| বৃহস্পতিবার, ২৫ মার্চ ২০২১
২৬ মার্চ বাংলাদেশের ৫০তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস । আজ থেকে ৫০ বছর আগে ১৯৭১ সালের এই দিনটিতেই আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটেছিল বাঙালির সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের। স্বাধীনতার অর্ধশতক পূর্ণ হতে যাচ্ছে। পঞ্চাশ বছর আগে স্বাধীনতার ডাক এসেছিল হানাদারদের কবল থেকে মাতৃভূমিকে মুক্ত করার। ওই ডাকে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানি শোষকের হাত থেকে প্রিয় দেশকে মুক্ত করতে রণাঙ্গনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাংলার দামাল ছেলেরা। যেদিন শুরু হয়েছিল এক সর্বাত্মক জনযুদ্ধ। ২৬৬ দিনের সেই রক্তক্ষয়ী জনযুদ্ধের সফল পরিণতিতে বিশ্বের বুকে জন্ম নিয়েছিল একটি নতুন রাষ্ট্র, আমরা পেয়েছিলাম স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ, প্রিয় বাংলাদেশ।
২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। জাতির ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম ‘বাংলাদেশ’ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। পাকিস্তানি শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের স্ফুলিঙ্গে উজ্জীবিত সশস্ত্র জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের মুক্তির ইতিহাস, স্বাধীনতার ইতিহাস। পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথ বেয়ে উপমহাদেশের জনগণ পেয়েছিল পাকিস্তান ও ভারত নামক দুটি রাষ্ট্র। এরপর শুরু হয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক বাঙালিদের নতুন করে শোষণ ও পরাধীনতার শৃঙ্খলে বেঁধে রাখার ষড়যন্ত্র। পাকিস্তানিদের শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাঙালি জাতি। বাঙালি জাতি মুক্তির মন্ত্রে উজ্জীবিত করে ধাপে ধাপে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পথে এগিয়ে যায়। বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবীতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের পথ বেয়ে ’৫২-এর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ’৫৬-এর সংবিধান প্রণয়নের আন্দোলন, ’৫৮-এর মার্শাল ’ল বিরোধী আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ’৬৯-এর রক্তঝরা গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী দলকে ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রের বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রাম ঘোষণা ও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন প্রভূত ঘটনা প্রবাহের মধ্য স্বাধীনতা অর্জনের চূড়ান্ত লক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে জাতি। স্বাধীনতার ইতিহাস ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান আর দুই লক্ষ মা-বোনের ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং কোটি বাঙালির আত্মনিবেদন ও সংগ্রামের গৌরবগাঁথা গণবীরত্বের ইতিহাস।
বরাবরের মতো গোটা জাতি আজ শোক ও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে অবনতচিত্তে স্মরণ করছে স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের। দেশজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপিত হবে। বাঙালি জাতির জীবনে স্বাধীনতা দিবস একই সঙ্গে আনন্দ ও বেদনার দিন। জাতির যে বীর সন্তানেরা সুদীর্ঘকালের সংগ্রাম, আপোষহীন আন্দোলন এবং একাত্তরের নয় মাস সশস্ত্র জনযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন জাতি তাদের বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা ভরে স্মরণ করেছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ছিল বিশাল। বাঙালি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র চেয়েছিল। চেয়েছিল এমন একটি রাষ্ট্র, যা প্রতিষ্ঠিত হবে কিছু আদর্শের ভিত্তির ওপর। স্বাধীনতা দিবস আবার এসেছে অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সেসব আদর্শের দিকে ফিরে তাকানোর দাবি নিয়ে।
Posted ১০:০২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৫ মার্চ ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh