ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ : | বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪
সৃষ্টির শুরু থেকেই হানাহানি, খুন জখম চলে আসছে। মানুষ সমস্ত সৃষ্ট জীবের মধ্যে হিংসা বিদ্বেষ, পরস্পরের বিরুদ্ধে শত্রুতা, দখল মনোবৃত্তি ইত্যাকার দোষে সবচেয়ে দোষী। দর্শন, ধর্ম শাস্ত্রে এর উল্লেখ চোখে পড়ার মত। ক্ষমতাবান মানুষ দুর্বলকে নিত্য প্রতিহত করে জমিজমা, নারী, জনপদ, রাজ্য দখল করে আধিপত্য বিস্তার করে শাসন, শোষণ নানান কায়দায় করেই আসছে। রক্তের সম্পর্ক, পাড়া-প্রতিবেশী, স্বধর্মের অনুসারী কোন কিছুই মানুষের ক্ষমতা বিস্তার, দখল মনোবৃত্তি, প্রতিহিংসা এসব দমিয়ে রাখতে পারে না। থমাস হবস তাঁর গ্রন্থ ‘লেভিয়াথান’ এ তাঁর রাজনৈতিক দর্শন বিধৃত করে বলেন যে মানুষ প্রকৃতিগত ভাবেই হিংস্র।
এ জাতটি রাজনৈতিক জানোয়ার। হবসসহ সকল সামাজিক চুক্তি/দর্শন এর প্রবক্তা, লক, রুশো এবং আরও অনেকেই মানুষের প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণের প্রকৃষ্ট মাধ্যম হিসেবে রাষ্ট্রের আবশ্যকতার কথা বলেছেন; রুশো এক ধাপ উপরে ওঠে প্রকৃতি থেকে শিক্ষা নিতেও বলেছেন।
বর্তমান সময়ে হিংসা, দ্বেষ, হানাহানি উল্লম্ফনে বিশ্বের বেশ কটি দেশের মধ্যে যুদ্ধ এবং যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। সাংঘাতিক এক অশান্ত অবস্থা সারা বিশ্ব জুড়ে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ যে কোন সময় লেগে যেতে পারে। এমন ক্রান্তিলগ্নে যুদ্ধ লেগে আছে এমন স্পটগুলো নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করার প্রয়াস থেকে এ লেখা।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন আগ্রাসনের মাধ্যমে ক্ষমতার বলয় বিস্তারে বিশ্বাস করেন। ছলে বলে কৌশলে পুতিন সোভিয়েত ইউনিয়নের বেশ কিছু রাষ্ট্র প্রভাবের বলয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। উল্লেখযোগ্য হল ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারী এবং মার্চ মাসে ক্রিমিয়া আক্রমণ করে ইউক্রেনের কাছ থেকে এ উপদ্বীপটি দখল করে নেয়া। সে সময়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন বারাক ওবামা। তার নিষ্ক্রীয়তাকে কাজে লাগিয়েছেন রাশিয়ার স্পাইমাস্টার পুতিন।
উল্লেখ্য, ইউক্রেন সমগ্র ইউরোপে রাশিয়ার পরেই সর্ববৃহৎ দেশ। জাতিসংঘ আপত্তি দিলে পুতিন পাত্তাই দেয়নি। ক্ষমতার শূন্যতা এ ক্ষেত্রে সাম্রাজ্য বিস্তারের মানসিকতা পোষণকারী পুতিন কাজে লাগিয়েছে । যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো জোট ভুক্ত দেশগুলো হম্বিতম্বি করলে ও রাশিয়ার আগ্রাসন রোধ করতে পারেনি।
রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক দেয়া হয় সত্যি তবে তা তেমন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি । রাশিয়া তার প্রভাবের বলয়ে থাকা দেশগুলোর সহায়তায় এ অবরোধকে অনেকাংশে অকার্যকর করে ফেলতে সমর্থ হয় । যুক্তরাষ্ট্রের নমনীয় ভূমিকাও এক্ষেত্রে রাশিয়া কাজে লাগায়। ক্রিমিয়া কুক্ষিগত করার কয়েক মাসের মধ্যেই পুতিন তাঁর আগ্রাসন অপ্রতিরোধ্যভাবে চালিয়ে যায় এবং ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের শিল্প এলাকা ডনবাস সহ আরও দুটো শহর দখল করে নেয়। (চলবে)
Posted ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh