| বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট ২০২১
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রকোপের মধ্যে একদিনে এক হাজারেরও বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সরকারিভাবে ঘোষিত মৃত্যুর সংখ্যায় বিশ্বের শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের মোট সংখ্যা প্রায় ছয় লাখ ২৩ হাজারে দাঁড়িয়েছে। সর্বশেষ মার্চে যুক্তরাষ্ট্রে এক হাজারের বেশি দৈনিক মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছিল। এরপর গত মাসে করোনাভাইরাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা ফের বাড়তে শুরু করে দৈনিক গড় ৭৬৯ দাঁড়ায়।
রয়টার্সের টালি অনুযায়ী মধ্য এপ্রিলের পর দৈনিক মৃত্যুর এটিই সর্বোচ্চ গড়। অন্যান্য অনেক দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রেও বড় ধরনের একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। করোনা ভাইরাসের ডেল্টা ভেরিয়েন্টের বিস্তারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ভ্যাকসিনের তৃতীয় ডোজ দেয়ার। আমেরিকানদের যারা ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিনের দুই ডোজ গ্রহণ করেছেন, তাদের মধ্যে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য অনুমোদন দিয়েছে ইউএস ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিষ্ট্রেশন (এফডিএ)। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত সপ্তাহে এ সংক্রান্ত ঘোষণা দিয়েছেন জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্য দানকালে । এফডিএ’র অনুমোদন এবং প্রেসিডেন্টের ঘোষণার আলোকে সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) সুপারিশ করেছে যে, কাদের জন্য তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিন নেয়ার প্রয়োজন পড়বে বা নেয়া উচিত। যারা আট মাস আগে ভ্যাকসিনের দুই ডোজ নেয়া সম্পন্ন করেছেন তাদের তৃতীয় ডোজ দেয়া শুরু হবে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে।
যারা আগের দুটি ডোজ মডার্না অথবা ফাইজারের ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তারা ওই ভ্যাকসিনগুলোই নিতে পারবেন। কিন্তু যারা এখন জনসন এন্ড জনসনের ভ্যাকসিন গ্রহণ করছেন, তাদের ক্ষেত্রে আপাতত তৃতীয় ডোজের সুপারিশ করা হচ্ছে না। জনসন এন্ড জনসনের ভ্যাকসিনের ডোজ যেহেতু একটি, সেজন্য যারা জনসন নিচ্ছেন, তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই আরেকটি ডোজ নেয়ার প্রয়োজন পড়বে।
সিডিসির মতে এখন যারা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে তাদের ৯৯ শতাংশই ডেল্টা ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হচ্ছে। গত ১৬ আগস্ট সমাপ্ত এক সপ্তাহে প্রতিদিন যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে ১২৮,৩৪৭ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং প্রতিদিন গড়ে ৫৫৩ জন মারা গেছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণকারীদের যেভাবে শ্রেণীকরণ করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে যাদের সলিড টিউমার ও হেমাটোলজিক ম্যালিগনেন্সির জন্য চিকিৎসা চলছে। সিএআর-৭ সেল অথবা হেমাটোটোপায়োটিক স্টেম সেল ট্রান্সপ্ল্যান্ট করেছেন। যাদের মাঝারি অথবা গুরুতর প্রাথমিক ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি অর্থ্যাৎ ডাইজর্জ সিনড্রোম রয়েছে। এইচআইভি ইনফেকশনে আক্রান্ত। যারা হাই-ডোজ কর্টিকোস্টেরয়োডিকস এর সক্রিয় চিকিৎসাধীন, ট্রান্সপ্ল্যান্ট সংক্রান্ত ইমিউনোসাপ্রেসিভ ওষুধ সেবন করেন, ক্যান্সারের জন্য কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। যারা উপরোক্ত শ্রেনিগুলোর মধ্যে পড়েন না, এই পর্যায়ে তাদের তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিন নেয়ার কোন প্রয়োজন নেই। যারা উপরোক্ত শ্রেনিতে পড়েন তারা আগে মডার্নার ভ্যাকসিন নিয়ে থাকলে তৃতীয় ডোজও মডার্নার ভ্যাকসসিন নেবেন। ফাইজারের ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের ক্ষেত্রে তৃতীয় ডোজ ফাইজারের ভ্যাকসিন হবে। যদি কোন কারণে কোন একটি ভ্যাকসিনের প্রাপ্যতা না থাকে, শুধু সেক্ষেত্রে সিডিসি অন্য ভ্যাকসিন নেয়ার অনুমতি দিয়েছে। করোনাভাইরাসের আদি ধরনটির বিরুদ্ধে এ দুই টিকার কার্যকারিতা ছিল ৯০ শতাংশের বেশি। ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোর ডালা লানা স্কুল অব পাবলিক হেলথের সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ মারিয়া সুন্দরম বলেন, ভ্যাকসিন এখনো খুবই উপকারী। তবে কভিড প্রতিরোধে ভ্যাকসিনই শেষ কথা নয়।
Posted ৯:৫৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৬ আগস্ট ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh