ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ | বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪
(তৃতীয় অংশ) : বর্তমান সময়ে মূল দুই প্রার্থীই বেশ বেকায়দায় আছেন। প্রাক্তণ প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান পার্টির অবিসংসিত নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প হ্যাস মানি পেমেন্ট ক্রিমিনাল মামলা নিয়ে ঘরে-বাইরে দারুণ অশান্তিতে আছেন। আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবারের মত কোন প্রেসিডেন্ট কোর্টে ক্রিমিনাল অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি। বিচারকের কাছ থেকে বিচার নিয়ে জড়িত যারা তাদের, এমনকি তাদের পরিবার- পরিজনদের উদ্দেশে বেফাঁস কথাবার্তা, প্রচ্ছন্ন হুমকি-ধামকি প্রদানের কারণে দশ হাজার ডলার জরিমানা করেই ক্ষান্ত হননি, কেস চলাকালীন সময়ে এমন অশালীন, বেআইনী কর্মকাণ্ডের জন্য কারারুদ্ধও হতে পারে বলে হুশিয়ার করে দিয়েছেন।
মামলাটি বর্তমানে যে পর্যায়ে আছে তাতে মনে করার সঙ্গত কারণ আছে যে এটি আরও পাঁচ-ছয় সপ্তাহ চলবে। মামলার খাতিরে সময় ক্ষেপণ হওয়ার কারণে প্রাক্তণ প্রেসিডেন্টের নির্বাচন প্রচারণার কাজ দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন জোরেশোরে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন, ট্রাম্পের সাথে সামনা-সামনি বাকযুদ্ধে বা ডিবেটে ও অবতীর্ণ হওয়ার ইচ্ছেও প্রকাশ করেছেন। নির্বাচনের জন্য তহবিল সংগ্রহেও তিনি এগিয়ে আছেন।
তবে, ট্র্যাম্প অর্থ সংগ্রহে দারুণ পারঙ্গম। দলের সমর্থক মেগা দাতাদের একটা বড় অংশ ফসিল অয়েল এবং অন্যান্য খনিজ দ্রব্য অবাধে উত্তোলন, কয়লা ও জ্বালানি তেলের ব্যবসা, কয়লার নিরন্তর ব্যবহারের পক্ষপাতী যারা তাদের কাছে ট্রাম্প নির্বাচন কাজে ব্যবহারের জন্য এক বিলিয়ন ডলার দাবী করেছেন। বিনিময়ে, নির্বাচিত হলে বাইডেন, এমনকি বারাক ওবামার আমলে জলবায়ু পরিবর্তন সংশ্লিষ্ট নির্দেশাবলী, বিধিমালা বাতিল করে দেবেন এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ।
জো বাইডেনকে বর্তমান সময়ে বড় ধরনের সমস্যা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। প্রসঙ্গত বলতে হয়, ইহুদি জনগোষ্ঠী হল আমেরিকায় সবচেয়ে ধনী সম্প্রদায় এবং দারুণ প্রভাবশালী। বড় বড় ব্যবসা বাণিজ্য, উল্লেখ্য করার মত পত্র-পত্রিকা এবং বিভিন্ন প্রচার যন্ত্র, মাধ্যম এসবের সিংহ ভাগ ইহুদি মালিকানায়। বাইডেন ইহুদিদের কাছে প্রিয় প্রেসিডেন্ট ছিলেন কারণ তিনি হামাস এবং ইয়ামেনী বিদ্রোহী দল এবং ইরান সমর্থিত সিরিয়া এবং লেবানন ভিত্তিক হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছিলে। লোহিত সাগরে যুদ্ধ জাহাজ, যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য নিরন্তর গোলা বারুদ, বোমা সহ বিন্ন প্রকার অস্ত্র সরবরাহ, এমনকি ইয়ামেনি রকেট বিধ্বংশ সহ অনেক অপারেশনে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ গ্রহণ করেছে।
জাতিসঙ্গে ফিলিস্তনিদের আলাদা, স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণার জাতিসঙ্গের উদ্যোগে ভেটো দিয়েছে। ইসরায়েলে আমেরিকান অর্থ ও অন্যান্য সাহায্য প্রেসিডেন্ট বাইডেন শুধু অব্যাহত রাখেননি, বহু পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। খোলামেলা এ রকম সাহায্য সহযোগিতা এ দেশে বসবাসরত মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমান, খ্রিস্টান, এমনকি আরব বংশোদ্ভুত ইহুদিদের ও সাংঘাতিক রকম নাখোশ করেছে। তাদের প্রতিবাদ আন্দোলনের রূপ পরিগ্রহ করলে ডেমোক্রেটিক দল এবং বাইডেনের প্রতি তাদের সমর্থনে ধস নামে।
যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইসরায়েল বিরোধী প্রতিবাদ অব্যাহত ভাবে চলতে থাকে। বাইডেন এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এ দুজনের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে সম্পর্কের অবনতি ঘটছে, দুজনের মধ্যেকার দূরত্ব বাড়ছে। ইসরায়েলের প্রতি বাইডেনের এহেন ক্ষুব্ধ আচরণ, প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা আমেরিকার প্রতাপশালী ইহুদি নেতারা মোটেও ভাল চোখে দেখছেন না।
এমন একজন হলেন ডেমোক্রেটিক মেগা ডোনার বা নিরন্তর দাতা এবং ইসরায়েলি-আমেরিকান নাগরিক হাইম চাবান। গত ফেব্রুয়ারি মাসে লস এঞ্জেলেসে তার বাসায় বাইডেনের পুনরায় নির্বাচনের সপক্ষে ফান্ড সংগ্রহের জন্য সভা করেছেন। প্রায় মাস তিনেকের ব্যবধানে তিনি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ইসরায়েল বিরোধিতার বিষয়টি নিয়ে দারুণ রাগান্বিত হয়েছেন।
প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তিনি বলেন, Bad, Bad, Bad, decision, on all levels, Pls reconsider,” বেশ কিছু পত্রপত্রিকায় তিনি এমন বার্তা পৌঁছে দেন। আরও যোগ করে বলেন,Let ‘s not forget that there are more Jewish voters, who care about Israel, than Muslim voters that care about Hamas. (Alex Thompson, Barak Ravid, in AXIOS, May 10, 2024)”।
Posted ৪:৪৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh