আশরাফ উদ্দিন আহমেদ | বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩
পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বিনিয়োগ (Invest in the Planet) এ বছরের শ্লোগান। ২০২৩ সালের এপ্রিল ২২ তারিখে আর্থ ডে পালন করতে গিয়ে বায়ুদূষণ প্রতিরোধ, ইন্ধন ২০২৩ ইত্যাকার বিষয়রে উপর বিশেষভাবে আলোকসম্পাত করা হয়। সারা বিশ্বে জাঁকজমকের সাথে দিবসটি পালন করা হয়েছে। প্রতি বছর আর্থ ডে’তে কিছু লেখার তাগিদ ও তাড়নায় বহুদিনের। সেই পরম্পরায় এ নাতিদীর্ঘ নিবন্ধটি।
১৯৯৩ সালে ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি-জেনিরোতে আন্তর্জাতিক ধরিত্রী সম্মেলন থেকে যে আশাবাদের স্ফুরন তা কপ২৬ সময়ে ও সুন্দর সুন্দর অঙ্গীকারেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে , ফলোদয় তেমন হয়নি। রিও বিশ্ব সম্মেলনে এজেন্ডা-২১ নামে একটি সনদ প্রকাশিত হয়েছিল। উন্নয়ন নীতিমালার অত্যাবশ্যকীয় অংশ হিসেব অংশগ্রহণকারী প্রায় প্রতিটি দেশ এটি গ্রহণ করে। যুক্তরাষ্ট্র দলিলটে স্বাক্ষর না করলে এর সারবত্তা অনুধাবন করে প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন ১৯৯৩ সালের ১৫ ই এপ্রিল তাঁর পরিবেশ কর্মসূচীর রূপরেখা বর্ণনা করতে গিয়ে বায়ুদূষণ প্রতিরোধ, ইন্ধন কার্যকারিতা ও সৌরশক্তি, নবায়নযোগ্য ইন্ধন, পরিবেশ পুনরুদ্ধার এবং পানি প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে অধিক বিনিয়োগ ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়টিকে খুবই গুরুত্ব সহকারে নিয়েছিলেন। তাঁর চীন সফরকালে চীন এর সাথে এ ইস্যুতে যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয় তা পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে ঐতিহাসিক গুরুত্বের স্হানে সমাসীন থাকে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে সব উলটপালট করে দেন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যা এবং সমাধানের বিষয়কে বিশ্ব ফোরামে এনে অনেক দূর এগিয়ে এনেছেন সত্যি তবে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে অগ্রগতি থমকে গেছে। যুদ্ধ যে ভাবে চলছে তাতে আক্রমণ-প্রতি-আক্রমণে মানুষ ও সম্পদের অপূরণীয় ক্ষয়-ক্ষতি ছাড়া ও পরিবেশ দূষণ বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রতি মুহুর্তে ছডিয়ে যাচ্ছে। এ যুদ্ধ শীঘ্র বন্ধ হওয়ার তেমন কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা বিশ্ব উদার ভাবে ইউক্রেনকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করছে। অন্যদিকে ইরান বিপুল পরিমান ড্রোন সরবরাহের মাধ্যমে রাশিয়ার আগ্রাসনের মদদ দিচ্ছে। চীন এবং উত্তর কোরিয়া ও একই ভূমিকায় অবতীর্ণ আছে । আশার আলো কিছুটা হলে ও দেখিয়েছেন জো বাইডেন। ইউক্রেনকে আশ্বাস দিয়েছেন, ২০২৪ সালে গ্রীন টেকনোলজি বাবদ ৫০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেবেন। ২০২৩ এর শুরুতে এ আশ্বাস পরিবেশ ওজলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বিনিয়োগ করার প্রত্যয় থেকে উৎসারিত – এ কথা সন্দেহাতীত ভাবে বলা যায়।
পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে রাশিয়া, চীন ও ভারত দ্রুত শিল্পায়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সমরাস্ত্র তৈরী এসব খাতে সস্তা জ্বালানী- তেল ও কয়লা ব্যবহার করছে প্রতুলভাবে। জলবায়ু দূষণে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম কাতারের দেশ সত্যি তবে জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশটি বিকল্প জ্বালানী উদ্ভাবন ও ব্যবহারে সচেষ্ট।
যুদ্ধ-বিগ্রহের ডামাডোলে নিমজ্জিত বর্তমান বিশ্বে তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নিয়ে আসার যে আশাবাদ তা উচ্চাশাই রয়ে গেছে সিকি শতাব্দীর ও বেশী সময়ের প্চেষ্টার পর ও।
তবে আশার কথা শত বিপত্তি সত্বেও ব্যক্তিবিশেষের উদ্যোগএবং স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক প্রচেষ্টা ইদানীং সময়ে অনেক বেডে গেছে । সুইডেনের দৃপ্ত প্রত্যয়ী তরুণী নেতা গ্রেটা থানবার্গ এর কাতারে আমরা এখন দেখি পাকিস্তানের আয়েশা সিদ্দিকী প্রমুখ সাহসী যুব নেতা ও কর্মী। আশার কথা, পৃথিবীতে এখন অনেক গ্রেটা থানবার্গ ও আয়েশা সিদ্দিকী পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন ফিল্ডে কাজ করছেন ।
Posted ১:৪১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh