মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

যাদের নেতৃত্ব অনুকরণযোগ্য নয়

ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ   |   বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২০

যাদের নেতৃত্ব অনুকরণযোগ্য নয়

(তৃতীয় অংশ) : ১৯৭৪ সালে রিচার্ড নিক্সন ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি সহ একগাদা কলঙ্ক মাথায় নিয়ে অপমানিত হয়ে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট ট্র্যাম্প ২০২১ সালের জানুয়ারী মাসের ২০ তারিখে দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। এ যাবত যুক্তরাষ্ট্রে যত প্রেসিডেন্ট কলঙ্ক মাথায় নিয়ে বিদায় নিয়েছেন তাদের মধ্যে কুখ্যাত জেমস বুকানন, নিক্সন এদেরকে কুকীর্তির ফিরিস্তিতে খুব সহজেই ঠেক্কা দিতে পারবেন ডোনালড জে ট্র্যাম্প । নিক্সন গুরুতর অপরাধ করেছেন সত্য কিন্তু তিনি এ দেশকে অন্তত পরিবেশ সংরক্ষণ বা এনভিরনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সি দিয়ে গেছেন। এন্ডেঞ্জারড স্পিচিসেস অ্যাক্ট ও তিনি স্বাক্ষর করে গেছেন । এ দুটো কাজ তাঁকে শত অপবাদের মধ্যে ও এ দেশে পরিবেশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে অমর করে রাখবে । অন্যদিকে , বুকানন ১৮৫০’র দিকে দাসপ্রথা বা স্লেভারি পাকাপোক্ত ভাবে বলবৎ রাখার স্বপক্ষে কাজ করার জন্য ইতিহাসে নিন্দিত হয়ে থাকবেন শক্ত শেকড়ে। পরিত্রানের কোন রস্তা নেই । ওয়ারেন হার্ডিঞ্জ এর একজন ধিক্কৃত প্রেসিডেন্ট যিনি অযোগ্য ছিলেন বলে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়। ১৯২০ সময়ে ‘টিপট ডোম স্কেন্ডাল’ এ পৌরোহিত্য করে তিনি কুখ্যাত হন । গৃহযুদ্ধের পরবর্তীতে পুনঃসংস্কার কাজ দারুণভাবে বাহ্যত করে এন্ড্রু জন্সন অফুরন্ত দুর্নাম কুড়ান। ১৮৫০ এর দিকে ফ্রাঙ্কলিন পিয়ারচ দাসপ্রথার পক্ষে এত সোচ্চার ছিলেন যে দাস মালিকদের নেতৃত্বদানকারীরা যাই বলতো বিনা বাক্যব্যয়ে প্রেসিডেন্ট তাই শুনতেন ।

সম্প্রতি, গুগলের সৌজন্যে লস এঞ্জেলেস টাইম্‌স এর কলামিস্ট নিকোলাস গোল্ড বার্য এর একটি লেখা যা ওপিনিয়ন কলামে বের হয়েছে সেটি পড়ে ও আমার প্রতীতি আরও দৃঢ় হয়েছে যে , ডোনাল্ড ট্রাম্প বিগত দুই শতাব্দীতে যে সব প্রেসিডেন্ট বিভিন্ন কারণে তেমন কোন খ্যাতি অর্জন করতে পারেননি বরং দুর্নাম কামিয়েছেন তাদের তুলনায় ও তালিকায় নীচের দিকেই থাকবেন । কেন থাকবেন এ প্রশ্নের জবাব খোঁজা জোরেশোরে শুরু হয়ে গেছে তবে তা ইতিহাসবিদ এবং গবেষকদের কাছ থেকে আসতে এখনো সময় লাগবে । নাটকের মঞ্চায়ন এখন শেষ অংকে ; পরিসমাপ্তি দেখার জন্য সবাই অধীর আগ্রহ ও কিছুটা উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করছে ।


কতকগুলো সূচক বা মানদন্ডে উপর ট্রাম্পকে মূল্যায়ন করতে হবে , তাঁর কাতারের না হলে ও কাছাকাছি আসার পর্যায়ভুক্ত এমন কিছু প্রেসিডেন্টদের সাথে তুলনামূলক বিচার বিশ্লেষণ তথা মূল্যায়ন করতে হবে সময় ও কাল , প্রেক্ষাপট এবং অন্যান্য বাস্তব অবস্থার নিরিখে।

৫০টি ষ্টেটস ও ষ্টেট অব কলাম্বিয়া থেকে পাওয়া সংখ্যার ভিত্তিতে ইলেকটরাল কলেজ ঘোষণা দিয়েছে যে জো বাইডেন অফিসিয়ালি ৩০৬টি ভোট পেয়েছেন। জনপ্রিয় ভোটে বাইডেনের পাওয়া ৮১.৩ মিলিয়ন ভোটের বিপরীতে ট্রাম্প পেয়েছেন ৭৪.২ মিলিয়ন। ষড়যন্ত্র বা কন্সপিরেসি, দুরভসিন্ধি, মিথ্যে কথন ও রটনায় পটু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ ফলাফল আজতক ও মেনে নেননি । তাঁর প্রেস সেক্রেটারি এখনো বলছে হোয়াইট হাউস ট্রাম্পের দখলেই থাকছে আরও চার বছর। সিনেট মেজরিটি নেতা মিচ ম্যাককোনেল বলেছেন যে ইলেকটোরাল কলেজ এখন বার্তা দিয়েছে সুতরাং আমি এখন প্রেসিডেন্ট-ইলেকটকে অভিনন্দন জানাতে পারি। একই বক্তব্য তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট-ইলেকট কমলা হারিসের বেলায় ও রাখেন।


বাইডেনের এ জেতায় কোন প্রবঞ্চনা ,শঠতা বা কুচক্র কাজ করেনি । ইলেকশনে কোন ধরণের কারচুপি হচ্ছে কিনা তা খুঁটিয়ে পরিচর্যা করার জন্য ফেডারাল সংস্থাতির নেতৃত্বে নিয়োজিত ছিলেন রিপাবলিকান ক্রিস্টোফার ক্র্যাব। ট্রাম্পই পছন্দ করে তাকে এ দায়িত্ব দিয়েছিলেন । ক্র্যাব যখনই রিপোর্ট দিলেন যে (নভেম্বর মাসের ১২ তারিখে) নির্বাচন খুবই স্বচ্ছ হয়েছে তার মাত্র ৫ দিন পর প্রেসিডেন্ট তাকে বরখাস্ত করেন। সত্য তথ্য দেয়ার জন্যই তার এ পরিণতি। একই অবস্থা হয় তাঁর পরম বিশ্বস্ত এটর্নি জেনারাল উইলিয়াম বারের বেলায়ও । ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখে বার বক্তব্য রাখেন যে জাস্টিস ডিপারমেন্ট নির্বাচনের কোন পর্যায়েই কোন কারচুপি পায়নি । পরের দিনই ট্রাম্পের টুইট বার্তা এ মর্মে যে বার’কে ডিসেম্বরের ২৩ তারিখে তাঁর দায়িত্ব পালন থেকে অব্যাহত দেয়া হবে। ইতোমধ্যেই এজি বার পদত্যাগপত্র দাখিল করে দিয়েছেন ।

এ দিকে গতকাল ও ট্রাম্প বলেছেন যে নির্বাচনে মারাত্মক রকমের কারচুপি হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট যেখানে তাঁর আবেদন সর্বসম্মতিক্রমে নাকচ করে দিয়েছে সেখানে ক্ষমতা লোভী এই গোঁয়ার লোকটির ভাব যেন তিনি গায়ের জোরে ক্ষমতা ধরে রাখবেন । দুঃখ লাগে যখন দেখি রিপাবলিকান পার্টির বেশ কিছু নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য ও নেতা ট্রাম্পের এই অদ্ভুত আচরণে সায় দিচ্ছেন , তাঁকে সমর্থন ও দিচ্ছেন । তারা এ কথা বুঝতে নারাজ যে এতে তারা আমেরিকার প্রতিষ্ঠিত ভোটিং আচরণ ও ঐতিহ্যকে জলাঞ্জলি দেয়ার অশুভ পায়তারা করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও মুল্যবোধকে অবমাননা করছেন । তবে আশার কথা , প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনেক বন্ধু ও অনুগত রিপাবলিকানগণ দেরীতে হলে ও তাদের ভুল অনুধাবন করতে পেরেছেন বলে মনে হয় ।


জনতার রায়, প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার প্রতি সম্মান, দীর্ঘ দুই শতাব্দীর ও বেশী সময় ধরে পরীক্ষিত, শানিত ও লালিত গণতন্ত্রকে যে কোন মূল্যে ধরে রাখতে পারার উপর যুক্তরাষ্ট্র নামক দেশটির জাতীয় ও বৈশ্বিক অস্তিত্ব, সম্মান এবং গ্রহণযোগ্যতা ওতপ্রোতভাবে জড়িত ও নির্ভরশীল – এ বাস্তব সত্যটি না মেনে নেয়ার কোন বিকল্প নেই ।

advertisement

Posted ১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২০

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

গল্প : দুই বোন
গল্প : দুই বোন

(6305 বার পঠিত)

স্মরণে যাতনা
স্মরণে যাতনা

(1312 বার পঠিত)

মানব পাচার কেন
মানব পাচার কেন

(1154 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.