বুধবার, ১ মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

বিস্ময় জাগানো কিছু বিশ্ববিদ্যালয়

আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু :   |   বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০২৪

বিস্ময় জাগানো কিছু বিশ্ববিদ্যালয়

ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ড: ছবি-সংগৃহীত

জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা ও বিকাশে বিশ্বের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান আমাদের বিস্মিত করে। এগুলোর মধ্যে আমরা যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ড, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যামব্রিজ, লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিকস; যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি), স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া বার্কেলে, ইয়েল ইউনিভার্সিটি, প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি, কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির নাম উল্লেখযোগ্য।
ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ড:
৯২৮ বছর আগে ১০৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ড (যুক্তরাজ্য) থেকে শিক্ষা অর্জনকারী ৩০ জন ব্রিটিশ নাগরিক যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। এছাড়া বিশ্বের বহু দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছেন। অক্সফোর্ডের সঙ্গে বিভিন্নভাবে সংশ্লিষ্ট ছিলেন, এমন ৮৭ জন এ পর্যন্ত নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, এবং এ ইউনিভার্সিটির সঙ্গে কোনোভাবে সংশ্লিষ্ট ছিলেন এমন ক্রীড়াবিদরা ১৬০ জন অলিম্পিক মেডেল লাভ করেছেন।
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যামব্রিজ: বিশ্বের তৃতীয় প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় ১২০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটির (যুক্তরাজ্য) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন এমন ১২১ জন নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন এবং অলিম্পিক মেডেল পেয়েছেন ১৯৪টি। যেসব খ্যাতিমান ব্যক্তি ক্যামব্রিজের ছাত্র ছিলেন, তাদের অন্যতম ফ্রান্সিস বেকন, লর্ড বায়রন, অলিভার ক্রমওয়েল, চার্লস ডারউইন, স্টিফেন হকিং, জন মিলটন, আইজাক নিউটন, বার্টান্ড রাসেল, ভøাদিমির নবোকভ, জওহরলাল নেহরু।
লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিকস (এলএসই): ১৮৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিকসের (যুক্তরাজ্য ) সাবেক ও বর্তমান ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্য থেকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান হয়েছেন ৫৫ জন, নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ১৮ জন। সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে জার্মান চ্যান্সেলর হেনরিখ ব্রুনিং, কানাডার প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডো ও কিম ক্যাম্পবেল, সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লী কুয়ান, কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট জোমো কেনিয়াত্তা ও কিম কিবাকি, ডেনমার্কের রানি দ্বিতীয় মার্গারেট, রিপাবলিক অফ চায়নার প্রেসিডেন্ট সাই লিং ওয়েন, ইটালির প্রধানমন্ত্রী রোমানো প্রুডি উল্লেখযোগ্য।
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি: হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি (ম্যাসাচুসেটস) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৬৩৬ সালে। হার্ভার্ডে পড়াশোনা করেছেন, এমন আটজন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। হার্ভার্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন এমন ১৬৩ জন নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন, যার মধ্যে ৪৫টি ছিল মেডিসিন ও ফিজিওলজির ক্ষেত্রে এবং ৪৬টি স্বর্ণপদক সহ অলিম্পিক মেডেল পেয়েছেন ১১০টি, একাডেমি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ১০ জন, পুলিৎজার পেয়েছেন। বিশ্বে বিলিওনিয়ারদের মধ্যে ১৮৮ জন হার্ভার্ড এলামনাই।
ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি): ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি, এমআইটি (ম্যাসাচুসেটস) নামেই বেশি পরিচিত। এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৮৬১ সালে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, মহাকাশ গবেষণা ও কারিগরি ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে সমগ্র বিশ্বে শীর্ষ শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত এমআইটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মোট ১০১ জন নোবেল পুরস্কার লাভের সম্মান অর্জন করেছেন।
স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি: ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি (ক্যালিফোর্নিয়া) বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মোট ৫৮ জন নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে উদ্যোক্তা সৃষ্টির ক্ষেত্রে স্ট্যানফোর্ডের ভূমিকা অনন্য বলে বিবেচনা করা হয়, যে প্রতিষ্ঠান ব্যবসা শুরু করার জন্য বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে সফল বিশ্ববিদ্যালয়। স্ট্যানফোর্ড এলামনাইদের প্রতিষ্ঠিত অসংখ্য কোম্পানি যৌথভাবে বার্ষিক ২.৭ ট্রিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে এবং তারা ৫৪ লাখ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে, যা বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম অর্থনীতির সমান। ৭৪ জন জীবিত বিলিওনিয়ার স্ট্যানফোর্ডের ছাত্র ছিলেন।
ইউসি, বার্কেলে: ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কেলে সংক্ষেপে ‘ইউসি, বার্কেলে’ নামে খ্যাত। এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত ১৮৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইউসি, বার্কেলের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন বা আছেন এমন ১০৭ জন নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন। এখানে পড়াশোনা করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাতজন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং ছয়জন প্রধান বিচারপতি। ১২১টি স্বর্ণপদকসহ ২২৩টি অলিম্পিক মেডেল পেয়েছেন ইউসি বার্কেলের সাথে সংশ্লিষ্ট ক্রীড়াবিদগণ।
ইয়েল ইউনিভার্সিটি: ইয়েল ইউনিভার্সিটি (কানেকটিকাট) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৭০১ সালে। পাঁচজন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট, যুক্তরাষ্ট্রের আটজন প্রতিষ্ঠাতা পিতা, বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রের প্রধান ও সরকার প্রধান, আমেরিকান কংগ্রেসের কয়েকশ’ সদস্য ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৬৫ জন নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদাবান বেসরকারি আইভি লীগ রিসার্চ ইউনিভার্সিটির মধ্যে গন্য ইয়েল। যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় প্রাচীন উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি: প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৭৪৬ সালে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ছিলেন এ যুক্তরাষ্ট্রের দুজন প্রেসিডেন্ট, আটজন পররাষ্ট্র মন্ত্রী, তিনজন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, দুই জন জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ এবং ইউএস সুপ্রীম কোর্টের ১২ জন বিচারপতি, যাদের মধ্যে তিনজন এখন সুপ্রীম কোর্টে দায়িত্ব পালন করছেন। নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট ৭৫ জন। আমেরিকান কংগ্রেসের অনেক সদস্য ইয়েল এলামনাই।
কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি: কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিও (নিউইয়র্ক সিটি) যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রাচীন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৭৫৪ সালে। প্রিন্সটনের সাবেক ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন আমেরিকার সাতজন প্রতিষ্ঠাতা পিতা, চারজন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট, বিভিন্ন দেশের ৩৩ জন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, জাতিসংঘের দুইজন সেক্রেটারি জেনারেল, ইউএস সুপ্রীম কোর্টের ১০জন বিচারপতি, ১০২ জন নোবেল বিজয়ী, ১২৫ জন পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী।
যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র এবং পাশ্চত্যের আরও অনেক দেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের নামিদামি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেসব প্রতিষ্ঠানে বিশ্বের সকল প্রান্ত থেকে জ্ঞান অর্জনের জন্য ছুটে আসেন ছাত্র ও গবেষকরা এবং তারা নিজ দেশে বা অন্যত্র নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখেন। আমাদের প্রিয় স্বদেশে উচ্চশিক্ষার অর্থ মুখ্যত সার্টিফিকেট লাভ করা এবং একটি চাকুরি জোগাড় করা। এসব বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার কাজ হয় না বললেই চলে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৬০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ৩৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং তিনটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে।
জনসংখ্যার বিচারে বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় সংখ্যা হয়তো বেশি নয়, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার চেয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ডের আখড়ায় পরিণত হয়, তাহলে এমন বিশ্ববিদ্যালয় কেবল গণিতের সংখ্যা — ছাত্র কত, শিক্ষক কত, কর্মচারি কত ইত্যাদি। আন্তর্জাতিক মানের ধারেকাছে আমাদের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও নেই। মাঝে মাঝে কেবল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) কোনো কোনো আঞ্চলিক র‌্যাংকিং এ দেখা যায়। বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‌্যাংকিং এ যদি ছাত্র হত্যাকে বিবেচনায় রাখা হতো, তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় বার্ষিক র‌্যাংকিং এ প্রথম স্থানে থাকতো। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ যাবত ৭৪ জন ছাত্র হত্যাকান্ডের শিকারে পরিণত হয়েছে।


advertisement

Posted ৯:০০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০২৪

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

গল্প : দুই বোন
গল্প : দুই বোন

(6321 বার পঠিত)

স্মরণে যাতনা
স্মরণে যাতনা

(1312 বার পঠিত)

মানব পাচার কেন
মানব পাচার কেন

(1154 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.