রবিবার, ১১ মে ২০২৫ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

রাষ্ট্রীয় নজরদারি

ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ   |   বৃহস্পতিবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২২

রাষ্ট্রীয় নজরদারি

রাষ্ট্রের কল্যাণে প্রজারঞ্জক রাজা বা শাসক কর্তৃক নজরদারির ব্যবস্থার কথা নিয়ে অনেক কাহিনী আছে যা শিক্ষণীয়। খলিফা হজরত ওমর, হযরত আলী, হারুন উর রশিদ তারা নাকি ছদ্মবেশে মাঝেমধ্যে প্রজাদের ভাল-মন্দ স্বচক্ষে দেখার জন্য বাজারে-গঞ্জে ঘুরে বেড়াতেন । ইতিহাসে বেস ক’জন অমাত্য, সাধু-সজ্জন পণ্ডিতের কথা জানা যায় যারা তথ্য সংগ্রহের জন্য গুপ্তচর নিয়োগ করার ব্যাপারে জোরালো যুক্তির অবতারণা করেছেন। প্রধানত দ্বিবিধ কারণে তা করা হতো : ১. অন্যায় অবিচারে তথ্য নিয়ে তার প্রতিকার করা, এবং ২। রাজা ও রাজ্যের অনিষ্ট সাধনে রত আভ্যন্তরীণ ও বহির্দেশীয় বা প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর উপর নিরন্তর নজরদারি করা । খ্রিস্টের জন্মের চার শতাব্দী পূর্বে ভারতের সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের প্রধান অমাত্য অর্থশাস্ত্র প্রণেতা কৌটিল্য এবং চীন দেশের নীতিশাস্ত্রের সুপণ্ডিত সান জু (Sun Tzu) রাষ্ট্রীয় নজরদারি নিয়ে যে সুক্ষাতিসূক্ষ্ম বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন তা আজো সংশ্লিষ্ট মহলে সমাদৃত।

ভারতে গুপ্তচর সংস্থা র’ চরদের কৌটিলীয় কৌশল এর উপর প্রশিক্ষণ দেয় খুব যত্নের সাথে । কৌটিল্যয় সমাহর্ত নামক রাজপুরুষের কথা বলেছেন যার প্রধান কাজ ছিল গুপ্তচর নিয়োগ করে রাজা ও রাজ্যের বিরুদ্ধাচরণ করে যারা তাদের চিহ্নিত করা এবং শাস্তি বা দণ্ড প্রদান নিশ্চিত করা। এরা আভ্যন্তরীণ ও বহির্দেশীয় ষড়যন্ত্র , রাজার প্রাণনাশ পরিকল্পনা ইত্যাদি সমুদয় তথ্য যথাযথ চ্যানেলে সমাহর্তার কাছে পৌঁছায়। সত্রি নামক গুরপুরুষ গুপ্তচরদের উপর নজরদারি করেন । কৌটিল্য সিদ্ধ, তাপস, প্রবিজিত (সন্ন্যাসী), চক্রকর এরকম অন্তত চব্বিশ ধরনের গুপ্তচরের কথা বলেছেন । কৌটিল্য অবস্থা বিবেচনা করে শত্রুকে (বিশেষত ষড়যন্ত্রকারী রাজার পরিবারের কেউ হলে) বিষ প্রয়োগে প্রাণনাশের কথা বলেছেন।

চীনের কূটনীতি শাস্ত্রবিদ সান জু মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন । তাঁর তত্ত্ব অদ্যাবদি চীনের সমর বিদ্যা, বিশেষত সামরিক গুপ্তচর সংক্রান্ত অধ্যয়ন ও গবেষণায় ব্যবহৃত হচ্ছে । সান জু’র অভিমত হোল যুদ্ধে জয়লাভ কখনো সম্ভব নয় যদি যথাযথ ভাবে মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স কৌশলের প্রয়োগ করা না হয় । মূলত যে সমস্ত গুপ্তচর ভিত্তিক কার্যাবলীর কথা বলেছেন শে গুলো হলো : ১। লুক্কায়িত সংবাদ প্রদানকারী ; ২। শত্রু শিবিরে গোপনে অবস্থানকারী এজেন্ট; এবং ৩। বিভ্রম সৃষ্টিকারী চর । তিনি বেশ কিছু কৌশলের কথা উল্লেখ করেছেন যা বর্তমানে ও ব্যবহার করা হয় । আমরা হামেশাই কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স, ডাবল এজেন্ট, স্নায়ুযুদ্ধ ইত্যাদি কৌশলগুলোর কথা শুনি যা সেই সুপ্রাচীন কালে সান জু গুরুত্ব সহকারে আলোচনা এবং সমর বিশারদদের, প্রশিক্ষকদের ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন ।

মানব সভ্যতার ইতিহাসে শত্রু দমনে গুপ্তচরদের ব্যবহার সব সময়েই হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলদেশের র‍্যাব বাহিনীর বেস কিছু কার্যাবলীকে মানবতা বিরোধী বলে যুক্তরাষ্ট্র র‍্যাবের বর্তমান ও সাবেক সাত কর্মকর্তার উপর যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা কতটা যুক্তিযুক্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনার অবকাশ আছে। তবে কিছু সত্য মনে রাখলে বলতেই হয় যে নিষেধাজ্ঞা অচিরেই তুলে নেয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। ১। ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশ বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় আছে যা যুক্তরাষ্ট্রকে এই ছোট দেশটিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করতেই হবে ; ২। সন্ত্রাসবাদ দমনে দেশ দুটি একই নীতিতে বিশ্বাস করে । ভারতে সেভেন সিস্টার্স খ্যাত রাজ্যগুলোতে সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশর ভূমিকা যুক্তরাষ্ট্র সহ অনেক দেশই প্রশংসার চোখে দেখে। এ প্রাসংগিক মূল্যায়ন ও বাংলাদেশের পক্ষেই যাবে ; ৩। কালক্ষেপণ না করে বাংলদেশ যে ভাবে সম্পর্ক উন্নয়ন করে নিষেধজ্ঞা প্রত্যাহারের চেষ্টা করছে তা ফলপ্রসূ হবে বলেই মনে হয়। বাংলাদেশ ভাল ভাবেই উপলব্দি করে যে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পের অন্যতম ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষেপানো ঠিক হবে না। তাছাড়া, ভারত-চীন এ দু দেশের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যাল্যান্স রাখতে যুক্তরাষ্ট্র ফ্যাক্টরটি বাংলাদেশর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বাস্তবতাটি ধর্তব্যের মধ্যে নিয়েই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে। উল্লেখ্য যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিচারণ মনোভাবের সমালোচনা করে বলেছেন যে একদিকে খুনি রাশেদকে আশ্রয় দিয়েছে আবার সবক ও দে ভিন্ন সুরে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলদেস্র রিজার্ভ সরিয়ে নেয়া প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহমুদুল হাসানের দেয়া নোটিস সরকার ধর্তব্যের মধ্যে নেয়নি বলেই মনে হচ্ছে । অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নয়ন শুধুমাত্র সময়ের ব্যাপার ।

Posted ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২২

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

গল্প : দুই বোন
গল্প : দুই বোন

(7886 বার পঠিত)

স্মরণে যাতনা
স্মরণে যাতনা

(1463 বার পঠিত)

মানব পাচার কেন
মানব পাচার কেন

(1266 বার পঠিত)

আত্মঅহমিকা
আত্মঅহমিকা

(895 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: weeklybangladesh@yahoo.com

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.