জাফর আহমাদ | বৃহস্পতিবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২১
“যখন আল্লাহ কোন বান্দাকে ভালবাসেন, তখন জিব্রাইলকে ডেকে বলেন, আমি অমুক ব্যক্তিকে ভালবাসি, তুমিও তাকে ভালবাস। সুতরাং জিব্রাইলও তাকে ভালবাসেন। অতঃপর জিব্রাইল আকাশবাসীদের ডেকে বলেন, আল্লাহ অমুক ব্যক্তিকে ভালবাসেন। অতএব, তোমরাও তাকে ভালবাসতে থাক। ফলে আকাশের অধিবাসীরা তাকে ভালবাসতে থাকে। তৎপর পৃথিবীবাসীদের কাছেও এ ভালবাসা গৃহিত হয়।” (মিশকাতুল মাসাবীহ ঃ বাবুল হুব্বি ফিল্লাহি ওয়া মিনাল্লাহি)চরিত্রবান সকলের প্রিয়। চরিত্রবান আল্লাহর প্রিয়, রাসুল সঃ এর প্রিয়। চরিত্রবানকে যেমন পৃথিবীর সকল মানুষ ভালবাসে, তেমনি ফিরিশতাকুলও ভালবাসেন। এমন কি আল্লাহর তামাম সৃষ্টিনিচয় তথা জীব ও জড় পদার্থ সকল সৃষ্টিই চরিত্রবানকে ভালোবাসে। কারণ মানুষ ছাড়া বিশ্ব চরাচরে যত সৃষ্টি রয়েছে তারা সকলে ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় আল্লাহর অনুগত। চরিত্রবান ব্যক্তির স্বভাব যেহেতু সকল সৃষ্টির প্রকৃতি বা স্বভাবের সাথে মিলে যায়, তাই সকল সৃষ্টি তাকে ভালবাসে। যে চরিত্র মাধুর্যপূর্ন সে চরিত্রে আকর্ষণ আছে। মোহ আছে। সে চরিত্র জানের শত্রুকেও পরম বন্ধুতে পরিণত করে। চরম বিরোধীকে বশ মানায়। মানুষ মনমুগ্ধ হয়। সকলেই তার ভাল বলে ও ভালবাসে। কবি নজরুল ইসলাম এভাবটি তাঁর কবিতায় এভাবে তুলে ধরেছেন-
যে আল্লাহর কথা শোনে
তারি কথা শোনে লোকে।
আল্লাহর নূর যে দেখেছে
পথ পায় লোক তার আলোকে॥
চরিত্রবান বলতে উত্তম ও ভালো চরিত্রের অধিকারীকেই বুঝায়। উত্তম চরিত্র বলতে নৈতিকতার পরিচর্চাকে বুঝায়। নৈতিকতার চর্চা বলতে এমন চিন্তা ও কাজকে বুঝায় যা সদা সঠিক কল্যাণের পথ দেখায়। তাহলে এবার আসুন কল্যাণকর পথের সন্ধানে নিজেকে ব্যাপৃত করি। পৃথিবীতে অসংখ্য পথ ও মত রয়েছে এর মধ্যে কোনটি মানুষের সহজাত প্রকৃতির সাথে অধিকতর খাপ খায়, কোনটি গ্রহণ করলে মানুষ দুনিয়ার শান্তি ও কল্যাণ এবং আখিরাতের অন্তহীন জীবনে মুক্তি মিলে। কোন পথে চললে মানুষের সার্বিক চিন্তা-চেতনা ও কর্মে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হয়। সেটি হলো কালজয়ী আদর্শ ও পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান আল ইসলাম। ইসলামই একমাত্র ভারসাম্যপূর্ণ চরিত্র সৃষ্টির সঠিক ফর্মুলা প্রদান করেছে। এ ছাড়া মস্তিস্ক প্রসূত পৃথিবীর সকল প্রকার মতবাদ বা মন্ত্র-তন্ত্র মানুষের চরিত্রকে হননই করেছে।
মস্তিস্ক প্রসূত মতবাদ মানুষের ব্যক্তিগত, জাতীয় ও আন্তর্র্জাতিক চরিত্রকে বরাবরই ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। বর্তমান পৃথিবীর নেতৃত্বের দিকে তাকালে আমরা তার বাস্তব উদাহরণ স্বচক্ষে দেখতে পাই। এ বৈরী হাওয়া আমাদের চরিত্র গঠনের সুতিকাগার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও আক্রান্ত করেছে। সার্বিক এ ধ্বংস থেকে বাঁচতে হলে দেশ ও জাতিকে দ্রুত ইসলামের দিকে ফিরে আসতে হবে এবং দ্রুত ইসলামের প্রতিষেধক নিতে হবে। অন্যথায় দেশ ও জাতির ভবিষ্যত নেতৃত্ব দেয়ার চরিত্রবান লোক খোঁজে পাওয়া যাবে না। আর চরিত্রবান নেতৃত্ব ছাড়া দেশ ও জাতির শান্তির আশা করা বোকামী।
পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান হিসেবে ইসলামের ব্যাপকতার কোন সীমা-পরিসীমা নেই। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আধ্যাতিক কর্মকান্ডের ন্যায় মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বিনিময় ও গতানুগতিক আচরণের বিধান রয়েছে। এ জন্য ইসলামে ‘আদব’ বলে একটি পরিভাষা আছে। যার অর্থ হচ্ছে প্রথা, কৃষ্টি, ভদ্রতা, সভ্যতা, শিষ্টাচার,শিক্ষা ইত্যাদি। এর বিপরীত হচ্ছে বেয়াদবী, অভদ্রতা, অসভ্যতা, অশিষ্টতা ইত্যাদি। কোন কিছুর আদব বলতে ঐ জিনিসের ভাল বা সৌন্দর্যের দিককে বুঝায়। ইসলামী আদব বলতে কুরআন-সুন্নাহ স্বীকৃত আদবকে বুঝায়। এ আদবের সত্যিকার উদ্দেশ্য হচ্ছে তার ধর্মীয় চরিত্র ও প্রকৃতি। মানুষের দৈনন্দিন কর্মপদ্ধতি আল্লাহর স্বরণ থেকেই এর উৎপত্তি। ইসলামী আদবের নৈতিক ভিত্তি হলো, নৈতিকতা বা আমলে সালেহ্।
পৃথিবীর প্রতিটি কথা ও কাজ, আচার ও আচরণ যখন কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে হবে এবং যেখানে আল্লাহর স্বরণ সদা জাগরূক থাকবে, সেটিই হবে ইসলামী চরিত্র। একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন, আমাদের দেশে ছোটরা যদি বড়দের সাথে অসদ্বাচরণ করে, তবে সেটিকেই শুধু বেয়াদবী বলা হয়ে থাকে। মুলতঃ বেয়াদবী বলা হয় অকৃষ্টি, অভদ্রতা, অসভ্যতা, শিষ্টাচার বহির্ভুত ও কুশিক্ষাকে। সে যেই ক্ষেত্রেই হোক, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে যা সুন্দর তার বিপরীত কাজের নামই বেয়াদবী। সে হিসাবে এটি শুধুমাত্র ছোটদের বেলায় প্রযোজ্য তা নয়, বরং বড়দের বেলায়ও বেয়াদবী বলা যেতে পারে।
ক্রিয়াগত বা আচরণগত দিক থেকে চরিত্র দূ’প্রকার। যথা: সৎচরিত্র বা ভালো চরিত্র, মুলতঃ এটিকেই আমরা চরিত্রবান বলে থাকি। এ ধরনের চরিত্রের অত্যাবশ্যকীয় বৈশিষ্ট্যগুলো হলো: সত্যবাদিতা, পবিত্রতা, সৎচরিত্রতা, উন্নত মুল্যবোধ তথা সত্য, ন্যায়, ইনসাফ ও সৌন্দর্য প্রিয়। দ্ধিতীয় প্রকারের চরিত্র হলো: অসৎ চরিত্র যাকে আমরা দূশ্চরিত্রও বলে থাকি। এ ধরনের চরিত্রের বৈশিষ্ট্য হলো উল্লেখিত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং ঐ সকল উন্নত মূল্যবোধ থেকে দুরে চলে যাওয়া। ফলে চরিত্রহীন ব্যক্তি নিজের ব্যক্তিগত জীবনের সংকীর্ণ গন্ডীর মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ করে। আর এর ফলে কুপ্রবৃত্তির বিভিন্ন চাহিদা তাকে ঘিরে ফেলে এবং সকল কর্মকান্ডে বেআদবী প্রকটাকার ধারণ করে।
প্রায়োগীক দৃষ্টিভঙ্গিতে চরিত্র আবার দু প্রকার। এক প্রকার হলো, সাধারণ যা সকল মানুষের জন্য সকল অবস্থায় প্রযোজ্য। দ্ধিতীয় প্রকার চরিত্র বয়স, পেশা, অভ্যাস ও কালের সাথে সম্পর্কযুক্ত। যেমন সকলের জন্য কমন চরিত্র হলো, তাঁর সৃষ্টি কর্তার সাথে কাউকে শরীক না করা, পিতা-মাতার সাথে ভালো ব্যবহার করা, নিয়মিত জামায়াতে নামায আদায় করা, ইসলামের অনুশাসণগুলো সুচারুরূপে আদায় করা, কোন মানুষকে কষ্ট না দেয়া, সদা সত্য কথা বলা, মিথ্যা কথা পরিহার করা। এগুলো ছাত্র, যুবা, বৃদ্ধ সকলের জন্য সমভাবে সর্বদা প্রযোজ্য এবং সকলের জন্য এগুলো আদব। দ্ধিতীয় প্রকারের উদাহরণ হচ্ছে, যেমন ছোটদের আদব মুরুব্বীদের সম্মান করা। পক্ষান্তরে মুরুব্বীদের আদব হচ্ছে ছোটদের আদর-যত্ন ও কল্যাণের পথ প্রদর্শন করা।
একজন সন্তানের আদব হচ্ছে পিতামাতার সাথে উত্তম আচরণ করা। তাদের সেবা করা, তাদের আদেশ শ্রবণ করা, তাদের যত্ন করা, তাদের কোনো প্রকার কষ্ট না দেয়া। নিজের উপার্জন থেকে তাদের জন্য ব্যয় করা এবং তাদের জন্য আল্লাহর শিখানো ভাষায় দু’আ করা। তদ্রুপ পিতামাতার আদব হচ্ছে সন্তানের সুন্দর ইসলামী নাম রাখা, তাদের লালন পালন করা, তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা। সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি অবশ্যই দ্বীনি শিক্ষা ও দ্বীনি চরিত্র গঠন করা। এ জন্য কুরআন, ঈমান আকীদা, ইবাদাত ইত্যাদি বিষয়ে প্রথমেই শিক্ষা দান করতে হবে। তাওহীদ, রেসালাত ও আখিরাত সম্পর্কে তাদের সুষ্পষ্ট ও নির্ভুল ধারণা দিতে হবে। মনে রাখা প্রয়োজন, এ তিনটি বিষয় একজন মানুষের মৌলিক শিক্ষা। এ বিষয়গুলো সম্পর্কে তাদের মধ্যে যদি কোন অস্পষ্টতা থেকে যায়, তবে তাদের সকল কর্মকান্ডই বৃথায় পর্যবশিত হবে। তাদের উত্তম নৈতিক চরিত্র গঠণ করতে হবে। ইসলামী আদব কায়দা ও আচার অনুষ্ঠান তাদের শিখাতে হবে।
এগুলো হলো, একজন আদর্শ ও চরিত্রবান পিতামাতার জন্য আদব। নবী করিম সঃ বলেন,“প্রত্যেক সন্তানই ফিৎরতের (দ্বীন বা সত্য কবুল করার যোগ্যতা) ওপর জন্মগ্রহন করে থাকে। অতঃপর তার পিতা মাতা (নিজেদের বর্তমান চরিত্র দ্বারা) তাকে ইহুদী বা খৃষ্টান করে দেয় অথবা অগ্নি উপাসক করে দেয়।” পরিবার হলো, একটি শিশুর জীবন গড়ার প্রাথমিক পাঠশালা। এ পাঠশালার পাঠ্য তালিকায় যে ধরনের বই সিলেকশন করা হবে, শিশুর জীবনের ভীত রচিত হবে সে সিলেবাসেরই উপড়। এ জন্য পরিবারের শক্তিশালী দু’জন সদস্য পিতা ও মাতার গুরুত্ব অপরিসীম। পিতা-মাতা যে ধরনের আচরণ, কথা-বার্তা ও কাজ-কর্ম করেন, ছেলে-মেয়ে সে সব অনুসরণ করতে শেখে।
ছেলে-মেয়েরা তাদের জীবনের মডেল হিসাবে পিতামাতাকে গ্রহণ করে থাকে। তাই অনুকরণ প্রিয় শিশুর পিতা-মাতা যদি ব্যাক্তিগতভাবে সৎ, আলাহভীরু ও ইসলামী অনুশাসণের পূর্ণ অসুসারী হন এবং পারিবারিক পর্যায়ে আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসুল সঃ প্রদর্শিত পন্থায় পরিবেশকে গড়ে তুলেন, তাহলে তাদের সন্তানেরাও সেভাবেই গড়ে উঠবে। ছেলে-মেয়েদের নৈতিক চরিত্র গঠণ করা পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের মৌলিক অধিকার। এ অধিকার থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করা সুষ্পষ্ট জুলুম তথা বে-আদবী হিসাবে বিবেচিত হবে। আল্লাহ তা’আলা বলেন: “ তোমাদের নিজেদেরকে ও পরিবার পরিজনকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করো।”(আল-কুরআন)
রাসুল সঃ বলেছেনঃ “সুন্দর নৈতিক চরিত্র ও শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়ার চাইতে উত্তম কিছুই মা বাপ সন্তানদের দান করতে পারে না।”(তিরমিযি) আবু দাউদে বর্ণিত যে, হযরত রাসুল সা: বলেছেন: কোন বালকের সাত বৎসর বয়স হলেই তাকে নামাযের আদেশ দাও। আর দশ বৎসর বয়স হলে সে জন্য প্রহার করো ও বিছানা আলাদা করে দাও।” প্রত্যক্ষ করু আল-কুরআনের সুরা লোকমানে একজন আদর্শ পিতা তাঁর ছেলে কিভাবে উপদেশ দিচ্ছে :- “স্মরণ করো যখন লোকমান নিজের ছেলেকে উপদেশ দিচ্ছিল, সে বললো ‘হে পুত্র ! আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না। যথার্থই শিরক অনেক বড় জুলুম।”(সুরা লোকমান : ১৩)
পক্ষান্তরে এ দু’জন যদি বিকৃত স্বভাব, কুরুচি মনের অধিকারী হন। আধুনিক ও প্রগতিবাদী সাজার অভিপ্রায় নিয়ে পাশ্চাত্যের উশৃংখল আচার-আচরণ,কথা-বার্তা ব্যক্তিগত ও পরিবারিক পরিসরে চালু করেন, তবে তাদের পরিবারটি পশুর খোয়ারে পরিণত হবে। সেখানে শ্রদ্ধাবোধ,লজ্জা-শরম, প্রেম-প্রীতি ও ভালবাসার পরিবর্তে বেয়াদবী, বেহায়াপনা, অশ্লীলতা ও উশৃংখলতা ব্যাপকহারে চালু হবে। পিতা-মাতা যদি এমনটি করেন তবে সন্তানের সাথে এটি বেআদবীই করা হবে।
এমনিভাবে একজন ছাত্রের আদর্শবান ও চরিত্রবান হওয়া বলতে বুঝায় নিজের ক্যারিয়ার উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করা। এ জন্য নিয়মিত স্কুলে যেতে হবে। সময়ানুবর্তিতা ও নিয়মানুবর্তিতার প্রতি দৃষ্টি রাখবে। যে কোন পড়া বুঝে পড়বে। শিক্ষার মাধ্যমে মানসিক, নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও শারীরিক যোগ্যতা অর্জনের প্রয়াস চালাবে। শিক্ষককে সম্মান ও শ্রদ্ধা করবে। নিষ্কলুষ চরিত্র গড়ে তুলবে। ছাত্রদের মাঝে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দেবে। বিনম্র স্বভাব গড়ে তুলবে। এ গুলো একজন ছাত্রের ছাত্র জীবনের আদব। এ আদব ছাত্র জীবনের চারিত্রিক সৌন্দর্যকে বিকশিত করে।
একজন মু’মিন ব্যক্তির তার দৈনন্দিন প্রতিটি কথা ও কাজের আদব রয়েছে। এ আদব রক্ষা করে চললে সুন্দর সুন্দর গুণবৈশিষ্ট্য ফুলের মতো ফুটে উঠবে তার চরিত্রে। দৈহিক সৌন্দর্য থেকে শুরু করে তার প্রতিটি আচরণে, পরিবার থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক জীবনে এ সৌন্দর্য পরিব্যাপ্তি লাভ করবে। দুনিয়াবাসী তার এ সৌন্দর্যে মোহিত হবে। তাদের উদার, মহত, অমায়িক জীবন মানুষকে নিয়ে আসবে ইসলামের কাছাকাছি। এ জন্যই আল্লাহ মুসলিম জাতিকে শ্রেষ্ঠ উম্মাহ বলেছেন। “তোমরাই শ্রেষ্ট জাতি, তোমাদেরকে প্রেরণ করা হয়েছে মানবতার কল্যাণে।
তোমরা ভালো কাজের আদেশ দিবে, মন্দ কাজের নিষেধ করবে।” মানুষের জন্য যা সুন্দর, যা মানুষের স্বভাব চরিত্রকে সুন্দর করে তুলে, যা মানুষের জন্য কল্যাণকর তা চালু করা, পক্ষান্তরে যা মানুষের জন্য অকল্যাণকর, যা মানুষের চরিত্রকে কুলষিত করে সমাজ থেকে তার উচ্ছেদ ঘটাতে হবে।
সৎচরিত্র বা ইসলামী আদবের আর এক নাম হলো ‘আমলে সালেহ’। যেমন আল্লাহ ত’আলা বলেন:“ যারা ঈমান ও আমলে সালেহ বা নেক আমল করে হাযির হবে, তাদের আমরা এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবো, যার নিচে নহরসমুহ প্রবাহমান। আর সেখানে তারা চিরদিন থাকবে।” (সুরা নিসাঃ১২২) এর বিপরীত হলো বদ আমল।
যারা মন্দ আমল করে এদেরকে আল কুরআনে সীমালংঘনকারী বা আল্লাহদ্রোহী হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “জাহান্নাম একটি ঘাঁটি, সীমাঙ্ঘনকারী বা আল্লাহদ্রোহীদের ঠিকানা। তাতে তারা অবস্থান করবে যুগ যুগ ধরে। সেখানে তারা ঠাণ্ডা ও পানোপযোগী কোনো জিনিষের স্বাদ আস্বাদন করতে পারবে না। সেখানে তাদের খাদ্য হবে উত্তপ্ত পানি আর ক্ষতের রক্ত।”(সুরা নাবাঃ২১-২৫)
সুতরাং আমাদের প্রত্যেককে সুন্দর চরিত্র গঠণ করতে হবে। আল্লাহর পথের দায়ীদের জন্য এটি অপরিহার্য বিষয়। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ“ভালো ও মন্দ কখনো সমান হতে পারে না। মন্দ প্রতিহত কর ভালো দ্বারা। ফলে তোমার সাথে যার শুত্রুতা আছে সে হয়ে যাবে অন্তরংগ বন্ধুর মত।”(হা-মীম আস সাজদা : ৩৪) সুন্দর চরিত্রের অধিকারীকে সকলেই ভাল জানে, ভালবাসে। আর আখিরাতের সুবিশাল জীবনের সকল নিয়ামাত সুন্দর চরিত্রের অধিকারীর জন্যই অপেক্ষা করছে।
Posted ৬:৫৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh