বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

আমেরিকান সাধারণ নির্বাচন

ড. মাহবুব হাসান   |   বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২০

আমেরিকান সাধারণ নির্বাচন

আমেরিকার খুব খারাপ সময় যাচ্ছে বলেই মনে হয়। দুটি বিষয়ে আমেরিকানরা খুবই উদ্বিগ্ন। এক. করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। হেমন্তের এই পাতা ঝরার কালে সাধারণ মানুষ যে আনন্দ নিয়ে হলুদ/তামাটে/লালচে/লাল পাতা ঝরে পড়ার বর্ণিল দৃশ্য উপভোগ করতো, সেটা উবে গেছে। সেখানে এসে ‘কোভিড-১৯’এর ভয় তাদের আতঙ্কিত করছে। দুই. নির্বাচন ২০২০ নিয়েও উদ্বেগে আছে তারা। নির্বাচন আদৌ হবে কি না বা তা হতে দেবে কি না ট্রাম্প। ট্রাম্প নির্বাচন নিয়ে এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন কিছুদিন আগে। তার অধৈর্য ও সুইপড কমেন্ট দেশবাসীকে হতাশ করছে প্রতিদিনই। বালখিল্য সে সব মন্তব্য নিয়ে লোকজন হাসাহাসি করছে। তার সমর্থকদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে বিভক্তি। অনেকেই আর তাকে ভোট দিতে নারাজ। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর শঙ্কা আরো বেড়েছিলো। তিনি চারদিন মেলিটারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেবার পর হোয়াইট হাউজে ফিরে এসেছেন। ফার্ষ্টলেডি মেলানিয়াও আক্রান্ত করোনা ভাইরাসে। তিনি আইসোলেশনে আছেন। ট্রাম্পের শীর্ষ উপদেষ্টা হোপ হিকস, প্রচারণা বিষয়ক ম্যানেজার বিল স্টেপিয়েন, দুইজন রিপাবলিকান সিনেটর, রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির চেয়ারম্যান রোনা ম্যাকডানিয়েলেরও করেনা পজেটিভ ধরা পড়েছে। অর্থাৎ ডোনাল্ড ট্রাম্পের মূল শক্তি-ঘাঁটিতে করোনার এই হামলা যে তারই ‘করোনাকে অবজ্ঞা’র কুফলেই এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতি।

না, পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তবে স্বাভাবিক বলে চালাতে চাইলেও তা সত্য নয়। গত শনিবার, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পুনর্নিবাচনের উদ্দেশে আগত সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তৃতা করেছেন। করোনামুক্তির পর এটাই তার প্রথম পাবলিক ইভেন্ট।
তার আগেই তিনি গরিব বা স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য যে প্রণোদনামূলক অর্থ দেবার কথা জানা গিয়েছিলো, তা দেবেন না বলে সোজা জানিয়ে দিয়েছেন তার রিপাবলিকান সিনেটরদের। আর্থিক প্রণোদনা দেবার ব্যাপারে খুবই উৎসাহী ছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু করোনা তাকে কি এমন শিক্ষা দিলো যে তিনি বিগড়ে গেলেন ভোটার পাবলিকের ওপর? তার এই ঘোষণা যে বিপরীত ফল দেবে, সেটা কি তিনি জানেন না? অনেক রিপাবলিকান ও সমর্থকগোষ্ঠী যে আর্থিক সংকটে ভোগছেন গত ৬/৭ মাস ধরে,অনেক ছোটো ব্যবসায়ীর সংকট যে ত্রাহি-অবস্থা, তা তিনি ভুলে গেছেন? ভোলার কথা নয়। তবু এই শঙ্কা যে তিনি সাধারণ মানুষের আর্থিক শঙ্কট বিষয়টাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে এক মহাসংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছেন তিনি।


আমরা ইতোমধ্যে যে সব পোলের ফল জেনেছি তাতে তার ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বিন্দ্বী জো বাইডেনের চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে আছেন ট্রাম্প। এমন কি রিপাবলিক্যানদের চ্যানেল ফক্স নিউজের জনমত যাচাইয়েও ট্রাম্প অনেক ব্যবধানেই হেরে বসে আছেন। এর মধ্যে ডাকযোগে ভোট নিয়ে ট্রাম্পের শঙ্কাতুর মন্তব্য ভোটারদের আহত করে চলেছে। ভোটারদের এই রকম অবজ্ঞা করার জন্য তিনি দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হতে পারবেন নাই বলে অনেকের ধারণা জন্মেছে। আর তাই তিনি ক্ষমতা কি করে আঁকড়ে থাকা যায় সেই চোরাপথ খুঁজছেন। ভোটের ফলাফল নিয়ে তার মন্তব্যই তা প্রমাণ করে। তিনি বলেছেন আমরা জানি না নির্বাচনের ফল আমরা কবে জানতে পারবো। কারণ ডাকে ভোট আসতেই থাকবে, আসতেই থাকবে। ফলে চূড়ান্ত ফল কবে পাবো আমরা তা জানি না।
প্রেসিডেনশিয়াল ইলেকশন বিতর্কে ট্রাম্পের অসহনশীল ও গোয়াড়গোবিন্দ মার্কা আচরণ শেষে সাধারণের মন্তব্য হচ্ছে ট্রাম্প এক ক্রেজি পারসন নয়, তিনি ম্যাড হয়ে গেছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ও কমলা হ্যারিসের মধ্যেকার টিভি বিতর্কে হেরেছেন পেন্স।

কিন্তু আমরা যদি গত নির্বাচনের কথা মনে রাখি তাহলে বলতে দ্বিধা নেই যে হারু পার্টিকেও ক্ষমতায় পৌছানোর প্রায় ‘অলৌকিক ব্যবস্থা’ আছে মার্কিনি নির্বাচনে। মধ্যস্বত্বভোগী সেই ‘ইলেকট্রোরাল কলেজ’ নামক ভোট-ব্যাংক যে পার্টি সংখ্যায় বেশি দখল করতে পারবে, তিনি/তারাই যাবেন ক্ষমতায়। গতবার হিলারি ক্লিনটন ট্রাম্পের চেয়ে মাত্র ৩০ লাখ ভোগ বেশি পেয়েও হেরে যান। কারণ ট্রাম্প ইলেকট্রোরাল কলেজ ভোট বেশি পান। প্রত্যেক স্টেটে নির্দিষ্ট ইলেকট্রোরাল কলেজ ভোট আছে। নির্বাচনের পর দেখা গেলো ডেমোক্র্যাটরা দেশের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে বিজয়ী হয়েছে, আর ট্রাম্প বা রিপাবলিকানরা পেয়েছে দেশের মধ্যবর্তী রাজ্যগুলোর ইলেকট্রোরাল ভোট। এর মধ্যে যে রাজ্যগুলো এবার জয়-পরাজয়ের ফ্যাক্টর বলে চিহিৃত হয়েছে তার মধ্যে ফ্লোরিডা এক নম্বরে। ওহাইয়ো, মিনেসোটাসহ আরো দুই/একটি রাজ্যের ফ্যাক্টর ভোটই মূলত নির্বাচনের ফল দিয়ে থাকে। ফ্লোরিডায় ২৯টি ইলেকট্রোরাল ভোট। সেখানে রিপাবলিকানও ডেমোক্র্যাটরা সমানে সমান ভোট-জনপ্রিয়তায়। মিডিয়ার ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউটের করা পোল-এর র‌্যানডম যাচাইয়ের ফল এটি। জিততে হলে ডেমোক্র্যাটদের এই রাজ্যে প্রচারণায় ও মোটিভেশনের ওপর জোর দিতে হবে। এখানে যদি ডেমোক্র্যাটরা সুফল ফলাতে পারে তাহলে প্রেসিডেন্সিতে জো বাইডেন/কমলা হারিসের জায়গা হবে। না হলে সহজ হবে না। যে সব রাজ্যে দুই দলই প্রায় সমান বা উনিশ/বিশ ব্যবধানে অবস্থান করছে, সেগুলোই মূলত ফ্যাক্টর স্টেট। এখন যে রকম জনপ্রিয়তার অবস্থানে আছে ডেমোক্র্যাটরা তাতে করে একমাত্র ফ্লোরিডাতে জিততে পারলেই কল্লা ফতে। সে কারণেই কি নিউ ইয়র্কের সাবেক মেয়র ধনকুবের ব্লুমবার্গ কেবলমাত্র ফ্লোরিডায় নির্বাচনী প্রচারণায় ১০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছেন।
নির্বাচনে জিততে হলে কোনো পার্টি প্রার্থীকে ৫৩৮টি ইলেকট্রোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে ২৭০টি পেতে হবে। দেখা যাক, আগামী ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে কোনদলের মুখে হাসি ফোটে। নির্বাচনের এখনো বাকি (১০/১০/২০২০) মাত্র ২৩ দিন।এর মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় দুই দলই চেষ্টার সর্বোচ্চ সহযোগ দিচ্ছে।


নিউ ইয়র্ক, ১০/১০/২০২০


advertisement

Posted ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২০

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

গল্প : দুই বোন
গল্প : দুই বোন

(6134 বার পঠিত)

মানব পাচার কেন
মানব পাচার কেন

(1144 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.