এসএম জাহাঙ্গীর : | শুক্রবার, ০১ জুলাই ২০২২
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ, অর্থাৎ ‘পারমাণবিক যুদ্ধ’ বুঝি একেবারেই নিকটে; যার ফলে খাদ্যাভাবসহ বিভিন্ন কারণে মারা যাবে বিশ্বের লক্ষ কোটি মানুষ। বিজ্ঞানের অগ্রাধিকারের এই যুগে মানুষের চোখে পৃথিবীটা এখন আসলেই ছোট্ট একটি গ্রাম-সম বৈকি। তাই তো কোথাকার কোন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে নিয়েও আজ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি প্রান্তে অর্থনৈতিক এই বিপর্যয়। এখন এটা প্রায় পরিস্কার যে এই যুদ্ধটা আর মাত্র কয়েকমাস চললেই পৃথিবীতে দুর্ভিক্ষ নেমে আসবে এবং এতে করে মারা যাবে লক্ষকোটি মানুষ – এবং যুদ্ধটা আরো বেশি দীর্ঘায়িত হলে তো পারমাণবিক যুদ্ধ নির্ঘাত। শুধু তাই নয়, পারমাণবিক অস্ত্রের মালিক বিশ্বের সুপার পাওয়ার গুলোর মধ্যে “কে বেশি বড় অর্থাৎ বিশ্বকে লুটেপুটে কে কিংবা কারা খাবে এই শ্রেষ্ঠত্ব প্রমানের যুদ্ধে” আসলে শেষ পর্যন্ত যে মানব-সভ্যতাই ধংস হয়ে যাবে সেটাও যেন আমরা আজকে ভুলেযাচ্ছি প্রায়।
গভীরভাবে ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা সবাই কমবেশি বুঝি বা উপলব্ধিও করি যে; “রাজা-রাজ্য, এবং আইন-পুলিশ বিহীন আদি-বিশ্বে ততকালীন ধর্মগুরুরা বিশ্বসভ্যতা নিয়ে ভাবনায় মশগুল কিছু ‘দার্শনিক টাইপের মহামানুষ’ কর্তৃক ‘ধর্ম’ নামক এই ব্যাপার গুলোকে পৃথিবীতে এনেছিলেন প্রাকৃতিক শক্তির ভয় দেখিয়ে মানুষকে সুশৃঙ্খল করার শুভ-অভিপ্রায় নিয়েই।। আর তাইতো প্রায় প্রতিটি ধর্মেই মানুষের কল্যান এবং শান্তির বানী সন্নিবেশিত । কিন্তু পরবর্তীতে বিশ্বের টাউট রাজনীতিবিদরা এবং তথাকথিত ভুয়া অতি’নগন্য সংখ্যক কিছু ধর্মগুরুদের যোগসাজশে রাজনীতিতে এই ধর্মকে ব্যাবহার শুরু করা থেকেই কিন্তু বিশ্বে আজকের এই অশান্তির সূচনা। আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করলে দেখতে পাই বিশ্বের বড়বড় যুদ্ধ গুলোও কিন্তু “ক্ষমতা, ধনসম্পদ এবং শুধুমাত্র ধর্মবিশ্বাসের মারপ্যাচের মধ্যেই জড়িয়ে আছে। কিন্তু আমরা যদি আরো বেশি গভীরে গিয়ে লক্ষ্য করে উপলব্ধি করার চেষ্টা করি তাহলে তখন এটা পরিস্কার ভাবেই বুঝা’যায় যে এই ‘ধর্মধর্ম’ খেলাটা আসলে শুধুই হাতে গুনা কিছু রাজনীতিবিদ এবং হাতে গুনা কিছু ধর্মগুরু কতৃক’ই ঘটছে মাত্র। হুম এটাও সত্যি যে এর মধ্যে কেউ আসল সত্যটা বুঝেই – আর কেউবা সেটা না-বুঝেই এটা করছে।
তাই তো কিছু কিছু কমিউনিস্ট নেতা ধর্মকে আফিমের সাথেও তুলনা করার চেষ্টা করেছেন – কেননা এটা পরিস্কার করে বলা যায় যে – ওদের অন্ত চক্ষুতেই দেখা হয়ে গেছে যে ; এখনকার বিশ্বে তথাকথিত সভ্যজাতি বলে প্রচারকারী এই ইউরোপীয়ানরা ‘ধর্ম যুদ্ধের নামে কয়েকশ বছর ধরে ক্রুসেডের যুদ্ধটি’ চালিয়ে যে শিক্ষা পেয়েছেন বলে যতই ওরা দাবি করছেন – তবে অন্তরে যে ওদের এখনো সেই ধর্মান্ধতাই জাগরূক হয়ে আছে সেটা কিন্তু ইজরায়েল-ফিলিস্থিন ইসুতে আজও প্রমানিত হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধও যে এর বাইরে চলে যাচ্ছে তা কিন্তু নয়। যদিও বড় মোড়ল কতৃক ক্ষমতা হারানো তথা অর্থনৈতিক চাপে পরার ভয়ে অনেক দেশ’ই এখনো খুব সংগোপনেই যুদ্ধের পক্ষ- বিপক্ষ নিচ্ছেন – তবুও কিন্তু এটা দিনকে দিন প্রায় পরিস্কার’ই হয়ে আসছে বৈকি।
এটাও সত্যি যে (পারমাণবিক অস্ত্র তো বটেই) যতই আধুনিক অস্ত্র আবিস্কৃত হউক না কেন এসব অস্ত্র তো পরিচালনা করতে হয় শেষ-অব্দি বিশ্বের এই মানুষ গুলো’কেই। ইজরায়েলের মত ধর্মান্ধ ছোট ছোট জনসংখ্যার দেশগুলো যতই “ডিভাইড এন্ড রুল” (এটা এখন একেবারেই পুরোনো এবং প্রায় অচল তত্ত্ব) তত্ত্বে বিশ্বাস করুক না কেন – বড়বড় মোড়লরা সহ আমরা সবাই কিন্তু এখন’ই ভাবতে হবে যে ; রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তথা ‘নুপুর শর্মার’ ধর্মযুদ্ধ-তত্ত্বের (নামে আসলে ভোটযুদ্ধের) বেলায়ও যে এই “সারাবিশ্বের-জনসংখ্যা তথা জনশক্তির” মত এই ব্যাপারটা’ও সাথে যোগ হয়ে শেষমেশ এই বিশ্বে বড়-ধরনের একটা নতুন রকমের বিপর্যয় ঘটাবে – সেটা ভুলে গেলেও কিন্তু আমাদের চলবে না।
এটাও ভাবলে চলবে না যে ; বিশ্বের সবচাইতে বেশি পারমাণবিক বোমার সত্ত্বাধিকারী (মালিক) রাশিয়া কিংবা চায়না জোট কখনো এমনি এমনিতেই হার মেনে ঘরে ফিরে গিয়ে চুপটি মেরে বসে থাকবে।
Posted ২:১৭ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০১ জুলাই ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh