে।
Posted ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh