শনিবার ১ এপ্রিল ২০২৩ | ১৮ চৈত্র ১৪২৯

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

কালো অধ্যায়ের অবসানে গণতন্ত্রের জয়জয়াকার

ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ   |   বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২১

কালো অধ্যায়ের অবসানে গণতন্ত্রের জয়জয়াকার

পরিবর্তনের আন্দোলন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রচেষ্টা নস্যাৎ করার জন্য উগ্র-জাতীয়তাবাদ স্লোগান ব্যবহার একটি বহুল ব্যবহৃত কৌশল। সফলকাম সাধারণত কমই হয় তবে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি, অরাজকতা, এমনকি প্রাণনাশসহ বিভিন্ন ধরণের নষ্টাচার, ধ্বংসযজ্ঞ সাধনে এ কৌশলের জুড়ি মেলা ভার। ধ্বংসযজ্ঞ যে সচিত্র উপস্থাপন টি ভি চ্যানেল খুললেই দেখা যায় তা দেখলে মণে হওয়া স্বাভাবিক যে আমরা চরম অরাজকতার মধ্যে দিনাতিপাত করছি। আমেরিকায় গত চার বছর যাবত ঘটমান ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ স্লোগান ও বাগাড়ম্ভরের ছায়ায় যে প্রস্তুতি প্রেসিডেন্ট ট্র্যাম্পের প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় নেয়া হয়েছে তারই ধারাবাহিকতায় সংগঠিত হল বিগত ৬ জানুয়ারীর ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটাল হলের উপর বর্বরোচিত হামলা। একজন পুলিশ অফিসার সহ পাঁচজন মানুষের প্রাণহানি, অবাধ লুটপাট খোদ হাউসের ফ্লোর থেকে, যেখানে আইন তৈরি হয় সেই অতি পবিত্র স্থান থেকে, স্পিকারের আসন ও দলিল দস্তাবেজ চুরি করা ও ছবি তোলার মত অমার্জনীয় অপরাধ ছাড়া ও স্পিকার এবং ভাইস প্রেসিডেন্টকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে সারাক্ষণই।

ভাইস প্রেসিডেন্টকে ফাঁসি দেয়ার নকল মহড়া, স্পিকারকে অকথ্য শব্দ প্রয়োগে অশালীন সব উক্তি এ সবই নাকি ট্র্যাম্পের শেখানো বুলি। ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স তাঁর কথা মেনে নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে এ মিথ্যে অজুহাতে ইলেকশন অবৈধ এবং এ কারণে তা বাতিল করা থেকে বিরিত থাকায় তিনি তাঁর উপর প্রচণ্ড রাগান্বিত। সুতরাং তাঁকে শুধু অপমান নয়, হত্যা করতে হবে এমন স্লোগান ও জনতা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্র্যাম্প গণতন্ত্রের লীলাভূমিতে একজন একনায়কতন্ত্র নেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে দেশটিকে শাসন ও শোষণ করতে চেয়েছিলেন। গণতন্ত্রের মূল্যবোধের প্রতি বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ট্র্যাম্প সংগঠনের মালিকাধিন বিভিন্ন হোটেল, রিসোর্ট, গলফ, খেলধুলা ও বিনোদন ক্লাব সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান অন্যায় ভাবে ভাড়া দিয়ে দু’হাতে লাভজনক ব্যবসা করেছে। বছরের পর বছর ট্যাক্স পরিশোধ করেননি। চরম ডানপন্থীদের সংগঠিত করে দেশটিকে বিভক্তি ও নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে নিয়ে গেছেন। বর্ণবাদকে উস্কানি দিয়ে শ্বেতাঙ্গ, অশ্বেতাঙ্গ বিভেদকে উস্কে দিয়েছেন। বিভাজনের রাজনীতিতে পারঙ্গম লোকটি বিভিন্ন অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে সত্তর মিলিয়নের ও বেশী ভোট পেয়ে ও জনপ্রিয় ভোটে ও ইলেক্টরাল ভোট দু ক্ষেত্রেই হেরে যান ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জো বাইদেনের কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে। মিথ্যে রটনা , অহরহ টুইটারে মিথ্যেকে সত্য বলে অপপ্রচারে মেতে থেকে ও তিনি পরাজয় আরাতে পারেননি । উগ্র শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদ প্রচার ও প্রসারই ছিল তাঁর মূল রাজনৈতিক লক্ষ্য ।


প্রেসিডেন্ট ট্র্যাম্প ও তাঁর এক ছেলে কাপিটল প্রত্যক্ষভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী দুষ্কৃত রায়টাদের ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছিলেন। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম অভিমত রেখেছে যে এ সবই ভবিষ্যতে বড় কিছু ঘটানোর মহড়া । এরকম মনে করার সংগত কারণ ও আছে। ওয়াশিংটন ডিসি ক্যাপিটল এ প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট কামালা হারিসের ক্ষমতা গ্রহণের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে ২৫,০০০ ন্যাশনাল গার্ড নিয়োজিত করা হয়েছে যাতে ৬ জানুয়ারীর মত ঘটনা না ঘটে। ষ্টেট ক্যাপিটলগুলোতে ও দাঙ্গা হাঙ্গামার আশঙ্কা করে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। তার পর ও শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ভুললে চলবে যে ভারতের প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যা করেছিল তাঁরই দুজন দেহরক্ষী।

প্রেসিডেন্ট ডোনালড ট্র্যাম্পের হাতে তাঁর ক্ষমতা লিপ্সা ও লোভের কারণে আমেরিকার সবচেয়ে বড় সম্পদ ও অর্জন ‘গণতন্ত্র’ বারবার ভুলুণ্ঠিত হয়েছে সত্য তবে তাঁর স্বপক্ষীয় প্রথম কাতারের রিপাবলিকান নেতারা ও এ সঙ্কটের সময়ে গণতন্ত্রের পক্ষে সত্য কথা বলতে, দেরীতে হলে ও পিছপা হননি। আজকেই, অর্থাৎ ১৯ জানুয়ারী ২০২১ তারিখে সিনেটের সংখ্যা গরিষ্ঠ দলের নেতা মিচ ম্যাককনেল সিনেট অধিবেশনের প্রাক্বালে বলেছেন যে ৬ জানুয়ারী ক্যাপিটাল হলে অনভিপ্রেত ঘটনা ট্র্যাম্প এবং কতিপয় প্রভাবশালী ব্যাক্তির সরাসরি উস্কানিমুলক বক্তব্যে ঘটেছে। প্রেসিডেন্ট জনতাকে মিথ্যে কথা ও উদ্দেশ্যমূলক তথ্য দিয়ে প্ররোচিত করেছেন যাতে তারা ফেডারেল গভর্নমেন্টের আইন প্রণয়নের মহান দায়িত্বে নিয়োজিত শাখাটির একটি বিশেষ কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে। প্রেসিডেন্ট ও তাঁর কিছু কট্টর সমর্থকরা ভীতি এবং সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে সরাসরি বক্তব্যের মাধ্যমে জনতাকে প্ররোচিত করেছেন। এহেন পরিস্থিতে ও হাউস ও সিনেট কর্তব্য পালনে স্থির থেকেছে। গণতান্ত্রিক কানুনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ও শাসনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী কংগ্রেসে জয়েন্ট সেশন ইলেকটোরাল ভোটের অনুমোদন দিয়েছে।


প্রেসিডেন্ট ট্র্যাম্পের একান্ত অনুগত ফক্স নিউজ এর বক্তব্য ও প্রণিধানযোগ্য। সংস্থাটি ও বলছে, প্রেসিডেন্ট তাঁর অনুসারীদের হোয়াইট হাউসের অনতিদূরে অনুষ্ঠিত এক র‍্যালীতে ক্যাপিটল এর উপর আক্রমণ করতে প্ররোচিত করে বক্তৃতা দিলে জনতা হউসের দিকে ছুটে। তিনি উন্মত্ত শক্তি প্রদর্শনের কথা বলেন যাতে আইন প্রনেতারা ভীত সন্ত্রস্ত্র হয়ে ভোট প্রত্যয়ন রহিত করে ইলেকশন বাতিল করে দেন। ফক্স নিউজ সংস্থা আরও উল্লেখ্য করে যে বৈধ নির্বাচনকে বারবার অবৈধ বলে জনতাকে মিথ্যে গেলানোর অপচেষ্টা শেষ পর্যন্ত ধোপে টিকেনি।


advertisement

Posted ৯:৪৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২১

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

গল্প : দুই বোন
গল্প : দুই বোন

(3846 বার পঠিত)

স্মরণে যাতনা
স্মরণে যাতনা

(1111 বার পঠিত)

মানব পাচার কেন
মানব পাচার কেন

(922 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.