শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

বিনোদন

ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ   |   বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৩

বিনোদন

সমাজবিজ্ঞানে বিনোদন বা মনোতুষ্টি ইংরেজিতে যাকে Recreation বলে তাকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখা হয়। একে বিবেচনা করা হয় সামাজিক শক্তি হিসেবে। চিত্তের প্রফুল্লতা ছাড়া কোন কিছু অর্জন, উপভোগ করা সম্ভব নয়। আত্মতুষ্টির জন্য তো বটেই সামাজিক সংহতি তথা সুস্হ সমাজ বিন্যাস ও বিকাশের ক্ষেত্রে ও সাংগঠনিক বিনোদন ব্যবস্হা দারুণ কাজ করে। বিনোদন মানুষের দৈহিক, মনস্তাতিক প্রয়োজন মেটানো ছাড়া ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে ও ভূমিকা রাখে । বিনোদন, অবসর বা Leisure এ দু প্রত্যয়ের মাঝে ভিন্নতা থাকলে ও একে অন্যের পরিপূরক । বিষয়টি নিয়ে ১৮৯৯ সালে প্রথম Thorstein Veblen ঠবনষবহ বলেছিলেন যে অবসরের সাথে অনুৎপাদনশীলতা জড়িত । গতানুগতিক এই ধারণা এখন বদলে গেছে। এখন সৃষ্টিধর্মী কাজের সাথে অবসরের যোগসূত্র ঘনিষ্ঠ বলে খোদ জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়েছে। একে মানুষের অধিকার জন্মগত। আর্টিকেল ২৪ Human Declaration of Human Right ঘোষণার মাধ্যমে এ ধারণাকে পাকাপোক্ত আসনে সমাসীন করা হয়েছে।

অতীতে কৃষি ভিত্তিক সমাজে ফসলের বিভিন্ন চক্র, যেমন জমি প্রস্তুত করন, সেচ, নিড়ানি, শুকানো, প্রক্রিয়াজাত করা ইত্যাদি সবকিছুতেই বিনোদনের ছোঁয়া থাকতো । ফসল তোলার প্রশান্তি তো উৎসব ছাড়া কল্পনা ও করা যেতো না। বিশ্বের সব সংস্কৃতিতে শষ্য উৎসব জাঁকজমকের সাথে উদযাপন করা হতো। প্রাচীন মিশরীয় , গ্রীস. রোমান, ভারতীয় ও চৈনিক সমাজে শস্য দেব-দেবতার অস্তিত্ব ছিল। কৃষিপ্রধান বাংলা অঞ্চলে বিবাহ, সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব ইত্যাদি ও বিনোদনের মধ্য দিয়েই হতো। বড়ো বডো অনুষ্ঠানের জন্য মসল্লা তৈরী, ধান ভানা ইত্যাদি ও গান-বাজনা, নৃত্য এসবের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করা হতো। নাইওরীর আগমনে ও বিনোদনের আয়োজন থাকতো ।


শুভ, অশুভ সবকিছুকেই উৎসব দিয়ে বরণ করা হতো আবার প্রত্যাখান ও করা হতো। ফসল ভাল হলে যেমন তেমনি ফসলে পোঁকা-মাকড় , পতঙ্গ বা বিভিন্ন ধরণের রোগ-বালাই , বন্যা, খরা ইত্যাদির প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষার জন্য উৎসব সহকারে প্রার্থনা করা হতো । মহামারীর হাত থেকে রক্ষা পেতে ও এমনটি করা হতো। শীতলা পূজা, ওলা পূজা এগুলো অনুষ্ঠিত হতো ভারত উপমহাদেশে। জন্তু জানোয়ারের উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে ও পূজা বা শিন্নি করা হতো। উৎসবের মধ্য দিয়ে এ সব পালন করা একধরণের বিনোদনেরই সমার্থক বললে ভুল হবে না। ঋতু বরণ ও সমারোহের সাথে আয়োজন করা হতো প্রায় সংস্কৃতিতেই। বর্ষাবরণ, বসন্ত বরণ এগুলোতো খুবই প্রচলিত এবং জনপ্রিয় চিত্ত বিনোদন মুলক উৎসব । নৌকাবাইচ, মাছ ধরা এ জাতীয় কাজ ও বিনোদনমূলক।

তীর্থস্থান ভ্রমণ, দেশ ভ্রমণ , কুস্তি প্রতিযোগিতা, ষাঁড়ের লড়াই ইত্যাদি ও বিনোদনের মধ্যে পড়ে। কোন বিশেষ জনগোষ্ঠি দীর্ঘদিন একই কাজে ব্যস্ত থাকলে বিশেষ বিশেষ উপলক্ষ্যে তাদের মনোরঞ্জনের জন্য বিনোদনের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। বাংলাদেশে দুর্গা পূজার সময় যাত্রাগানের বর্ণাট্য আয়োজন এ উদ্দেশ্যেই করা হয় যদিও ধর্মের ব্যাপার ও এতে নিহিত আছে। পারস্পরিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধি এবং সামাজিক সংহতি মজবুত করতে বিনোদন কাজ করে । পশ্চিমা দেশগুলোতে যৌথ পরিবার ব্যবস্হায় ধ্বস নামলে বড়দিন বছরে একবার হলে ও বৃহৎ পরিবারকে একত্রিত করতে ভূমিকা পালন করে । ঈদোৎসব ও একইভাবে পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন দৃঢ করে । বিয়ে-সাদি, পারিবারিক পিকনিক, যৌথভাবে দেশ ভ্রমন ইত্যাদি ও বিনোদনের সাথে সাথে পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন ধরণের খেলাধুলা যা মনে প্রফুল্লতা আনে তা অতীতকাল থেকেই বিনোদনের শ্রেণীভূক্ত। সামাজিক মূল্যবোধ রীতিনীতি মেনে বিনোদন ব্যবস্হা সকল সমাজই সর্বযুগে সমাদৃত ছিলো এখনো আছে। তবে জুয়া খেলা ,বেশ্যালয়ে গমন এমনসব বিনোদন সমাজ মেনে নেয় না । মানুষের মনে, সমাজ চরিত্রে, সংগঠনে যেসব বিনোদন ইতিবাচক প্রভাব ফেলে তাই গ্রহণীয়।


বাংলাদেশে বিনোদন ব্যবস্হা সরকারী, বেসরকারী উদ্যোগে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। সকল শ্রেণীর নাগরিক যাতে উপযুক্ত বিনোদন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ ও উপভোগ তা উপযুক্ত সাংগঠনিক তৎপরতায় পরিচালিত হওয়া বান্ছনীয় । বেশ কিছু বেসরকারী প্রতিষ্ঠান (এনজিও শ্রেণীর) যেমন ব্র্যাক, গ্রামীন ব্যান্কসহ নোবেল বিজয়ী

ড. ইউনুসের উদ্যোগে সৃষ্ট , আশা ও আরো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ও শহরের দরিদ্র মহিলাদের ঘরের বাহিরে আনার উদ্যোগে সাইকেল, মোটর সাইকেল ব্যবহার সহ বহির্মুখী দৃষ্টিভংগী আনয়ন করতে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল তার ফলাফল দেশ ও জাতি ভোগ করছে উদারভাবে । পোষাক শিল্পে মহিলাদের অংশগ্রহণ এমনতরো উদ্যোগ ব্যতীত সম্ভব হতো না। একই যুক্তি খাটে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে খেলাধূলায়, বিশেষত ফুটবল ইত্যাদি ) সুনামের সাথে অংশগ্রহণ। প্রগতির এই যে অগ্রসরমান ধারা তা অব্যহতভাবে চলার জন্য বিনোদন সংস্কৃতির প্রসার ও স্বীকৃতির আশু প্রয়োজন।


advertisement

Posted ১:৪৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৩

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

গল্প : দুই বোন
গল্প : দুই বোন

(6285 বার পঠিত)

স্মরণে যাতনা
স্মরণে যাতনা

(1306 বার পঠিত)

মানব পাচার কেন
মানব পাচার কেন

(1151 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.