চৌধুরী মোহাম্মদ কাজল : | বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৩
মোহামেদ মুইজু মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। মালদ্বীপের রাজনীতিতে তিনি চীনপন্থী ও ভারত বিরোধী হিসেবে পরিচিত। নির্বাচনে পরাজিত হয়ে বিদায় নিয়েছেন ভারতপন্থী রাস্ট্রপতি। মুইজু নির্বাচনে জয়লাভ করেই মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সৈন্য সরিয়ে দেওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন।
নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। কোন রাস্ট্রই নিজদেশে বিদেশী সেনার উপস্থিতি পছন্দ করেনা। কিন্তু মালদ্বীপেও দক্ষিন এশীয়ার অন্যান্য দেশের মত ভারত একটি দালাল শ্রেনী তৈরী করে রেখেছে। ওরাই ভারতীয়দের এই সুযোগটা তৈরী করে দিয়েছিল। তাই ব্যাপারটা মুইজুর জন্য খুব সহজ নাও হতে পারে।
দক্ষিন এশীয়ার রাজনীতিতে একটা কথা আছে ভারত যার বন্ধু তার কোন শত্রুর প্রয়োজন নেই। কারন সামরিকদিক দিয়ে অত্যন্ত শক্তিশালী এই রাস্ট্রটির জনগনের অবস্থা খুবই করুন। তাই আশপাশের দরিদ্র দেশগুলিকে শোষন না করে ভারতের উপায় নেই। যেমন বাংলাদেশের কথাই ধরা যাক। বর্তমানে বাংলাদেশ ছাড়া এ অঞ্চলে ভারতের আর কোন বন্ধু নেই। সেই বাংলাদেশকে তারা কতভাবে শোষন করছে। দক্ষিন এশীয়া উপমহাদেশের আর এক হিন্দু রাস্ট্র নেপালও ভারতকে পছন্দ করেনা। সেখানেও ভারতের দালালরা মাঝ মধ্যে ক্ষমতায় আসে। নেপালে একটি গনতান্ত্রিক পরিবেশ থাকায় ভারতপন্থীরা ক্ষমতায় আসলেও এক সময় সরে যেতে হয়। মালদ্বীপের মত সেখানেও রাজা আসে রাজা যায়।
মোহামেদ মুইজু উচ্চ শিক্ষিত। মেধাবী প্রকৌশলী। দীর্ঘদিন আবাসন ও পরিবেশ মন্ত্রী ছিলেন। মালদ্বীপের অর্থনীতি ও যোগযোগ ব্যবস্থাকে বদলে দেওয়া সিনামালে সেতু তৈরীতে তার ভূমিকা আছে। প্রথম যখন এই সেতুটি বানানোর পরিকল্পনা হয় মালদ্বীপের ভারতপন্থী সাবেক রাস্ট্রপতি মোহাম্মদ নাশিদ ও তার দল এর বিরোধিতা করেছিল। এখন মালদ্বীপের জনগন এর সুফল পাচ্ছে। এবার রাস্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে মুইজু তার দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে সবাই আশাবাদী। কিন্তু ভারতের নাকের ডগায় বসে ভারতের স্বার্থের পরিপন্থী পদক্ষেপ কি তিনি নিতে পারবেন। নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত বর্তমানে আগের চেয়ে অনেক বেশী শক্তিশালী, অনেক বেশী আগ্রাসী। ভারত কানাডার সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বের কথাই ধরা যাক। এতদিন ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র এর উৎপাত পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আশেপাশের কয়কটি দেশেই সীমাবদ্ধ ছিল। এখন ওরা কানাডাতেও অভিযান পরিচালনা করে। কানাডার মাটিতে অঘটন ঘটিয়ে আবার কানাডাকেই গালমন্দ করছে। এতে বোঝা যায় ভারত বর্তমানে কতটা বেপরোয়া।
নরেন্দ্র মোদী ইংরেজীতে দুর্বল হলেও পাশ্চত্যের ওপর প্রভাব বিস্তার করার মত ক্যারিশমা তার আছে। হিটলারের মত ভারতে ফ্যাসিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন। মোদীর শাসনামলে ভারতে মুসলমান নির্যাতন অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশী। কিন্তু বিশ্বনেতৃবৃন্দ নিশ্চুপ। তাই মুইজুকে কৌশলী হতে হবে। পদক্ষেপ নিতে হবে ধীরেসুস্থে। ভারত তার আঙ্গিনায় চীনের উপস্থিতি সহ্য করতে চাইবে না। চালে ভুল করলে মালদ্বীপের অবস্থা ইউক্রেনের মত হয়ে ওঠতে পারে। তখন কিন্তু মুইজু কাউকে পাশে পাবেন না। আবার জাতীয় স্বার্থে পিছিয়ে আসলেও চলবে না। রক্ষা করতে হবে জনগনের স্বার্থ। এটি তার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরনে অনেক ঝড় ঝাপটা সহ্য করতে হবে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রকৌশলী মুইজুকে আরও বেশী সুকৌশলী হতে হবে। আশা করি তিনি পারবেন। সুভকামনা রইল মালদ্বীপবাসীর জন্য।
Posted ১২:২৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh